পরিচিতিঃ
ঘেঁটু অথবা ভাঁট গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ হলেও উচ্চতায় প্রায় চার ফুট পর্যন্ত হয়। বৈজ্ঞানিক নাম Clerondendron viscosum ,ইংরেজি নাম,glory bower
২ থেকে ৪ মিটার লম্বা হয়। পাতা ৪ থেকে ৭ ইঞ্চি লম্বা হয়। দেখতে কিছুটা পানপাতার আকৃতির ও খসখসে। ডালের শীর্ষে পুষ্পদণ্ডে ফুল ফোটে। পাপড়ির রং সাদা এবং এতে বেগুনি রঙের মিশেল আছে। বসন্ত থেকে গ্রীষ্ম অবধি ফুল ফোটে। এই ফুলের রয়েছে মিষ্টি সৌরভ। ফুল ফোটার পর মৌমাছিরা ভাঁট ফুলের মধু সংগ্রহ করে।
ভাঁট গাছের উপকারিতা
১. ক্লেরোডেনড্রাম গাছের ছাল এবং শিকড় দিয়ে একটি decotion তৈরি করুন । এটির ৫০ মিলি. দিনে ২ বার খেলে জ্বর,কাশি কমে যাবে ।
২. পেটে মল জমলে অথবা দীর্ঘদিন ধরে বদহজমে ভুগলে মাঝে মাঝে পেটে যন্ত্রণা করে। ঘেঁটুর মূলের ৫ থেকে ৭ গ্রাম পরিমাণ রস এক গ্লাস ঘোলের সাথে মিশিয়ে খেলে যন্ত্রণা থাকে না।
৩. দীর্ঘদিন ধরে শরীরে জ্বর লেগে থাকলে,গেটেবাতে ও আমাশয় ও পেট ব্যথায় ভাঁটের কচি ডগার রস কয়েক দিন সকালে খেলে রোগ ভালো হয়ে যায়।
৪. উকুন হলে ভাঁট পাতার রস লাগিয়ে ১ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলবেন উকুন থাকবে না।
৫. ভাঁট গাছের পাতা পিষে নিন । এটি ক্ষত জায়গায় লাগান । এই প্রতিকারটি ম্যাচুরেন্ট হিসেবে কাজ করে । এটি আলসার নিরাময়ে সাহায্য করে । এটি ফোলা ভাব কমতেও সহায়তা করে।
৬. এ গাছের পাতার রস খুবই তিতা স্বাদের হয়। চিরতার পরিবর্তে এর রস ব্যবহার করলে ক্রিমি মরে যায়। যদি পেটে ছোট ছোট ক্রিমি হয়, তাহলে মলদ্বার দিয়ে পিচকারি দিলে সব ছোট ক্রিমি মরে যায়।
৭. ম্যালেরিয়া রােগে বিশেষ করে ছােট ছেলে মেয়েদের খুবই ভাল কাজ দেয় দিনে তিন বার ২ চামচ করে টাটকা পাতার রস খাওয়াতে হবে ।
৮. কাঁকড়া বা বিছার কামড়ে এ গাছের পাতা এবং ফুল শিল দিয়ে সামান্য পানি সাথে বেটে দশংনের জায়গায় প্রলেপ দিলে যন্ত্রণা কমবে এবং বিষও বিনষ্ট হয়ে যাবে।
৯. ভাঁট গাছের শিকর ও পাতা পিষে পেষ্ট তৈরি করে এটি ত্বকের সংক্র্রামিত জায়গায় প্রয়োগ করুন। যাদের বিভিন্ন চর্ম সমস্যা রয়েছে তারা যদি নিয়মিত এই ভাট ফুলের রস দিনে ২ বার ক্ষত স্থানে দেয় তাহলে চর্ম রোগ সেরে যাবে । এভাবে ১০-১৫ দিন নিয়মিত ব্যবহার করলে উপকার পাবে ।
১০.ঘেঁটুর মূল বেটে টিউমারের ফোলা অংশে ভালোভাবে প্রলেপ দিয়ে তার ওপর কাপড়ের ফালি জড়িয়ে রাখা দরকার। কিছুদিন নিয়ম করে প্রয়োগ করতে হবে।
১১. দেহের যে কোন চর্মরোগে ঘেঁটু পাতাকে থেঁতো করে রাতে শোয়ার সময় প্রলেপ দিয়ে পরিষ্কার পাতলা কাপড়ের ফালি ছিড়ে বেঁধে দিতে হবে। এরকম চার পাঁচ দিন করলেই চর্মরোগ সেরে যাবে।
১২. কোষ্ঠবদ্ধতায় ঘেঁটু পাতার রস ৩০ মি.লি. পরিমাণ সকালে খালিপেটে খেলে পেট পরিষ্কার হয়ে যায়। তবে এ পরিমাণ বয়স্কদের জন্যে। শিশু অথবা বালক বা অল্প বয়স্কদের এর অর্ধেক পরিমাণ একইভাবে খাওয়াতে হবে। গাছের ডালের ওপরের দিকের কচি পাতা সংগ্রহ করে পরিষ্কার করে শিলে সামান্য পানি দিয়ে বেটে রস বের করা দরকার।
১৩. দীর্ঘ রোগ ভোগের পর শরীর দুর্বল হলে ঘেঁটুপাতার রস রোজ তিন থেকে চার চামচ পরিমাণ খেলে শরীরে দ্রুত পূর্বের বল ফিরে আসে।
১৪. অনেকে দাঁত ব্রাশে মেছওয়াক হিসেবেও এ গাছের মূল ব্যবহার করেন।
১৫. লিভার সম্পর্কিত রোগ নিরাময়ের জন্য ভাট পাতা চিবালে উপকার পাবে । এটি ডায়রিয়ার নিরাময়েও সহায়তা করে ।