Common Enhydra
হেলেঞ্চো শাক
হেলেঞ্চো বা হেলেঞ্চা বা হিঞ্চা এক প্রকার জলজ শাক।হেলেঞ্চা, হিঞ্চা, হিঞ্চে, হিংচা, হাড়হাচ, হেলচী, হিমলোচিকা, তিতির ডগা, তিতির শাক, তিতির ডাটা, তিতা ডাটা এক প্রকার সপুষ্পক উদ্ভিদ। বাংলাদেশের খাল-বিলে, নদ-নদী ও পুকুরে সর্বত্র জন্মে।পুকুরে হেলেঞ্চা বা কলমি লতা থাকে, সে পুকুরের পানি সর্বদা পরিস্কার বা স্বচ্ছ থাকে। তারপরও হেলেঞ্চার লতায় এক প্রকার আঁশ জন্মে, এগুলো মাছের প্রিয় খাদ্য।
হেলেঞ্চোর ইংরেজি নাম Common Enhydra, Buffalo spinach, Helancha
হেলেঞ্চোর বৈজ্ঞানিক নাম Enhydra fluctuans
আসুন জেনে নেই হেলেঞ্চা শাকের কিছু বিস্ময়কর স্বাস্থ্য উপকারিতা:
(১)মুখে অরুচি, জিবে একটা স্তর পড়ে গেছে, এ ক্ষেত্রে এর শাকের ২ চামচ রস গরম করে কয়েকদিন খেলেই উপকার হবে।
(২)ঘামাচি ও ফুসকুড়ি : গায়ে কাঁটা বা ঘামাচি, প্রথমটি শীতে এবং দ্বিতীয়টি গরমকালে মানুষের জন্য খুবই কষ্টদায়ক হয়ে দাঁড়ায়। এ উভয়বিধ রোগের জন্য হেলেঞ্চা পাতা সামান্য পানি দিয়ে বেটে তার রস সারা শরীরে মাখলে খুব শিঘ্রই উপকার পাওয়া যায়।
(৩)বর্ষা বা শরৎকালে হাত, পা এবং চোখও জ্বালা করে, এ ক্ষেত্রে হেলঞ্চা শাকের ২ চা চামচ রসের সাথে কাঁচা দুধ মিশিয়ে খেলে ঐ অসুবিধা দূর হবে।
(৪)শরীরে দু’একটি গুটি দেখা দেয়া মাত্রই অর্থাৎ রোগের প্রথম অবস্থায় শ্বেতচন্দন গুঁড়ো দেড় থেকে দুই গ্রাম এবং হেলেঞ্চা শাকের রস আধা কাপ, এ দু’টি ভালভাবে মিশিয়ে খেলে শিঘ্রই গুটি বের হয়ে যায়।
(৫) যকৃৎ অর্থাৎ লিভার দুর্বল হলে শরীরে নানা ধরনের রোগ দেয়া দেয়। ১০০ গ্রাম হেলেঞ্চা শাক ছোট ছোট করে কেটে, ১৫০ মিলিলিটার পানিতে পরিমাণ মতো লবণ মিশিয়ে সিদ্ধ করতে হবে। পানি ফুটে এক কাপ পরিমাণ হলে পাত্রটি আচ থেকে নামিয়ে ফেলতে হবে। ঠান্ডা হলে ভাত খাবার আগে ৪/৬ ফোঁটা সরষে তেল মিশিয়ে খেলে যকৃৎ সবল হয়। অবস্থা বুঝে ২ থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত নিয়মিত খাওয়া দরকার।
(৬) সাপে দংশন করলে হেলেঞ্চার রস খাওয়ানো হয়।
(৭)হেলেঞ্চার পাতা বেটে তার ৩০ মিলিলিটার রস এবং গরু কিংবা ছাগলের দুধ (অবশ্যই গরম করে এবং ঠান্ডা অবস্থায়) ৫০মিলিলিটার এ দু’টি একসঙ্গে মিশিয়ে রোজ খেলে শরীরে পিত্তের পরিমাণ স্বাভাবিক হবে। গনোরিয়া রোগের জন্য একই পদ্ধতি এবং পরিমাণে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
(৮)কোমরের ঠিক নীচে ব্যথা বা যন্ত্রণা, পায়ের পেশীতে রাতের দিকে টান ধরে, এসব ক্ষেত্রে ৩ চামচ হেলেঞ্চার শাকের রস, হাল্কা গরম করে সকালের দিকে খালিপেটে খেলে ভাল হয়ে যায়। নিয়মিত বেশ কিছুদিন খেলে আরও ভাল।