
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হিসেব অনুযায়ী নোটবন্দির আগে বাজারে প্রায় ১৫.৪১ লক্ষ
কোটি টাকা মূল্যের ৫০০, ১০০০ টাকার নোট ছিল। সরকার অবশ্য সংসদে জানিয়েছিল,
বাতিল নোটের মূল্য ১৫.৪৪ লক্ষ কোটি টাকা। সেই হিসেবেও ফেরত না-আসা নোটের
পরিমাণ মাত্র ১৩ হাজার কোটি টাকা। কংগ্রেসের অবশ্য কটাক্ষ, নেপাল-ভুটানের
টাকা ধরলে দেখা যাবে, ১০০ শতাংশের বেশি টাকা ফেরত এসেছে।
বাইশ মাস আগে বাতিল হওয়া ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট গোনা শেষ করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানাল, বাতিল নোটের ৯৯.৩ শতাংশই ফিরে এসেছে তাদের ঘরে। যার মোট মূল্য প্রায় ১৫.৩১ লক্ষ কোটি টাকা। বাকি ১০,৭২০ কোটি টাকারও যে হদিশ নেই এমন নয়। তার বেশির ভাগটাই আছে নেপাল ও ভুটানে। সেখান থেকে বাতিল নোট ফেরত নেয়নি দিল্লি।
অথচ ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর রাত আটটায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নোটবন্দির কথা ঘোষণা করার পরে সরকার ও শাসক দল দাবি করেছিল, কালো টাকা ও জাল নোটের মোকাবিলায় এ নাকি মোক্ষম দাওয়াই। এ ছাড়া, নগদের ব্যবহার কমে দেশ এগিয়ে যাবে ডিজিটাল লেনদেনের পথে। বন্ধ হবে সন্ত্রাসে আর্থিক মদত।
বাইশ মাস পরে দেখা যাচ্ছে, বাজারে নগদ সেই আগের মতোই। ডিজিটাল লেনদেন তেমন বাড়েনি। আর প্রায় সব বাতিল নোটই ঘরে ফিরে বুঝিয়ে দিল, অন্তত এই অস্ত্রে কালো টাকা ও জাল নোট নিধন করা যায়নি। মাঝখান থেকে বড় ধাক্কা খেল অর্থনীতি। যার মাসুল গুনলেন আমজনতা। কমল আর্থিক বৃদ্ধির হার।
অথচ সরকারের ধারণা ছিল, কালো টাকার মালিকরা ভয়ে টাকা জমা করতেই আসবেন না। আর নোট জমার সময়ই সমস্ত জাল নোট ধরা পড়ে যাবে। এ দিন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, ‘‘কারা যেন বলেছিল, ৩ লক্ষ কোটি টাকার নোট ফেরত আসবে না!’’ আর টুইটারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, কালো টাকা কোথায় গেল? তবে কি কালো টাকার মালিকদের টাকা সাদা করিয়ে দিতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছিল?