ইসবগুলের ভুষির উপকারিতা

ইসপগুল একটি একবর্ষজীবি উদ্ভিদ। লম্বায় ১২-১৮ ইঞ্চি হয়। বীজ বপনের ২ মাসের মধ্যে গাছে ফুল আসে ও ১১০-১৩০ দিনের মধ্যে ফসল তোলার উপযোগী হয়। ভারত, পাকিস্তান, ইরান, এ্যারাবিয়ান পেনিনসূলার দেশগুলিতে এর চাষ হয়।এর পরিপক্ক বীজের সবচেয়ে বাইরের ত্বক (এপিডার্মিস) ও এর সংলগ্ন নিচের লেয়ার দুটি একসাথে আলাদা হয়ে আসে যা আমরা ইসপগুল হাস্ক বা ইসপগুলের ভুষি বলে থাকি।

ইসবগুলের উপকারিতা

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: ইসবগুলের দ্রবণীয় ফাইবারের পানি শোষণের প্রকৃতির জন্যই মল নরম হতে সাহায্য করে। ইসবগুলের ভুষির অদ্রবণীয় ফাইবার মলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য ২ চামচ ইসবগুল ১ গ্লাস কুসুম গরম দুধের সাথে মিশিয়ে পান করুন প্রতিদিন ঘুমুতে যাওয়ার আগে।

ডায়রিয়া সারায়: এটি বিশ্বাস করা কঠিন যে ইসবগুল একই সাথে পরিপাকের দুটি ভিন্ন ধরণের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। ইসবগুলের দ্রবণীয় ফাইবার অন্ত্রের পানি শোষণ করে ফুলে উঠে এবং তরল মলকে আবদ্ধ করে শক্ত করে ফেলে। ২ চামচ ইসবগুল ৩ চামচ দইয়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়ার পর খান দিনে দুইবার করে। দইয়ের প্রোবায়োটিক পাকস্থলীর ইনফেকশন সারাতে সাহায্য করে।

ওজন কমায়: ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাঁধা হচ্ছে ক্ষুধার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা। ইসবগুল পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। অন্ত্র পরিস্কারেও সাহায্য করে ইসবগুল। ওজন হ্রাসের সময় চর্বি পোড়ানোর প্রক্রিয়ায় শরীরে অনেক বর্জ্য পদার্থ উৎপন্ন হয়। হঠাৎ করে কাঁচা খাবারের পরিমাণ বৃদ্ধি করলে তা পাকস্থলীর জন্য বেশ ভারী হয়ে যায় তাই কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেট ফাঁপার সমস্যা তৈরি করে। সুস্থতার জন্য এই বর্জ্য পদার্থগুলো শরীর থেকে বাহির হয়ে যাওয়া প্রয়োজন। ইসবগুল পাকস্থলী পরিষ্কার করতে সাহায্য করে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়ার মাধ্যমে। প্রতিদিন সকালে অথবা খাওয়ার পূর্বে কুসুম গরম পানিতে ইসবগুল ও লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে পেট ভরার অনুভূতি হয় এবং অন্য খাবার খাওয়ার ইচ্ছা কমায়।

কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে : ইসবগুলের দ্রবণীয় ফাইবার রক্তের কোলেস্টেরল কমতে সাহায্য করে। এটি অন্ত্রে ফ্যাট ও অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের সাথে জেল গঠন করে বর্জ্যের সাথে বের হয়ে যায়। অন্ত্রের দেয়াল যাতে ফ্যাট শোষণ করতে না পারে তাতে সাহায্য করে ইসুবগুল।এছাড়াও ডায়াবেটিস, পাইলস ও ফিশারের রোগীদের জন্য উপকারী ইসবগুল। এসিডিটির সমস্যা সমাধানে এবং হজমক্রিয়ার উন্নতিতেও সাহায্য করে ইসবগুল।

অ্যাসিডিটি প্রতিরোধে: বেশির ভাগ মানুষেরই অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকে আর ইসবগুল হতে পারে এই অবস্থার ঘরোয়া প্রতিকার।ইসগুল খেলে তা পাকস্থলীর ভেতরের দেয়ালে একটা প্রতিরক্ষা মূলক স্তর তৈরি করে যা অ্যাসিডিটির বার্ন থেকে পাকস্থলীকে রক্ষা করে। এছাড়া এটি ঠিক হজমের জন্য এবং পাকস্থলীর বিভিন্ন এসিড নিঃসরণে সাহায্য করে।ইসবগুল অ্যাসিডিটিতে আক্রান্ত হওয়ার সময়টা কমিয়ে আনে। প্রতিবার খাবার পর ২ চামচ ইসবগুল আধা গ্লাস ঠাণ্ডা দুধে মিশিয়ে পান করুন। এটি পাকস্থলীতে অত্যাধিক এসিড উৎপাদন কমাতে সাহায্য করে অ্যাসিডিটির মাত্রা কমায়।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে : ইসবগুল যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য খুবই ভালো। এটি পাকস্থলীতে যখন জেলির মত একটি পদার্থে রূপ নেয় তখন তা গ্লুকোজের ভাঙ্গন ও শোষণের গতিকে ধীর করে। যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে। খাবার পর নিয়মিত ভাবে দুধ বা পানির সাথে ইসবগুল মিশিয়ে পান করুন ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে।তবে দইয়ের সাথে মিশিয়ে খাবেন না এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।

