অ্যাভোকাডো ফলের উপকারিতা
avocado
অ্যাভোকাডো খাওয়ার নিয়ম | অ্যাভোকাডো কোথায় পাওয়া যায় | অ্যাভোকাডো ফলের ছবি | অ্যাভোকাডোর পুষ্টিগুন|অ্যাভোকাডো ত্বকের যত্নে কতটা কার্যকর|অ্যাভোকাডো ফলের অপকারিতা

অ্যাভোকাডো-avocado

অ্যাভোকাডো হচ্ছে মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকার স্থানীয় উদ্ভিদ, যেটির লরেসি পরিবারের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। ফলটির খোসা কুমিরের গায়ের মত অমসৃণ হওয়ায় এটা কুমির নাশপাতি হিসেবেও পরিচিত।

ইংরেজি নাম: avocado

বৈজ্ঞানিক নাম: Persea americana

অ্যাভোকাডো পুষ্টিতে ভরপুর এবং ঔষধিগুণে সমৃদ্ধ ফল। ইহা দেহকে সোডিয়াম, সুগার ও কোলস্টেরল মুক্ত রাখে। এ ফল অতি ক্যালোরি সমৃদ্ধ, এতে দেহের জন্য উপকারী ফ্যাট যথেষ্ট রয়েছে, হার্টকে সুস্থ রাখে, ক্যান্সার ও কোলস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।বাংলাদেশে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে অ্যাভোকাডো চাষ। অন্যান্য ফলের তুলনায় এ ফলের মিষ্টতা কম হওয়ায় ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অতি উপযোগী। এ ফলের আকার অনেকটা নাশপাতির মতো।একেকটা ফলের ওজন সাধারনত ৩০০-৭০০ গ্রাম হয়।এর ভিতরের অংশ মাখনের মত মসৃণ, হালকা মিষ্টি স্বাদের।এ ফল কাঁচা-পাকা , সবজি, ভর্তা, সালাদ, শরবতসহ ভিন্নতরভাবে খাওয়ার সুবিধা আছে।

পুষ্টি ও ঔষধিগুণ:

অ্যাভোকাডো দেহকে সোডিয়াম, সুগার ও কোলস্টেরল মুক্ত রাখে। এ ফল অতি ক্যালোরি সমৃদ্ধ, এতে দেহের জন্য উপকারী ফ্যাট যথেষ্ট রয়েছে, হার্টকে সুস্থ রাখে, ক্যান্সার ও কোলস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। চর্বিতে গলে যায় এমন পুষ্টি উপাদন প্রচুর রয়েছে, যা দেহকে সুস্থ রাখতে বুস্টার হিসেবে কাজ করে। দেহের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ভিটামিনস ও মিনারেলস এ ফলে প্রচুর রয়েছে। বিশেষ করে ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, কপার ও ম্যাঙ্গানিজের উপস্থিতি এতে বেশি। প্রচুর ভিটামিন সি, বি-৬, রিভোফ্লাভিন ছাড়াও দেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ফাইবার সমৃদ্ধ।

জন্মগত ত্রুটি রোধ:

হবু মায়েদের জন্য অ্যাভোকাডো অনেক ভালো। অ্যাভোকাডোতে পর্যাপ্ত ফলিক এসিড থাকে যা জন্মগত ত্রুটি যেমন – স্পিনা বিফিডা, নিউরাল টিউব ডিফেক্ট ইত্যাদি প্রতিরোধ করে।

দাঁতের জন্য উপকারি:

অ্যান্টি- ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট দাঁতের ব্যাকটেরিয়া দূর করে এবং মুখের বাজে গন্ধ প্রতিরোধ করে।

দৃষ্টিশক্তির জন্য:

অ্যাভোকাডোতে চোখের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় দুটি ফাইটোকেমিক্যাল লুটেইন ও জেনান্থিন থাকে। এই দুটি উপাদান চোখে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের কাজ করে যা চোখের ক্ষতি কমাতে পারে এবং বয়স জনিত চোখের সমস্যা ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার ঝুঁকি কমায়।

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ:

অ্যাভোকাডোর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্টকে বন্ধ করে এবং অ্যাভোকাডোর দ্রবণীয় ফাইবার রক্তের সুগার লেভেলকে সুস্থিত করে। অন্য ফলের তুলনায় অ্যাভোকাডোতে চিনি ও শর্করার পরিমাণ কম থাকে বলে রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

