
আকন্দ পাতার গুণাগুণ বা উপকারিতা
আকন্দ গাছের ছাল ধুসর বর্ণের এবং কান্ড শক্ত ও কচি ডাল লোমযুক্ত। পাতা ৪ থেকে ৮ ইঞ্চি লম্বা উপরিভাগ মসৃণ এবং নীচের দিক তুলোর ন্যায়। ক্ষুদ্র বৃন্ত এবং বৃন্তদেশ হৃদপিন্ডাকৃত। গাছের পাতা, শাখা ভাঙলে দুধের মত সাদা আঠা বের হয়। সাদা বা বেগুনি বর্ণের ফুল হয়।সারাদেশে ঝোপঝাড়ে অযত্নে অবহেলায় আকন্দ গাছ বেড়ে ওঠে।
বৈজ্ঞানিক নাম: Calotropis gigantea
ইংরেজি নাম: crown flower
চাষাবাদ : ৩ থেকে ৪ ফুট দুরুত্বে আগন্দ গাছ লাগাতে হয়। তবে মে- জুন মাসে ফল পাকলে ফেটে বীজ বাতাসে ভেসে বেড়ায়। এ সময় এটি চাষ করা ভালো। এছাড়াও কাটিং পদ্ধতিতেও এটি চাষ করা যায়। প্রতি কেজিতে বীজের পরিমাণ: ১লক্ষ ৩৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৪০ হাজারটি।
বীজ সংরক্ষন: বীজ থেকে বংশ বিস্তর সম্ভব হলেও সাধারণ এর মোথা ও সাকার অংশ থেকে বংশ বিস্তার হয়ে থাকে। আকন্দ ব্যবহার্য অংশ: ফুল, পাতা, শিকড় ও আঠা।
আসুন জেনে নেই আকন্দ পাতার গুণাগুণ বা উপকারিতা
(১) খোস-পাচড়া বা একজিমার ক্ষেত্রে আকন্দের আঠার সঙ্গে চার গুণ সরিষার তেল মিশিয়ে গরম করতে হয়।
(২) আকন্দের আঠার সঙ্গে ৪গুণ সরিষার তেল মিশিয়ে গরম করে এই গরম তেলের সঙ্গে কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে খোস পাচড়ায় মাখলে তা ভালো হয়ে যায়।
(৩) বিছে কামড়ালে জ্বালা-পোড়া কমাতে আকন্দ পাতা ব্যবহার করা হযে থাকে।
(৪) বুকে সর্দি বসে গেলে ভালো করে পুরনো ঘি বুকে ডলতে হয়। ঘি মাখানো বুকে আকন্দের পাতা গরম করে ছেক দিলে সর্দি ভালো হয়।
(৫) বিছে কামড়ালে জ্বালা-পোড়া কমাতে: বিছে কামড়ালে জ্বালা-পোড়া কমাতে আকন্দ পাতা ব্যবহার করলে উপশম হয়।
(৬) পা মোচকে গেলে প্রচণ্ড ব্যথায় এই আকন্দ পাতা দিয়ে গরম ছেক দিলে ব্যথা উপশম হয়।
(৭) অম্বল/এসিডিটি দেখা দিলে: ০.৬৫ গ্রাম পরিমাণ আকন্দ পোড়া ছাই পানিসহ পান করলে সঙ্গে সঙ্গে উপকার পাওয়া যায়।
(৮) পেট কাপড়ানি বা পেট জ্বালায়: আকন্দ পাতার সোজা দিকে সরিষার তেল মাখিয়ে পাতাটি অল্প গরম করে পেটের উপর রাখলে বা ছেঁক দিলে পেট কামড়ানো বা পেট জ্বালা বন্ধ হয়।
(৯) আকন্দ পাতার সোজা দিক ঘি মেখে ব্যথার জায়গায় বসিয়ে লবনের পুটলি দিয়ে ছেক দিলে উপকার পাওয়া যায়
(১০) আকন্দ বিশেষ উপকারী। ফোলাজনিত কারনে কোন স্থান ফুলে উঠলে আকনদ পাতা বেঁধে রাখলে উপকার পাওয়া যায়।
(১১) আকন্দের শিকড়ের ছাল প্রথমে গুড়া করে তারপর আকন্দের আঠায় ভিজিয়ে রেখে পরে শুকিয়ে নিতে হবে। এর পর তা চুরুট বানিয়ে ধুমপান করলে শ্বাস কষ্ট ভাল হয়।
(১২) শরীরের কোনো স্থানে ক্ষত হলে সেই স্থানটিতে আকন্দ পাতা সেদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হয়। এতে পুঁজ হয় না
(১৩)আকন্দের কষ তুলায় ভিজিয়ে লাগালে দাঁত ব্যথা দুর করে এবং যোনিতে ধারণ করলে গর্ভপাত ঘটায়।
(১৪) গেলে প্রচণ্ড ব্যথায় এই আকন্দ পাতা দিয়ে গরম ছেক দিলে ব্যথা উপশম হয়।
(১৫)আকন্দ পাতা ওষুধ হিসেবে ব্রণ ফাটাতে সাহায্য করে। আকন্দ পাতা দিয়ে ব্রণ চেপে বেঁধে রাখলে ব্রণ ফেটে যায়।
(১৬)আকন্দ চুলের রোগ, ব্যাথা এবং বিষনাশে বিশেষ কার্যকরী।
(১৭)হাঁপানি রোগের মহৌষধ আকন্দ পাতা।