পরিচিতি
নামঃ 'বিশল্য' শব্দের অর্থ বেদনাহীন, বিশল্যকরণী,নিৰ্বিষি,নেপাল নীলােবিষ ,বােম্বাই এবং জাদোয়ার ,নিৰ্বিষী । অর্থাৎ বিশল্যকরণী হল ব্যাথা নিবারণে সাহায্যকারী বর্ষজীবী গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদবিশল্যকরণী (বৈজ্ঞানিক নাম- Polygonum recumbens) একটি বহু শাখা-প্রশাখাবিশিষ্ট সরু লোমযুক্ত উদ্ভিদ।
গাছঃ বিশল্যকরণী মাটিতে লতিয়ে অনেকটা দূর পর্যন্ত যায়। পাতা খুব ঘন ঘন থাকে। আকারে ছোট এবং ডিমের মতো কিছুটা গোলাকার। অবনত এবং বহু প্রশাখা বিশিষ্ট ওষধি গাছ কাণ্ড ২ থেকে ৩ ফুট উচ্চ শাখাযুদ পত্রে ৫ থেকে ৯টি সরু ও পক্ষকার বিভাগ আছে কাণ্ডে পত্র অল্প হয়,বৃন্ত লম্বা
পাতাঃ পাতা খুব ঘন। আকারে ছোট এবং মতো গোলাকার। পাতার আগের দিকটা মোটা। বীজকোষের মধ্যে অনেকগুলি বীজ একসঙ্গে থাকে। বীজের রং কালো এবং গোড়ার দিকটা অপেক্ষাকৃত চওড়া।গাছের পাতা গুলি গাঢ় সবুজ বর্ণের এবং মাঝখান বরাবর মধ্যেশিরাটি লালচে বর্ণের যা পত্রশীর্ষের দিকে ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে এসেছে। প্রত্যেকটি পাতার গোড়ায় কাঁটা বর্তমান।
ফুলঃ ফুল সংখ্য অল্প হয় , উহা ½ ইঞ্চি লম্বা ও গােলাকার ফুলের পাপড়ী ৫টি ,ফিকে নীলবর্ণ ও পশম পুষ্পস্তবক বিস্তৃত , শ্বেত , নীল , বেগুনে এবং ধুসরবর্ণ পুষ্পদণ্ডে ফুল
বিস্তৃতি
প্রায় সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অল্প বিস্তর এদের বসবাস। উত্তর ভারতের হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে এবং খাসিয়া পাহাড়ী অঞ্চলে জন্মায়। পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলাতে অল্প কিছু গাছ দেখা যায় ।
বিশল্যকরণী গাছের উপকারিতা
১.রক্তপিক্তে রক্তবমি করলে বিশল্যকরণীর শিকড় দুই গ্রাম, পাতা ৮/১০ টা নিয়ে একসঙ্গে বেটে সামান্য ঠাণ্ডা জল মিশিয়ে খাওয়ালে। রক্তবমি বন্ধ হয়ে যায়।
২.কাটা অঙ্গ জোড়া বা ভাঙা হাড় জোড়ার কাজ করে বিশল্যকরণী পাতার রস।
৩.বিশল্যকরণী পাতার রস সামান্য গরম জলে মিশিয়ে তার সাহায্যে দিনে একবার বিষাক্ত ঘায়ে ধুয়ে ভালভাবে পরিষ্কার করে বিশল্যকরণী পাতা এবং মূল ভালাে করে বেটে ঘায়ের ওপর লাগিয়ে টুকরাে কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখতে হবে। ৪/৫ দিনের মধ্যেই ঘা ভালাে হয়ে যায়।
৪.বিশল্যকরণীতে উপস্থিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পোড়া ঘা তাড়াতাড়ি সারিয়ে তোলে।
৫.এই উদ্ভিদের পাতার রস ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিহত করতে সাহায্যকারী।
৬.বিশল্যকরনী গাছের পাতা ও পোকা-মাকড় ও বিছের কামড়ে মূল ও পাতা উভয়েই বিশেষ উপযোগী।
৭.চুলকানি, অ্যাকজিমা এবং কাঁটা ফোঁটায় বিশল্যকরনীর পাতা বেটে লাগালে খুব ভালো উপকার পাওয়া যায়।
৮.বিশল্যকরণীর মধ্যে ভােগেলিন’ নামে এক ধরনের জৈব যৌগ থাকে। এই কারণে যে কোন ধরনের উচ্চ রক্তচাপ (হাইব্লাড পেসার)-কে কমিয়ে স্বাভাবিক করে দেয়।বিশল্যকরণীর গাছের মূল, পাতা এবং কচি ডাল, যে কোনাে একটি টাটকা তুলে এনে সামান্য ও দিয়ে বেটে তার রস ১০ মিলিলিটার পরিমাণ প্রতিদিন সকালে খালিপেটে এক করে খেলে রক্তের চাপ অবশ্যই স্বাভাবিক হয়।
৯.জ্বরের হলে বিশল্যকরণীর মূলের কাথ ২ থেকে ৪ ড্রাম পরিমাণ ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায় ।
১০.বিশল্যকরনী গাছের মূল চিবাইলে দাঁতের ব্যাথা সেরে যায় ।