আমলকী অধিক পরিমাণ ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ একটি মূল্যবান ফল।বাংলাদেশে যতো ফল রয়েছে তার মধ্যে আমলকীতে সর্বাধিক ভিটামিন সি রয়েছে।দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নিরক্ষীয় অঞ্চলের আমলকীর উৎপত্তি হয়ে।ইংরেজিতে এটি এবং এ দুটি নামে পরিচিত।
আমলকীর পুষ্টিগুনঃ
গবেষনায় দেখা গেছে আমলকির রসে কমলালেবুর রসের চেয়ে ২০ গুন বেশী ভিটামিন সি রয়েছে।এছাড়াও প্রানীদেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সবগুলো পুষ্টি উপাদান এতে বিদ্যমান রয়েছে।প্রতি ১০০ গ্রাম আমলকীতে রয়েছে:-০.৯ গ্রাম আমিষ,৬.৯ গ্রাম শর্করা,০.১ গ্রাম চর্বি,০.৭ গ্রাম খনিজ লবন,০.০২ মিগ্রা ভিটামিন বি-১,০.০৮ মিগ্রা ভিটামিন বি-২,৪৬৩ মি.গ্রা. ভিটামিন-সি,৩৪ মি.গ্রা ক্যালসিয়াম,১.২ মি.গ্রা লৌহ,৯৬ কি.ক্যালরী খাদ্যশক্তি।
আমলকীতে প্রচুর ভিটামিন ছাড়াও আছে আমিষ। আমিষ প্রানীর স্বাভাবিক দৈহিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ন।খাবার এর দীর্ঘদিন অভাব থাকলে অপুষ্টি দেখা দেয়।এমনকি প্রানীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।শর্করা দেহের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।প্রয়োজনের অতিরিক্ত শর্করা দেহে জমা থাকে এবং চাহিদা অনুযায়ী দেহের তাপশক্তির যোগান দেয়।চর্বি শর্করার মতোই দেহে তাপ ও শক্তি উৎপাদন করে।অতিরিক্ত চর্বি দেহের ত্বকের নীচে জমা থাকে ,যা ত্বকের মসৃনতা বৃদ্ধিও মাধ্যমে এর সৌন্দয্য বাড়ায় এবং দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে।খনিজ লবন দেহের স্বাভাবিক ক্রিয়া সম্পাদনে সাহায্য করে।কিছু কিছু খনিজ লবন দেহের বিভিন্ন অঙ্গ গঠনেও সাহায্য করে।ভিটামিন-বি দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি সাধনে এবং ¯œায়ুতন্ত্রকে সবল ও স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।এর অভাবে বেরিবেরি রোগ হয়।ভিটামিন বি-২ দেহের পরিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে।এটি দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।এর অভাবে ¯œায়ুবিক দুর্বলতা ও হজমে সমস্যা দেখা দেয়।বিটামিন সি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি কওে ও সর্দি-কাশি নিরাময়ে সাহায্য করে।এটি দাঁত ও মাড়ি মজবুতে সাহায্য করে। এর অভাভে স্কার্ভি রোগ হয়।
আমলকির উপকারিতা:
(১) আমলকীর রস কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের সমস্যা দূর করতে পারে। এছাড়াও এটি পেটের গোলযোগ ও বদহজম রুখতে সাহায্য করে।
(২) প্রতিদিন সকালে আমলকীর রসের সঙ্গে মধু মিশে খাওয়া যেতে পারে। এতে ত্বকের কালো দাগ দূর হবে ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
(৩) শরীর ঠাণ্ডা রাখে, শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে, পেশী মজবুত করে। এটি হৃদযন্ত্র, ফুসফুসকে শক্তিশালী করে ও মস্তিষ্কের শক্তিবর্ধন করে। আমলকীর আচার বা মোরব্বা মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্রের দুর্বলতা দূর করে। শরীরের অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে।
(৪) চুলের পরিচর্যার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি কেবল চুলের গোড়া মজবুত করে তা নয়, এটি চুলের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
(৫) আমলকী চুলের খুসকির সমস্যা দূর করে ও পাকা চুল প্রতিরোধ করে।
(৬) লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে তুলে দাঁত ও নখ ভাল রাখে।
(৭) সর্দি-কাশি, পেটের পীড়া ও রক্তশূন্যতা দূরীকরণে বেশ ভাল কাজ করে।
(৮) প্রতিদিন সকালে আমলকির রসের সঙ্গে মধু মিশে খাওয়া যেতে পারে। এতে ত্বকের কালো দাগ দূর হবে ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
(৯) প্রতিদিন আমলকির রস খেলে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর হয় এবং দাঁত শক্ত থাকে।
(১০) কফ, বমি, অনিদ্রা, ব্যথা-বেদনায় আমলকি অনেক উপকারী।
(১১) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মানসিক চাপ কমায়। কফ, বমি, অনিদ্রা, ব্যথা-বেদনায় আমলকী অনেক উপকারী। ব্রঙ্কাইটিস ও এ্যাজমার জন্য আমলকীর জুস উপকারী।
(১২) ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার জন্য আমলকীর জুস উপকারী।
(১৩) এক গ্লাস দুধ বা পানির সঙ্গে আমলকি গুঁড়া ও সামান্য চিনি মিশিয়ে দিনে দু’বার খেতে পারলে অ্যাসিডিটির সমস্যা কমবে।
(১৫) আমলকির রস দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও চোখের বিভিন্ন সমস্যা যেমন চোখের প্রদাহ, চোখ চুলকানি বা পানি পড়ার সমস্যা থেকে রেহাই দেয়।
(১৬) আমলকি শরীর ঠাণ্ডা রাখে, শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে, পেশি মজবুত করে।
(১৭) আমলকির রস কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের সমস্যা দূর করতে পারে। এ ছাড়াও এটি পেটের গোলযোগ ও বদহজম রুখতে সাহায্য করে।
(১৮) আমলকির টক ও তেঁতো মুখে রুচি ও স্বাদ বাড়ায়। রুচি বৃদ্ধি ও খিদে বাড়ানোর জন্য আমলকির গুঁড়ার সঙ্গে সামান্য মধু ও মাখন মিশিয়ে খাওয়ার আগে খেতে পারেন।
(১৯) আধা চূর্ণ শুষ্ক ফল এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে খেলে হজম সমস্যা কেটে যাবে। খাবারের সঙ্গে আমলকীর আচার হজমে সাহায্য করে।
(২০) শরীরের অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে আমলকি।
(২২) এটি হৃদযন্ত্র, ফুসফুসকে শক্তিশালী করে ও মস্তিষ্কের শক্তিবর্ধন করে। আমলকির আচার বা মোরব্বা মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্রের দুর্বলতা দূর করে।