লিচুর উপকারিতা

স্বাদ ও গন্ধে লিচু সুস্বাদু ফল সমূহের অন্যতম বলে পৃথিবীর অনেকেই মত প্রকাশ করেন । বাংলাদেশেও এটি খুবই জনপ্রিয় । লিচু উৎপত্তি স্থান চীনের দক্ষিণ পূর¦াঅঞ্চল । বাংলাদেশের সব জেলাতেই লিচু চাষ হয় । 

বিভিন্ন দেশে লিচুর অনেকগুলো জাতের চাষ হয় । বাংলাদেশের বম্বাই,চায়না-৩,মঙ্গলবাড়ি ইত্যাদি উৎকৃষ্ট জাত ছাড়াও রাজশাহী এবং দিনাজপুর অঞ্চলে এশাধিক নামহীন উৎকৃষ্ট জাতের লিচুর চাষ হয় । 

লিচুর রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ:

প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে-১.১ গ্রাম আমিষ,শর্করা ১৩.৬ গ্রাম,চর্বি ০.২গ্রাম,খনিজ লবন ০.৫ গ্রাম,ভিটামিন বি-১ ০.০২ মি.গ্রাম,ভিটামিন বি-২ ০.০৬ মি.গ্রা,ভিটামিন সি ৩১ মি.গ্রা.,ক্যালসিয়াম ১০মি.গ্রা.,লৌহ ০.৭ .িগ্রা.,খাদ্যশক্তি ৬১ কিলো ক্যালরী।

লিচুর স্বাস্থ্য উপকারিতা:

চোখ ভালো রাখে লিচুঃলিচুতে আছে বিশেষ ফাইটোকেমিক্যাল; যা চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে। চোখের ছানি পড়ার সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় লিচু। ফলটির ভিটামিন ‘এ’ রাতকানা বা কর্নিয়ার অসুখ, চোখ ওঠা, চোখের কোনা ফুলে লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দূর করে।

গরমে ভালো থাকতেঃস্বাদ আর গন্ধে অতুলনীয় লিচুতে রয়েছে প্রচুর পানি। ফলে প্রচণ্ড গরমে লিচু খেলে শরীরে পানির ঘাটতি কিছুটা হলেও দূর হয়। তাছাড়া মিষ্টি এবং সুস্বাদু লিচুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘সি’। গরমকালে লিচু খেলে দুর্বলতা কাটিয়ে শরীর আরো কর্মক্ষম হয়ে ওঠে।

ওজন কমায়ঃলিচুতে যথেষ্ট পরিমাণ  ও প্রচুর পানি থাকে, যা হজমের জন্য বিশেষভাবে কাজ করে। ফলটিতে প্রচুর পানি, ফাইবারের পাশাপাশি কম ফ্যাট থাকায় তা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধেঃলিচুতে রয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধক উপাদান, বিশেষ করে নারীদের স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে। তাই নারীদের জন্য বিশেষ উপযোগী ফল এটি। এছাড়াও লিচুতে রয়েছে যথেষ্ট অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

আযূর্বেদিক শাস্ত্র বলছে

লিচু শরীর ঠাণ্ডা রাখে। তৃষ্ণা মেটায় ও শরীরের বল বাড়ায়। পরিমিত খেলে শরীরের বায়ু, কফ ও পিত্ত নাশ করে। অত্যধিক ক্লান্তিতে বা দীর্ঘ রোগভোগের পর দুর্বলতায় প্রতিদিন চার-পাঁচটি লিচু সামান্য লবণ মিশিয়ে খেলে দারুণ উপকার পাওয়া যায়। মস্তিষ্কের দুর্বলতায় স্মৃতিবিভ্রম ঘটলে ভুলো মন মানুষজন দিনে আট দশটা লিচু লবণ মিশিয়ে খেলে স্মৃতি স্বাভাবিক হয়। হৃদরোগী ও লিভারের রোগীদের পক্ষে লিচু উপকারী। মৌসুমের সময় দু-বেলা চার-পাঁচটি করে লিচু খেলে বয়স বাড়লেও শরীরে লাবণ্য বজায় থাকে। যকৃতের রোগে ভুগলে ঠিকমতো খিদে হয় না। দাস্ত অপরিষ্কার হয়, খাদ্যে অরুচি ভাব হয়। এক্ষেত্রে দিনে দুবার লিচুর শরবত খেলে বা দু-বেলা ৫-৭টি লিচু খেলে যথেষ্ট উপকার পাওয়া যায়। বোলতা, বিছে কামড়ালে পাতার রস ব্যবহার করা হয়। কাশি, পেটব্যথা, টিউমার এবং গ্র্যান্ডের বৃদ্ধি দমনে লিচু ফল কার্যকর। চর্মরোগের ব্যথায় লিচু বীজ ব্যবহৃত হয়। পানিতে সিদ্ধ লিচুর শেকড়, বাকল ও ফুল গলার ঘা সারায়। কচি লিচু শিশুদের বসন্ত রোগে এবং বীজ অম্ল ও স্নায়বিক যন্ত্রণার ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়। বাকল ও শিকড়ের ক্বাথ গরম পানিসহ কুলি করলে গলার কষ্ট উপশম হয়।

প্রধানত টাটকা ফল হিসাবেই লিচু খাওয়া হয়।বিভিন্ন উপায়ে প্রক্রিয়াজাত করেও লিচু রাখা যায়।অনেক দেশে লিচুর শাঁস চিনির দ্রবনে টিনজাত করে রাখা হয়। চীন ও তাইওয়ান প্রচুর পরিমাণে জিনটাত লিচু রপ্তানী করে থাকে।এয়াড়াও চীনে বাকলসহ লিচু রোদে অথবা তাপে শুকিয়ে সংরক্ষন করার রীতি প্রচলিত আছে।একে লিচি নাট বলে।এটি চীনাদের প্রিয় খাদ্য।এপ্রিল-মে মাসে লিচু পাকলে বোঁটার সংঙ্গে কিছু পাতাসহ ছোট ডাল ভেঙ্গে ফল সংগ্রহ করা হয়।সঠিক পরিচর্জা করলে প্রতিটি গাছ থেকে ১২৫-২০০ কেজি লিচু সংগ্রহ করা যায়।


রসুন খাওয়ার উপকারিতা
জেনে নিন কোন ফলে কোন পুষ্টি উপাদান বেশি
জিরার পানির উপকারিতা ও গুনাগুণ
কাটা খুরা গাছের উপকারিতা
শুষনি শাকের ২০ টি উপকারিতা
কলকাসুন্দার ঔষধি গুণাগুণ
আমের বিচির উপকারিতা
বাদামের উপকারিতা
কাঁটা মান্দার গাছ
চুল পড়া বন্ধ এবং মাথায় নতুন চুল গজাতে ঘরোয়া উপায়