বিলুপ্ত প্রায় ফল হল গোলাপজাম। গোলাপজামের বৈজ্ঞানিক নাম Syzygium jambos।এই ফল পাকলে গোলাপের মত কিছুটা গন্ধ বের হয় বলেই সম্ভবত এ নাম। বৃহত্তর সিলেট,বরিশাল এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বাড়ীর আশেপাশে একসময় প্রচুর দেখা গেলেও এখন সব অঞ্চলেই হারিয়ে যেতে বসেছে। এটি মূলত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার গাছ। গাছ দীর্ঘদিন বাঁচে এবং ফল দান করে। পুষ্পবিন্যাস নিয়ত, ফুল উভলিঙ্গিক, অধোগর্ভ, পুষ্পদণ্ড লম্বা। ফল ফিকে হলুদ বা গোলাপি আভাযুক্ত হালকা সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে। ফল বেরি, আকৃতি প্রায় গোলাকার।গাছ মাঝারী আকৃতির। ফলটির আদি নিবাস দক্ষিন-পূর্ব এশিয়াও মালায়া। সেখান থেকে ভারতীয় উপমাহাদেশে আসে। এখন বাংলাদেশ, ভারত, ফিলিপিন, চীন, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশে দেখা যায়। বীজ এবং কলমের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করা যায়। গাছ লাগানোর ২/৩ বছর পর থেকেই ফল সংগ্রহ করা যায়। গোলাপজাম গাছে মাঘ-ফাল্গুন মাসে ফুল আসে এবং বৈশাখ থেকে শ্রাবণ মাসের মধ্যে ফল পাকে। গোলাপজামের ফুলও খুবই দৃষ্টিনন্দন।
টক মিষ্টি স্বাদের এ ফলে প্রচুর ভিটামিন সি ছাড়াও রয়েছে আমিষ, স্টার্চ, চর্বি, খনিজ লবণ ও ভিটামিন বি১, বি২, ক্যারোটিন এবং ক্যালসিয়াম। একটি গোলাপজামে প্রায় ৪০ কিলো ক্যালরি খাদ্যশক্তি থাকে। পেটের পীড়া, ডায়রিয়া, বমি বমিভাব দূর করতে এটি কার্যকর। এছাড়া গাছের ছাল ও পাতা ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী।পাকা ফল সৈন্ধব লবনে সটকিয়ে ৩-৪ ঘন্টা রাখার পর নির্গত রস পানির সাথে মিশিয়ে পান করলে পাতলা পায়খানা দুর হয়। এ ফল মুখের রুচি বৃদ্ধি করে, বমি বমি ভাব দুর করে। গোলাপজাম গাছের ছাল ও পাতা বহুমুত্র রোগের উপকার করে।
এছাড়াও বিলুপ্তপ্রায় দেশি ফলগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ- লুকলুকি, ডেউয়া, ডেফল, করমচা, জংলিবাদাম, কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, গোলাপজাম, তুঁত, তিনকরা, সাতকরা, আদা জামির, জামির, মনফল, অরবরই, আঁশফল, তারকা ফল, গাব, বিলাতি গাব, আতা, শরিফা, কাউফল, তৈকর, ডালিম, চালতা, ডুমুর, বৈঁচি, টকআতা, পানিফল, সিঙ্গাড়াফল, জিলাপিফল, পদ্মফল, মাখনা, রুটিফল, বকুল, ফলসা, চুকুর, চিকান, পানকি চুনকি, টুকটুকি বা টাকিটাকি, বিলিম্বি, ডালিম, ক্ষুদিজাম ফল।