আমের উপকারিতা

আম বাংলাদেশের এশটি গুরুত্বপূর্ণ প্রধান ফল। তাই আমকে ফলের রাজা বলা হয়।উৎপাদনের দিক থেকে বাংলাদেশে এর স্থান দ্বিতীয়।আমের ইংরেজি নাম Mango এবং বৈজ্ঞানিক নাম Mangifera indica ।এদেশের সর্বত্রই আমের চাষ হলেও পশ্চিমাঞ্চলে বিশেষকরে রাজশাহীতে সর্বাধিক পরিমানে উৎকৃষ্টমানের আম উৎপন্ন হয়।স্বাদ,গন্ধ,পুষ্টিমান এবং ব্যবহারের বৈচিত্রে ফলের জগতে আম তুলনাহীন। আমের বিভিন্ন জাত আছে, যেমন: ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসা, অরুনা, আম্রপালি, মল্লিকা, সুবর্নরেখা, মিশ্রিদানা, নিলাম্বরী, কালীভোগ, কাঁচামিঠা, আলফানসো, বারোমাসি, তোতাপূরী, কারাবাউ, কেঊই সাউই, গোপাল খাস, কেন্ট, সূর্যপূরী, পাহুতান, ত্রিফলা, হাড়িভাঙ্গা, ছাতাপরা, গুঠলি, লখনা, আদাইরা, কলাবতী ইত্যাদি।

আমের পুষ্টিগুণ:প্রতি ১০০ গ্রাম আমে রয়েছে:

পুষ্টিকাঁচা আম
পাকা আম
আমিষ০.৭গ্রাম১.০গ্রাম
স্বেতসার ১০.১ গ্রাম২০গ্রাম
চর্বি ০.১গ্রাম০.৭গ্রাম
খনিজ লবন০.৪গ্রাম০.৪গ্রাম
ভিটামিন বি-১০.০১মি.গ্রা.০.৪গ্রাম
ভিটামিন বি-২০.০১ মি.গ্রা.০.০৭মি.গ্রা.
ভিটামিন সি৬৩ মি.গ্রা.৪১ মি.গ্রা.
ক্যালসিয়াম১০ মি.গ্রা.১৬ মি.গ্রা.
লৌহ৫.৪ মি.গ্রা.১.৩ মি.গ্রা.
ক্যারোটিন৯০মাইক্রোগ্রাম গ্রাম৮৩০০ মাইক্রোগ্রাম গ্রাম
খাদ্যশক্তি৪৪ কি.ক্যালরী৯০ কি.ক্যালরী


আম পাকার সময়কালঃআম  শৃঙ্খলা মেনে বছরের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পেকে থাকে। এখন ভোক্তাকে শুধু জেনে নিতে হবে তার পছন্দের আমটি মৌসুমের ঠিক কোন সময়ে পাকছে।

কেনার সঠিক সময়যে জেলায় জন্মে
গোবিন্দভোগ১৫ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্তসাতক্ষীর
গোপালভোগ২৫ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্তচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, দিনাজপুর ও সাতক্ষীরা

রানিপছন্দ 

১ থেকে ১৫ জুনের মধ্যে
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী

ক্ষীরসাপাতি

৭ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত
 চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, দিনাজপুর ও সাতক্ষীরা

নাক ফজলি

৮ থেকে ২৫ জুন 
চাঁপাইনবাবগঞ্জ

বোগলাগুটি

১২ জুন থেকে ৭ জুলাই
চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর

বোম্বাই

১২ জুন থেকে ৫ জুলাই
মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

বারি আম-২ (লক্ষ্মণভোগ)

১৫ জুন থেকে ১৫ জুলাই
চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর 

হাঁড়িভাঙা

২০ জুন থেকে ৫ আগস্ট
রংপুরের মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলা 

তোতাপুরি

১৫ জুন থেকে ১০ জুলাইচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর 

গৌরমতি

২০ আগস্ট থেকে ১০ সেপ্টেম্বরচাঁপাইনবাবগঞ্জ

চৌষা 

১০ জুলাই থেকে ১০ আগস্টচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী

ল্যাংড়া

১৫ জুন থেকে ১৫ জুলাইচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ ও সাতক্ষীরা 

সূর্যপুরী

১ জুলাই থেকে ২০ জুলাইবালিয়াডাঙ্গী, ঠাকুরগাঁও
বারি-৪জুলাই থেকে ২০ জুলাইচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী

মোহনভোগ

৮ জুলাই থেকে ৩০ জুলাইচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী,নাটোর

আশ্বিনা

২০ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বরচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ

