জরায়ু টিউমার ও গর্ভধারণের জটিলতায় করণীয়-Uterine tumors and pregnancy complications
গর্ভধারণের ক্ষেত্রে নারীদের নানা রকম জটিলতা দেখা দেয়। তেমনি একটি জটিলতা হচ্ছে জরায়ু টিউমার। ফাইব্রয়েড টিউমার জরায়ুর একটি অতিপরিচিত টিউমার। বেশিরভাগ নারী এ সমস্যায় ভোগেন ও তাদের গর্ভধারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
এই টিউমার সাধারণত তিন ধরনের হয় থাকে। সাব সেরাস, ইন্ট্রা মুরাল এবং সাব মিউকাস। এর মধ্যে সাব মিউকাস টিউমারই অধিক জটিলতার কারণ হয়ে থাকে। গর্ভধারণের আগেই যদি এই টিউমার ধরা পড়ে, তবে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ফাইব্রয়েড টিউমারের লক্ষণ
এই টিউমার হলে আপনার শরীরে কিছু লক্ষণ অবশ্যই দেখা দেবে। লক্ষণগুলো হলো-
> মাসিকের সময় অধিক রক্তপাত ও ব্যথা হতে পারে।
> তাছাড়া এই টিউমার কোনো ধরনের লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও থাকতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অন্য কোনো সমস্যা নিয়ে আল্ট্রাসাউন্ড করতে গেলে এ সমস্যা ধরা পড়ে।
যেসব জটিলতা হতে পারে
জরায়ুতে টিউমার থাকাবস্থায় গর্ভধারণ করতে পারেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে এই টিউমারে মা ও শিশুর বিভিন্ন জটিলতা তৈরি করতে পারে। চলুন জেনে নেয়া যাক সেগুলো-
* গর্ভপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে বিশেষ করে টিউমারটি যদি সাব মিউকাস হয়। কারণ সাব মিউকাস টিউমার জরায়ুর ভিতরে অবস্থিত হওয়ায় ভ্রুণ এবং প্লাসেন্টার স্থাপনকে বাধাগ্রস্থ করে।
* প্রেগন্যান্সির কারণে এই টিউমারেরও কিছু পরিবর্তন হয় যা জটিলতা তৈরি করে। যেমন, জরায়ু বড় হবার সাথে সাথে টিউমারের আকার ও সাইজ পরিবর্তন হতে পারে। অনেক সময় টিউমারের মধ্যে রক্তক্ষরণ হয়ে অথবা পানি জমা হয়ে পেটে প্রচন্ড ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে।
* প্লাসেন্টা যদি টিউমারের উপর অবস্থিত হয় তবে অনেক সময় প্লাসেন্টা সেপারেশন হয়ে অ্যান্টি পারটাম হেমোরেজ (রক্তপাত) হতে পারে। এছাড়া বাচ্চার ওজন কম হওয়া, প্লাসেন্টা প্রিভিয়া (গর্ভফুল নিচের দিকে থাকা), সময়ের আগে ডেলিভারি হওয়া ইত্যাদি জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
* ফাইব্রয়েডের কারণে অনেক সময় নরমাল ডেলিভারির পথ বাধাগ্রস্থ হয় এবং সিজারের প্রয়োজন হতে পারে। তাছাড়াও ডেলিভারির সময় এবং এর পরবর্তীতে অধিক রক্তপাতের আশঙ্কা থাকে এবং সাবধানতা অবলম্বন করার দরকার হয়।
টিউমার অপসারণ
জরায়ুর বাইরের দিকের টিউমার ফেলে দেয়া গেলেও অন্যান্য টিউমার অপসারণ করা সম্ভব হয় না। কারণ এ সময় অধিক রক্তপাতের আশঙ্কা থাকে। ডেলিভারির পর অনেক টিউমার আকারে ছোট হয়ে যায় এবং পরে কোনো অপারেশন করার প্রয়োজন হয় না।
করণীয়
গর্ভাবস্থায় টিউমারের জটিলতা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।