মাখনা ফলের উপকারিতা-Benefits of Foxnut fruit
মাখনা কাঁটাযুক্ত মিঠা পানির শাপলা পরিবারের একটি জলজ উদ্ভিদ। মিঠা পানির জলাধার, ঝিল বিশেষভাবে উন্মুক্ত পানির জলাভূমি বা বিলে মাখনা জন্মে।
ইংরেজি নাম Foxnut,Prickly Water Lily
বৈজ্ঞানিক নাম Euryale ferox
বর্ণনা
মাখনা কাটাঁযুক্ত শালুকের মতো উদ্ভিদ যার শিকড় ও কন্দ পানির নিচে মাটিতে সন্নিবিষ্ট থাকে। পাতা প্রায় গোলাকার, পানির উপরে ভেসে থাকে। মাখনার কাটাঁযুক্ত পাতার উপরের রং সবুজ।মাখনার ফল কচি এবং পক্ক উভয় অবস্থাতেই খাওয়া যায়। এই ফলের বাইরের অংশ কাঁটাযুক্ত। ভিতের ফল ছোলার দানার মত। মাখনার ফল কচি এবং পক্ক উভয় অবস্থাতেই খাওয়া যায়। এই ফলের বাইরের অংশ কাঁটাযুক্ত। ভিতের ফল ছোলার দানার মত। স্বাদও কাঁচা ছোলার স্বাদের। ফুলের পাপড়ি ঝরে গেলে থেকে যায় কাপ আকৃতির ফল। এর ভেতরে ছোট ছোট বিচি থাকে খোসা ছাড়িয়ে পাওয়া মিষ্টি স্বাদের এই মাখনা। স্বাদও কাঁচা ছোলার স্বাদের। ফুলের পাপড়ি ঝরে গেলে থেকে যায় কাপ আকৃতির ফল। এর ভেতরে ছোট ছোট বিচি থাকে খোসা ছাড়িয়ে পাওয়া মিষ্টি স্বাদের এই মাখনা। ওষুধি গুণসম্পন্ন এই উদ্ভিদের বীজটি শারীরিক বলবর্ধক এবং কামোত্তেজক। পাতাটি বাত রোগের জন্য উপকারী বলে ভেষজশাস্ত্র থেকে জানা যায়।
বিস্তৃতি
চীন, জাপান, মিয়ানমার, কোরিয়া ও ভারতে জন্মে এ জলজ উদ্ভিদ। চীনে প্রায় ৩০০০ বছর যাবৎ মাখনা চাষের রেকর্ড আছে। এটি বাংলাদেশ ও ভারতের স্থানীয় উদ্ভিদ।
মাখনা ফলের পুষ্টিগুণ
মাখনার পুষ্টির কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো এটি স্নেহ পদার্থ এবং কোলস্টেরল শূন্য। এ কারণে যাদের হাটের সমস্য আছে তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ স্নাক্স বা জল খাবার। মাখনাতে ভালো পরিমাণ প্রোটিন আছে- যা শরীরের পেশির টিসু্য গঠনে কাজে লাগে। অধিক পরিমাণ পটাশিয়াম এবং কম সোডিয়াম থাকার ফলে বিশেষত যারা হাইপার টেনশন বা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন তাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্যে করে। প্রতি ১০০ গ্রাম মাখনাতে শক্তির পরিমাণ ৩৫০ কিলোক্যালরি, স্নেহ পদার্থ-০.১ গ্রাম, প্রোটিন-৯.৭ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট-৭.৭ গ্রাম, ফাইবার বা আঁশের পরিমাণ-৭.৬ গ্রাম। বিভিন্ন খনিজের মধ্যে উলেস্নখযোগ্য পরিমাণে সোডিয়াম- ২১০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম-৫০০ মিলিগ্রাম এবং ক্যালশিয়ামের পরিমাণ-৬০ মিলিগ্রাম।
মাখনার উপকারিতা:
(১)মাখনাতে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন আছে, যা শরীরের পেশির টিস্যু গঠনে কাজে লাগে। অধিক পরিমাণ পটাসিয়াম এবং কম সোডিয়াম থাকার ফলে, বিশেষত যাঁরা হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন তাঁদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
(২) দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া, প্লীহার সমস্যা, যক্কৃতের অসুখ অসুখের প্রতিকারে প্রাচ্যের চিকিৎসায় বহুদিন যাবৎ মাখনা ব্যবহৃত হচ্ছে।
(৩) মাখনা খেলে প্রজনন ক্রিয়ার উন্নতি হয় এবং পুরুষের মধ্যে বীর্যের মান উন্নত করে।
(৪) মাখনা হাড়ের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কমিয়ে হাড়ের শক্তিবৃদ্ধি।
(৫) চীনে যকৃতের সমস্যার জন্য বহুকাল ধরে মাখনার সাহায্যে চিকিৎসার চিরাচরিত বিধান চলে আসছে।
(৬) নিয়মিত মাখনা খেলে অনিয়ন্ত্রিত প্রস্রাবের মতো অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে আপনাকে রেহাই পাওয়া যায়।
(৭) মাখনার মধ্যে প্রচুর তন্তু থাকায় খাবার খাওয়ার অনতিবিলম্বে রক্তে শর্করা বৃদ্ধি হতে দেয় না। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হওয়ার দরুন ডায়বিটিসের জটিলতা বাড়তে দেয় না।