গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - Advantages and disadvantages of eating beef

গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - Advantages and disadvantages of eating beef

গরুর মাংসের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সতর্কবার্তা পেতে পেতে আমাদের প্রায় সবার মনে ধারণা জন্মেছে যে, এর কোনো উপকারিতাই নেই। সত্যি কথা হল, গরুর মাংসের অনেক উপকারী দিকও আছে। পরিমিত পরিমাণে সঠিকভাবে খেলে গরুর মাংস থেকে যেই পরিমাণ পুষ্টি পাওয়া যায় তা সমপরিমাণ অন্য কিছু থেকে পাওয়া কঠিন।

গরুর মাংসের পুষ্টিগুণ:

১. গরু-খাসির মাংসে রয়েছে উন্নত প্রথম শ্রেণির প্রোটিন যা মাংসপেশি গঠনে সহায়তা করে। শরীরের জন্য যে সব অত্যাবশকীয় এমাইনো এসিড প্রয়োজন সবগুলো এমাইনো এসিড পাওয়া যায় গরু-খাসির মাংস থেকে।

২. গরুর মাংসে রয়েছে পর্যাপ্ত আয়রন যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং সেই সঙ্গে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে থাকে।

৩. বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনে খুব ভালো উৎস গরুর মাংস। ভিটামিন বি১২, বি৬ রয়েছে গরুর মাংসে যা নার্ভ সিস্টেমকে ভালো রাখে।

৪. আয়রনের পাশাপাশি গরুর মাংসে রয়েছে আরও কিছু প্রয়োজনীয় মিনারেলস। যেমন : জিংক, সেলেনিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। যা শরীরের মিনারেলস-এর ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি শরীরের কোষকে ভালো রাখে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

গরুর মাংসের উপকারিতা

শিশুর বৃদ্ধিতে সহায়ক

গরুর মাংস খেলে তা আমাদের বুদ্ধি-বৃত্তিক গঠন, শারীরিক বর্ধন ও রক্ত বর্ধনে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে। ৮৫ গ্রাম গরুর মাংসে ৯-১৩ বছর বয়সী শিশুর দৈনিক চাহিদার ১২৫ শতাংশ ভিটামিন বি১২, ৯০ শতাংশ প্রোটিন, ৩২ শতাংশ আয়রন, ২৯ শতাংশ নায়াসিন, ৭৪ শতাংশ জিঙ্ক, ৪২ শতাংশ সেলেনিয়াম, ৩২ শতাংশ ভিটামিন বি৬, ২৩ শতাংশ রিবোফ্লেভিন এবং ১৬ শতাংশ ফসফরাস থাকে।

খনিজের অভাব দূর করে

শরীরে খনিজের অভাবে সৃষ্ট অসুখ-বিসুখ দূর করতে কাজ করে গরুর মাংস। কারণ এটি খনিজ লবণের দুর্দান্ত উৎস। গরুর মাংসে থাকে জিংক, ফসফরাস, সেলেনিয়াম এবং প্রচুর লৌহ। এই মাংস ভিটামিনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। গরুর মাংস ভিটামিন বি-৩, বি-৬, বি-১২ ইত্যাদি ভিটামিনের জোগান দেয়।

প্রোটিনের ভালো উৎস

গরুর মাংস প্রোটিনের ভালো উৎস। মাংস ছাড়াও হাড়, কলিজা, মগজ ইত্যাদি থেকে মেলে প্রোটিন। এই প্রোটিন থেকে পাওয়া অ্যামাইনো এসিড কাজে লাগে হাড় ও মাংসপেশি ভালো রাখতে। প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে পাওয়া যায় ২২.৬ গ্রাম প্রোটিন।

জিংকের ঘাটতি দূর করে

আমাদের সুস্থতার জন্য জিংক একটি জরুরি উপাদান। এটি আমাদের শরীরের কোষ ভালো রাখে এবং বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ৮৫ গ্রাম গরুর মাংস খেলে তা দৈনিক জিংকের ৩৯ শতাংশ পূরণ করে।

গরুর মাংসের অপকারিতা

কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি বাড়ায়

অনেকে অতিরিক্ত গরুর মাংস খেয়ে ফেলেন। এতে বাড়ে কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পরবর্তীতে আরও বড় অসুখ দেখা দিতে পারে। তাই অতিরিক্ত গরুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। গরুর মাংসের সঙ্গে নানা ধরনের সবজি মিলিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যাবে।

কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি

অতিরিক্ত গরুর মাংস খাওয়া মোটেও উপকারী নয়। তাই খেতে যতই ভালো লাগুক, গরুর মাংস খেতে হবে পরিমিত। চিকিৎসকদের মতে, সপ্তাহে পাঁচ বেলা গরু, খাসি কিংবা ভেড়ার মাংস খেলে বাড়ে কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। সেইসঙ্গে প্রক্রিয়াজাত লাল মাংস খেলে তা মৃত্যু ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।

হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি

আপনি হয়তো জেনে থাকবেন, গরুর মাংস খেলে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। কারণ এতে থাকা অতিরিক্ত সোডিয়াম শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ রক্তচাপ সৃষ্টিতে বা বাড়াতে কাজ করে সোডিয়াম। তাই গরুর মাংস খেলে হতে পারে উচ্চ রক্তচাপ। সেখান থেকে দেখা দেয় হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মতো সমস্যা।

কতটুকু গরুর মাংস খেতে পারবেন?

দৈনিক গরুর মাংস খেতে পারবেন ৮৫ গ্রাম। ৮৫ গ্রাম চর্বি ছাড়া গরুর মাংস খেলে তা আপনার দৈনিক ক্যালোরির চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ করবে। রান্না করা ৩ টুকরা মাংসে ৮৫ গ্রাম হয়, তাই চেষ্টা করুন দিনে ৩ টুকরার বেশি মাংস না খেতে। যদি একবারে আরও বেশি মাংস খেয়ে ফেলার ভয় থাকে তবে সপ্তাহে দুইদিনের বেশি গরুর মাংস না খাওয়াই ভালো।

চুল পড়া বন্ধ এবং মাথায় নতুন চুল গজাতে ঘরোয়া উপায়
মিষ্টি আলুর স্বাস্থ্য উপকারিতা
ত্বক ফর্সা করা ক্রিম
চোখ ওঠা রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
ময়েশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম
হরতকি খেলে কী কী উপকার হয়-What are the benefits of taking chebulic myrobalan
পেপারোমিয়া গাছের উপকারিতা
হাগড়া গাছের উপকারিতা
হরতকি ফলের গুনাগুণ-Properties of Myrobalan Fruit
আমলকির উপকারিতা