পাইলস প্রতিরোধে: প্রাকৃতিক ভাবে দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় খাদ্যআঁশে ভরপুর ইসবগুল যারা পায়ুপথে ফাটল এবং পাইলসের মত বেদনাদায়ক সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য উত্তম। এটা শুধু পেট পরিষ্কার করতেই সাহায্য করেনা মলকে নরম করতে সাহায্য করে অন্ত্রের পানিকে শোষণ করার মাধ্যমে এবং ব্যাথামুক্ত অবস্থায় তা দেহ থেকে বের হতেও সাহায্য করে। এটি প্রদাহের ক্ষত সারাতেও সাহায্য করে। ২ চামচ ইসবগুল কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে ঘুমাতে যাবার আগে পান করুন।

ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার সঠিক নিয়ম

১।ডায়রিয়া প্রতিরোধে ইসবগুল দইয়ের সাথে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।  কারণ দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক পাকস্থলীর ইনফেকশন সারায় এবং ইসবগুল তরল মলকে শক্ত করতে সাহায্য করে খুব কম সময়ের মাঝে ডায়রিয়া ভালো করতে পারে।

২। অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে ইসবগুলের ভুষি হতে পারে এই অবস্থার ঘরোয়া প্রতিকার।ইসগুল খেলে তা পাকস্থলীর ভেতরের দেয়ালে একটা প্রতিরক্ষা মূলক স্তর তৈরি করে যা অ্যাসিডিটির বার্ন থেকে পাকস্থলীকে রক্ষা করে। এছাড়া এটি সঠিক হজমের জন্য এবং পাকস্থলীর বিভিন্ন এসিড নিঃসরণে সাহায্য করে।ইসবগুল অ্যাসিডিটিতে আক্রান্ত হওয়ার সময়টা কমিয়ে আনে। প্রতিবার খাবার পর ২ চামচ ইসবগুল আধা গ্লাস ঠাণ্ডা দুধে মিশিয়ে পান করুন। এটি পাকস্থলীতে অত্যাধিক এসিড উৎপাদন কমাতে সাহায্য করে অ্যাসিডিটির মাত্রা কমায়।

৩। ওজন কমানোর উদ্দেশ্যকে সফল করতে ইসবগুলের ভুষি হচ্ছে উত্তম হাতিয়ার। এটি খেলে বেশ লম্বা সময় পেট ভরা থাকার অনুভূতি দেয় এবং ফ্যাটি খাবার খাওয়ার ইচ্ছাকে কমায়। । কুসুম গরম পানিতে ২ চামচ ইসবগুলের ভুষি ও সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে ভাত খাবার ঠিক আগে খেতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে খেলেও তা ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

৪। প্রাকৃতিক ভাবে দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় খাদ্যআঁশে ভরপুর ইসবগুলের ভুষি যারা পায়ুপথে ফাটল এবং পাইলসের মত বেদনাদায়ক সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য উত্তম। এটা শুধু পেট পরিষ্কার করতেই সাহায্য করেনা মলকে নরম করতে সাহায্য করে অন্ত্রের পানিকে শোষণ করার মাধ্যমে এবং ব্যাথামুক্ত অবস্থায় তা দেহ থেকে বের হতেও সাহায্য করে। এটি প্রদাহের ক্ষত সারাতেও সাহায্য করে। ২ চামচ ইসবগুল কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে ঘুমাতে যাবার আগে পান করুন।

ইসুবগুলের ভুষির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

যেকোন খাবারই বেশি পরিমাণে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। তাই উপকারী ইসবগুলেরও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে  কখনো কখনো এটি পাকস্থলীতে টান সৃষ্টি করতে পারে। তাই এমন ক্ষেত্রে ইসবগুল খাওয়া বন্ধ করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।– যদি অ্যালার্জি দেখা দেয় তাহলেও দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যান।– যদি আপনার এপেন্ডিসাইটিস ও স্টোমাক ব্লকেজের মত স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে তাহলে ইসবগুল খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন– ইসবগুল অনেকক্ষণ আগে ভিজিয়ে না রেখে সাথে সাথে ভিজিয়ে পান করুন। চিকিৎসকদের পরামর্শ হলো ইসবগুল যথেষ্ট পরিমাণ পানিতে ঢেলে যত দ্রুত সম্ভব পান করে নিন। এর সুফল পেতে এর সঙ্গে প্রচুর পানি পান করতে হবে।– এটি গেলা বেশ কষ্টকর এবং যাদের অন্ত্রে সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি সমস্যা ডেকে আনতে পারে।

মনের স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় - Ways to maintain good mental health
জামরুলের উপকারিতা
জবার উপকারিতা ও ঔষধি গুণ
ঝিঙের পুষ্টিগুণ
স্বপ্নদোষ বন্ধ করার উপায়
রোজা রেখে মাথাব্যথা হলে যা করবেন - What to do if you have a headache after fasting
শীতে দাড়ির যত্নে যা করবেন - What to do in winter beard care
জলাতঙ্কের লক্ষণ ও প্রতিকার
ঘি এর উপকারিতা ( Benefits Of Ghee ) ঘি খাওয়ার নিয়ম এবং খাঁটি ঘি এর দাম
মাথায় ফুসকুড়ি দূর করার উপায়