হরতকি ফলের গুনাগুণ
হরিতকি গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হলো টারমেনালিয়া চেবুলা। এটি সাধারনত বীজ থেকে গজাতে ১০-১৬ দিন সময় লাগে। এবং এটি ফল হতে দুই এক বছর অপেক্ষা করতে হয়। আর হরিতকি গাছ বাংলাদেশে প্রায় সকল অঞ্চলে দেখা যায়।এটি মধ্যম থেকে বৃহৎ আকারের বৃক্ষ। গাছ ৯০ থেকে ১২০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর ফল পাকলে গাছ থেকে ঝরে পরে। ফুল সাদা বা হলুদ হয় এবং স্পইকে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। ফল ড্রপ, ঝুলন্ত, চার সে.মি লম্বা সবুজাভ হয়। কাঠের রং ঘন বেগুনি, খুব শক্ত, ভারী ও মাঝারি আকারের টেকসই।
ঔষধি ব্যবহার
১) অর্শ রোগে হরিতকি চূর্ণ তিন থেকে পাঁচ গ্রাম পরিমাণ ঘোলের সঙ্গে একটু লবণ মিশিয়ে খেলে সেরে যাবে।
২) রক্তার্শে আখের গুড়ের সঙ্গে হরিতকি গুঁড়া মিশিয়ে খেলে কয়েকদিনের মধ্যেই সুফল পাওয়া যায়।
৩) চোখের রোগের ক্ষেত্রে হরিতকি ছেঁচে পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি দিয়ে চোখ ধুতে হবে।
৪) পিত্ত বেদনায় সামান্য গাওয়া ঘিয়ের সঙ্গে হরিতকি গুঁড়া সেবন করতে হয়।
৫) গলার স্বর বসে গেলে মুথা ও হরিতকি চূর্ণ মধুর সঙ্গে বেটে অথবা যোয়ানের সঙ্গে পান করলে স্বর স্বাভাবিক হয়।
৬) হরিতকি ফল হৃদরোগ, বদহজম, আমাশয়, জন্ডিস এবং ঋতুস্রাবের ব্যথায় খাওয়ানো হয়।
৭) ফলের রস জ্বর, কাশি, হাঁপানি, পেট ফাঁপা, ঢেকুর উঠা, বর্ধিত যকৃত ও প্লীহা, বাতরোগ ও মূত্রনালীর অসুখেও বিশেষ উপকারী।
৮) কাঁচা ফল রেচক হিসেবে কাজ করে।
৯) আধুনিক ভেষজ চিকৎসকরা ফুঁসফুঁস ও শ্বাসনালীঘটিত রোগে হরিতকি বহুল ব্যবহার করে থাকেন। কাশি ও শ্বাসকষ্টে হরিতকি খুবই কর্যকর।
১০) এছাড়া, ঘন ঘন পানির তৃষ্ণা কিংবা বমি বমি ভাব কাটাতেও হরিতকি ব্যবহৃত হয়।
১১) ত্রিফলা অর্থাৎ আমলকি, হরিতকি ও বহেরা এর প্রতিটির সমপরিমাণ গুঁড়ার শরবত কোলেস্টেরল কমাবার অর্থাৎ প্রেসার বা রক্তচাপ কমাবার মহৌষধ। এক ওষুধ গবেষক দলের মতে, আধুনিক যে কোন এ্যালোপ্যাথিক ঔষধের তুলনায় ত্রিফলা কোলেস্টেরল কমাবার ক্ষেত্রে অনেক বেশি ফলপ্রসূ।
১২) এর্লাজি কমাতে হরিতকি দারুন কাজ করে। এটি পানিতে ফুটিয়ে এই পানি পান করলে এর্লাজি সহজে অনেক কমে যায়।
১৩) চুল ভালো রাখতে হরিতকি কাজ করে। এই জন্যে হরিতকির গুরা নারকেল তেলের সঙ্গে পানিতে ফুটিয়ে এই উপাদান মাথায় মাখেলে চুল ভালো খাকে।
১৪) দাঁতের ব্যাথা সারাতে হরিতকির গুরা দাঁতে লাগাতে হবে। এতে ব্যাথা উপশম হবে।
১৫) কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তরিতকির ব্যবহার অনেক। করন এতে রয়েছে অ্যানথাইকুইনোন । এটি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে।