ওভুলেশন কখন হয়? ওভুলেশনের সঠিক সময় জানার উপায় কি?
When is ovulation? What is the way to know the exact time of ovulation?
মা হওয়া একটি আনন্দের অনুভূতি। যদি একজন মহিলা গর্ভবতী হওয়ার কথা ভাবেন, তবে তাকে প্রথমে নিজের মাসিক চক্রের দিকে নজর দিতে হবে। কারণ ওভুলেশন হল গর্ভধারণ সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যার উত্তর। একজন মহিলার ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নিঃসরণকে ওভুলেশন বলে। ওভুলেশনের প্রক্রিয়া প্রতি মাসের একটা নির্দিষ্ট সময়ে হয়ে থাকে। ডাক্তার বিশাল মাকওয়ানা জানিয়েছেন যে, এই সময়ের মধ্যে মহিলার শরীর থেকে নির্গত ডিমগুলি পুরুষের বীর্যের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। আর তাই এই সময়ে সহবাস করলে সহজেই গর্ভধারণ করা সম্ভব। নারী যদি মা হতে না চান, তাহলে এই সময়ে সহবাস না করে গর্ভধারণ এড়িয়ে যাওয়া যায়।
ওভুলেশন (Ovulation) কী?
মাসের নির্দিষ্ট একটি সময়ে মহিলাদের ডিম্বাশয় থেকে একটি পরিণত এগ বা ডিম্বাণু বা ওভাম নির্গত হয়। একেই ওভুলেশন বলে। সাধারণত, একটি নির্দিষ্ট মাসিক চক্রের (Menstrual Period) ১২ থেকে ১৯ দিনের মধ্যে ওভুলেশন হয়ে থাকে। তবে যেহেতু সবার শরীর সমান হয় না তাই, এই সময়েরও এদিক ওদিক হতে পারে। ওভারি বা ডিম্বাশয় থেকে নির্গত ওভাম নারী শরীর মোটামুটি ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। এই সময়ের মধ্যে যদি ফ্যালোপিয়ান টিউবে উপস্থিত শুক্রাণু (Sperm) ওভামকে নিষিক্ত করে, তবেই ভ্রূণ তৈরি হয়।
গর্ভধারণ করলে চাইলে এই সময়ে নিয়মিত সহবাস করা জরুরি। এখানে উল্লেখযোগ্য, ডিম্বাণুর আয়ু ২৪ ঘণ্টা হলেও শুক্রাণু মহিলার দেহে ৩ থেকে ৬ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। তাই ওভাম নিঃসরণের ৪-৫ দিন আগেও প্রোটেকশন ছাড়া শারীরিক ভাবে মিলিত হলে কনসিভ করার সম্ভাবনা বাড়ে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি ওভাম নিষিক্ত না হলে সেটি নষ্ট হয়ে যায়।
ওভুলেশনের লক্ষণ (Symptoms Of Ovulation)
নানা ভাবে মহিলারা নিজেদের ওভুলেশনের লক্ষণগুলি বুঝতে পারবেন। এই সময়ে হওয়া হোয়াইট ডিসচার্জ বরাবরের থেকে আলাদা হয়।
১. শরীরে তাপমাত্রায় পরিবর্তন
ওভুলেশনের সময় শরীরের তাপমাত্রা পরিবর্তন হতে পারে। বল বেসাল বডি টেম্পারেচার বা বিবিটি হলো ২৪ ঘণ্টায় শরীরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এতে পরিবর্তন আসতে পারে ওভুলেশনের সময়ে। ডিম্বানু বের হওয়ার পর বিবিটি ০.৫ থেকে ১ ডিগ্রি ফারেনহাইট মতো বাড়ে।
২. সাদা স্রাবের ধরণে পরিবর্তন
সাদা স্রাব হওয়া সাধারণ। তবে এর রঙ কিংবা ধরনের দিকে খেয়াল রাখলে ওভুলেশনের সময়টা বুঝতে সুবিধা হবে। ওভুলেশনের কিছুদিন আগে বা পরে দুধের মতো স্রাবের বদলে স্বচ্ছ তরল নির্গত হতে থাকে। অনেক সময় ডিমের সাদা অংশের মতোও হতে পারে।
৩. জরায়ুর মুখে পরিবর্তন
জরায়ুর মুখে পরীক্ষা করেও ওভুলেশনের সময় সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। এসময় জরায়ুর মুখ নরম ও ভিজে ভিজে হয়ে থাকে। আবার এটি সামান্য একটু উপরের দিকেও যায়। তাই এদিকে খেয়াল রাখতে পারেন। তবে এটি বোঝা খুব বেশি সহজ নয়।
৪. ব্যথা
ওভুলেশনের সময় অনেকে ব্যথা অনুভব করতে পারেন। এসময় পিঠে বা পেটে ব্যথা হতে পারে। অনেক সময় স্তনেও ভারীভাব থাকতে পারে। সেইসঙ্গে স্তনে হালকা একটা ব্যথাও অনুভূত হতে পারে। তবে সবার ক্ষেত্রেই একইরকম লক্ষণ দেখা দেয় না। বিভিন্ন নারীর ক্ষেত্রে ওভুলেশনের লক্ষণে ভিন্নতা দেখা যেতে পারে।