
বর্ণনাঃ
এর বৈজ্ঞানিক নাম: Aegle marmelos Correa ,বেল গাছ বড় ধরনের বৃক্ষ যার উচ্চতা প্রায় ১০-১৬ মিটার। পাতা ত্রিপত্র যুক্ত, সবুজ, ডিম্বাকার ; পত্রফলকের অগ্রভাগ সূঁচাল। ফুল হালকা সবুজ থেকে সাদা রঙের। বোঁটা ছোট, ৪-৫টি পাঁপড়ি থাকে, পুংকেশর অসংখ্য, গর্ভাশয় বিস্তৃত ও কেন্দ্রস্থল খোলা। ফুলে মিষ্টি গন্ধ আছে। ফল বড়, গোলাকার, শক্ত খোসাবিশিষ্ট। ফলের ভিতরে শাঁস ৮-১৫টি কোয়া বা খন্ডে বিভক্ত থাকে। প্রতিটি ভাগে বা খন্ডে চটচটে আঠার সাথে অনেক বীজ লেগে থাকে। কাঁচা ফলের রঙ সবুজ, পাকলে হলদে হয়ে যায়। ভিতরের শাঁসের রঙ হয়ে যায় কমলা বা হলুদ।
পুষ্টিগুণঃ
প্রতি ১০০ গ্রাম বেলে খাদ্যশক্তি আছে ৮৭ কিলোক্যালরি, জলীয় অংশ ৭৭ দশমিক ৫ গ্রাম, শর্করা ১৮ দশমিক ৮ গ্রাম, আমিষ ২ দশমিক ছয় গ্রাম, চর্বি শূন্য দশমিক ২ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৮ মিলিগ্রাম, লোহা শূন্য দশমিক ৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-১ শূন্য দশমিক শূন্য ৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২ শূন্য দশমিক শূন্য ২ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন সি ৯ মিলিগ্রাম।
ব্যবহারঃ
কাঁচা ও পাকা বেল সুস্বাদু খাবার । পাকা বেলের জুস তৈরি করে খাওয়া যায়।
বেলের উপকারিতা
১.চোখের সমস্যায়ঃ
বেলের পাতার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে চোখের ছানি ও জ্বালা উপশম হয়। বেলের ভিটামিন ‘এ’ চোখের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোর পুষ্টি জোগায়। এর ফলে চোখের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
২. আমাসায়ঃ
দীর্ঘমেয়াদি আমাশয় ও ডায়রিয়া রোগে কাঁচা বেল নিয়মিত খেলে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা সম্ভব।
৩.কোষ্ঠকাঠিন্যঃ
বেল খাবারও সঠিকভাবে হজম করতে সাহায্য করে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
৪. সর্দি জ্বরেঃ
সর্দি হলে বেলপাতার রস এক চামচ খেলে সর্দি ও জ্বর–জ্বর ভাব কেটে যায়।
৫.ব্রণের সমস্যাঃ
বেলে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ, যা মুখের ব্রণ সারাতে সাহায্য করে।
৬.ডায়াবেটিস কমায়ঃ
পাকা বেলে আছে মেথানল নামের একটি উপাদান, যা ব্লাড সুগার কমাতে অনবদ্য কাজ করে। তবে শরবত করে নয়, বেল খেতে হবে এমনিই।
৭.জন্ডিসের সমস্যায়ঃ
জন্ডিসের সময় পাকা বেল গোলমরিচের সঙ্গে শরবত করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৮.ক্যানসারেও খুব উপকারিঃ
ক্যানসারেও খুব উপকারি এই বেল। বেলে রয়েছে অ্যান্টি প্রলেফিরেটিভ ও অ্যান্টি মুটাজেন উপাদান।
৯.কিডনি সুস্থ রাখতেঃ
বেলে রয়েছে এমন কিছু উপকারী উপাদান যা কিডনিকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। ফলে দেহ বিভিন্ন প্রকার অসুখ থেকে কিডনিকে মুক্ত থাকে। এজন্য কিডনির সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকরা রোগীকে বেল খেতে বলে থাকেন।
১০.ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায়ঃ
বেলে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ থাকে যা ত্বকের জন্যও খুব উপকারী। নিয়মিত বেল খেলে তা ত্বককে মসৃণ রাখতে সহায়তা করে।
১১.গ্যাসট্রিক প্রতিরোধেঃ
বেল হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। এর ফলে পেটে গ্যাসের সমস্যা তেমন হয় না। তাই নিয়মিত বেল খেলে গ্যাসট্রিক, আলসার সহ পেটে গ্যাসজনিত ব্যথা জাতীয় সমস্যা থেকে সহজেই মুক্ত থাকা যায়।
১২.বিভিন্ন রোগেঃ
বেলে প্রচুর ভিটামিন সি আছে। এই ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
১৩.স্মৃতিশক্তিতেঃ
শিশুর স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য বেল অত্যন্ত উপকারী।
১৪.আর্থ্রারাইটিসের সমস্যায়ঃ
আর্থ্রারাইটিস কমাতে দারুন কার্যকরি বেল। ব্যাথা ছাড়া এখন খুব কম মানুষই আছেন। নিয়মিত বেল খেলেই মুক্তি পাবেন আর্থ্রারাইটিসের সমস্যা থেকে।
১৫.উচ্চ রক্তচাপেঃ
ব্লাড প্রেসার কমায় বেল। ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে বেল।
আপনার মতামত লিখুন