ফজলি 

৫ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, দিনাজপুর ও সাতক্ষীরা

সুরমা ফজলি

৩০ জুন থেকে ৩০ জুলাইচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর

মল্লিকা

জুলাই থেকে ৫ আগস্টরাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
আম্রপালি২৮ জুন থেকে ২৫ জুলাইসমগ্র বাংলাদেশ

আমের উপকারিতাঃ

০১.কাঁচা আম মাড়ির জন্য ভালো। দাঁতের ক্ষয় এবং রক্তপাত রোধ করে। এটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।

০২. আম রক্তে ক্ষতিকারক কোলেস্টেলের মাত্রা কমায়। ডায়াবেটিসের সঙ্গে লড়াই করে। ক্যানসার কোষকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে।

০৩. কাঁচা আম কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য খেতে পারেন। কাঁচা আম মধু দিয়ে খাওয়া পেটের কষাভাব দূর করতে সাহায্য করে।

০৪. সন্তানসম্ভবা নারী এবং মেনোপোজ হওয়া নারীর আয়রনের ঘাটতি পূরণে আম বেশি উপকারী।

০৫. পুরুষের যৌনশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীর ফিট রাখে।

০৬. আমে রয়েছে ভিটামিন এ, যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। চোখের চারপাশের শুষ্কভাবও দূর করে।

০৭. কাঁচা আম দেহের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, দুপুরে খাওয়ার পর কাঁচা আম খেলে বিকেলের তন্দ্রাভাব কাটে।

০৮. লিভারের সমস্যায় কাঁচা আম খাওয়া উপকারী। এটি বাইল এসিড নিঃসরণ বাড়ায় এবং অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াকে পরিষ্কার করে। 

০৯. দেহে নতুন রক্ত তৈরি করতে সাহায্য করে আম।

১০. ক্লিনজার হিসেবে ত্বকের উপরিভাগে কাঁচা এবং পাকা আম ব্যবহার করা যায়। আম লোমকূপ পরিষ্কার করে এবং ব্রণ দূর করে। বার্ধক্যের ছাপ রোধে আমের রস বেশ কার্যকরী। কাঁচা আমের রস, রোদে পোড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করে।

১১. খনিজ পদার্থ আয়রনের ভালো উৎস আম। অ্যানিমিয়া আক্রান্ত রোগীদের জন্য ভালো ওষুধ হিসেবে কাজ করে আম।

১২. আমে রয়েছে উচ্চ পরিমাণ প্রোটিন যা জীবাণু থেকে দেহকে সুরক্ষা দেয়।

১৩. আম পুরুষের শুক্রাণুর গুণগত মানকে ভালো রাখে।

১৪. ওজন কমাতে চাইলে কাঁচা আম খেতে পারেন। এটি পাকা আমের থেকে অনেক ভালো। কেননা পাকা আমে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে।

আমের বহুবিধ ব্যবহার:

প্রধানত পাকা আম টাটকা অবস্থায় খাওয়া হয়। এয়াড়াও পাকা এবং কাঁচা আম বহুবিধ উপায়ে প্রক্্িরয়াজাত করে দীর্ঘ দিন মজুদ রেখে খাওয়া যায়।আমের প্রক্রিয়াজাত দ্রব্যের মধ্যে রস,জ্যাম,স্কোয়াশ,চাটনী ও আচার এবং আমসত্ব খুবই জনপ্রিয়।আম পাউডার আম টফি এবং টিনজাত আমের খন্ডও অনেকে পছন্দ করে।অনেক এলাকায় কাঁচা আম,ঝাল লবন দিয়ে খেতে প্রায় সকল কিশোর-কিশোরী ও মহিলারা পছন্দ করে।

আমের রোপন পদ্ধতি:বীজ ও কলম করে আমের চারা তৈরি করা যায়। সারাদিন রোদ পায় এবং পানি জমে থাকে না এমন জায়গায় আমের চারা লাগাতে হয়।

ঘি এর উপকারিতা ( Benefits Of Ghee ) ঘি খাওয়ার নিয়ম এবং খাঁটি ঘি এর দাম
পাথরকুচি পাতার ঔষধি গুণাগুণ
গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ এড়াতে যা করবেন
অপমান হজম করবেন যেভাবে- How to Handle Insult
স্ট্রবেরির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
পুদিনা পাতার গুণাগুণ ও উপকারিতা
বাবলা গাছের উপকারিতা ও গুনাগুণ
কানপাকা রোগের লক্ষণ,কারণ ও চিকিৎসা - Symptoms and treatment of ear infections
কেওড়া ফল স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
তাল (ফল)-এর উপকারিতা