হজমে উপকারিতা:

অ্যাভোকাডো অন্ত্রের ফাংশনকে স্বাভাবিক রাখে এবং খাবার সহজেই হজম করাতে সহায়তা করে।


হার্টকে সুস্থ রাখে:

প্রতি আউন্স অ্যাভোকাডোতে ২৫ মিলিগ্রাম বিটা সাইটোস্টেরল থাকে। নিয়মিত বিটা সাইটোস্টেরল ও অন্য উদ্ভিজ স্টেরল গ্রহণ করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাস্থ্যকর পর্যায়ে থাকে।

ক্যান্সার:

মুখ, ত্বক ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় অ্যাভোকাডো। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদানের মিশ্র ক্রিয়ার জন্য এবং অ্যাভোকাডোর ফাইটোকেমিক্যাল ক্যান্সার কোষ উৎপন্ন হওয়া বন্ধ করে এবং মেরে ফেলে।

ওজন কমাতে সহায়তা করে:

 অ্যাভোকাডো এমন একটি ফল যা দেহে পুষ্টি সরবরাহ করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে।

অ্যাভোকাডো খাওয়ার নিয়ম:সাধারণত সালাদের সাথে মিশিয়ে খাওয়া হয় অ্যাভোকাডো। চুল নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত পান করতে পারেন অ্যাভোকাডো জুস।নিয়মিত অ্যাভাকাডো জুস খেলে উজ্জ্বল, কোমল ত্বক তো পাওয়া যাবেই, এটি শরীরের ভেতর থেকে সানস্ক্রিন হিসেবেও কাজ করবে।

অ্যাভোকাডো খাওয়ার নিয়ম:


(১)অ্যাভোকাডো  কাঁচা-পাকা উভয় অবস্থাতেই সালাদ হিসেবে খাওয়া যায়।

(২)অনেকেই  অ্যাভোকাডো রান্না করে খান। কিন্তু অ্যাভোকাডো রান্না করা মানে তার স্বাদটা নষ্ট করে ফেলা।শুধুই টুকরো করে কেটে সালাদের সাথে পরিবেশন করতে পারেন।তাপ দিতে চাইলে খুব হালকা করে একে গ্রিল করতে পারেন। একটু মুচমুচে খাবার খেতে চাইলে একে টেম্পুরা ব্যাটারে ডুবিয়ে ডিপ ফ্রাই করে নিতে পারেন খুবই কম সময়ের জন্য।

(৩)অ্যাভোকাডো  ভর্তা করে ও খাওয়া যায়

(৪)অ্যাভোকাডো শরবত বা জুস করে খাওয়া যায়।

অ্যাভোকাডো ত্বকে কিভাবে ব্যবহার করবেনঃ

অর্ধেকটা অ্যাভোকাডো, দুই টেবিল চামচ মধু ও ডিমের সাদা অংশ একসঙ্গে মিশিয়ে মুখ লাগান।২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।সপ্তাহে অন্তত দুইদিন এই প্যাক মুখ লাগান।এটি ত্বকের কালচে ভাব দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করে।

মেকআপ রিমুভার হিসেবে অ্যাভোকাডো খুবই কার্যকর।অ্যাভোকাডো কেটে নিয়ে তুলা দিয়ে এর তেল মুখে ভালো করে লাগান।এবার তুলা দিয়ে মুখ মুছে ফেলুন।দেখবেন, পুরো মেকআপ তুলার সঙ্গে উঠে আসবে।

অ্যাভোকাডো ফলের অপকারিতা:

অ্যাভোকাডো ফলে রয়েছে অত্যাধিক ফ্যাট।তাই অনেক বেশি পরিমাণে অ্যাভোকাডো খেলে ওজন বৃদ্ধির সমস্যা হতে পারে।

কিডনি সুস্থ রাখে যেসব খাবার - Foods that keep the kidneys healthy
যৌনক্ষমতা বৃদ্ধিতে রসুনের ভূমিকা
আতা ফলের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা
জিরার পানির উপকারিতা ও গুনাগুণ
নিশিন্দা গাছের ঔষধি গুন
কুমড়োর বিচির উপকারিতা
কালমেঘ পাতার উপকারিতা ও গুণাগুণ
জীবন নিয়ে উক্তি
বনঢেড়স বা লতাকস্তুরীর ঔষধি গুণ
কনসিলার ব্যবহারের নিয়ম - Rules for using concealer