বমি বমি ভাব হওয়ার কারণ ও প্রতিরোধে করণীয় - Causes and prevention of nausea
Causes and prevention of nausea

বমি বমি ভাব হওয়ার কারণ ও প্রতিরোধে করণীয় - Causes and prevention of nausea

অনেকে বমিকে ব্যাধি হিসেবে ধারণা করেন। আসলে বমি কোনো রোগ নয়। শরীরের নানা রোগ-ব্যাধি বা অবস্থার কারণে বমি হতে পারে। সাধারণত বমি কোনো উদ্বেগজনক শারীরিক সমস্যা নয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে ভমিটিং যদি অব্যাহতভাবে হতে থাকে এবং প্রাথমিক চিকিত্সায় যদি বমি বন্ধ না হয় তাহলে অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শে বমির কারণ খুঁজে বের করতে হবে। 

বমি বমি ভাব হওয়ার কারণ

বমি বমি ভাবের সাথে অন্য কোনো উপসর্গ থাকলে সেগুলো দেখে বমি বমি ভাবের কারণ সম্পর্কে ধারণা করা যায়। তবে কখনো কখনো অন্য কোনো উপসর্গ ছাড়াই, শুধু বমি বমি ভাব থাকতে পারে।

বমি বমি ভাবের সাথে থাকতে পারে এমন অন্যান্য কিছু লক্ষণ এবং এদের সম্ভাব্য কারণ এখানে তুলে ধরা হলো—

১.ডায়রিয়া বা বমি - ফুড পয়জনিং

২.মাথাব্যথা ও জ্বর - ফ্লু বা এ জাতীয় কোনো ইনফেকশন

৩.খাওয়ার পর বুক জ্বালা - পোড়া করা অথবা পেট ফাঁপার সমস্যা দেখা দেওয়া-এসিড রিফ্লাক্স (পাকস্থলীর এসিড খাদ্যনালী দিয়ে উপরে উঠা আসা), যাকে ‘গ্যাসের সমস্যা’ বলা হয়

৪.মাথাব্যথা এবং তীব্র আলো ও শব্দের  প্রতি সংবেদনশীলতা - মাইগ্রেন

৫.মাথা ঘুরানো - লেবিরিন্থাইটিস বা ভার্টিগো

অন্যান্য যেসব কারণে বমি বমি ভাব হয়

* গর্ভাবস্থায় মর্নিং সিকনেস হলে বমিবমি ভাব দেখা দেয়

* মোশন সিকনেস এর কারণে চলন্ত গাড়িতে থাকা অবস্থায় বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে

* দুশ্চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় অনেক সময় এমনটা হতে পারে

* মদ্যপান করলে বমি বমি ভাব হতে পারে

* অনেকের ঔষধ সেবনের পরে বমি ভাব দেখা দেয়

* সম্প্রতি সার্জারি হয়েছে এমন রোগীদের অনেক সময় বমি বমি ভাব বোধ হতে পারে

বমি দ্রুত বন্ধ করার ঘরোয়া উপায়

বমি হওয়া যেমন কষ্টকর; ঠিক তেমনই ঘন ঘন বমি হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বমির ওষুধ খেলে দ্রত তা বন্ধ হয়।

এ ছাড়াও ঘরোয়া উপায়েই বমি বন্ধ করা যায়। তাৎক্ষণিক বমি থেকে স্বস্তি পেতে ঘরোয়া কিছু উপায় অনুসরণ করতে পারেন-

সবুজ এলাচ

সবুজ এলাচ বমি বমি ভাবের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে। সবুজ এলাচ বমি সারাতে কার্যকর। যদি আপনার বমি বমি ভাব হয়; তখন সামান্য মধু দিয়ে এলাচ চিবিয়ে খেতে পারেন। এ ছাড়াও সামান্য মধু, ১/২ চা চামচ এলাচ গুঁড়ো ভাল করে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে বমি দ্রুত বন্ধ হবে।

মৌরি বীজ

মৌরি বীজ সাধারণত মাউথ ফ্রেশনার হিসেবে খাওয়া হয়। মৌরি বীজের হাজারো উপকারিতা আছে। জানেন কি, এটি বমি প্রতিরোধ করতে পারে। মৌরি বীজ বা সানফ আপনার মুখের স্বাদ রিফ্রেশ করে এবং বমি বন্ধ করতে সাহায্য করে। আপনি বীজ চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা এক কাপ মৌরি বীজের চা পান করতে পারেন।

লবঙ্গ

১ চা চামচ লবঙ্গের গুঁড়া ১ কাপ পানিতে ৫ মিনিট সিদ্ধ করুন। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে আস্তে আস্তে এটি পান করুন। আপনার যদি এর স্বাদ কটু লাগে তবে এর সঙ্গে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এ ছাড়া ১-২ টি লবঙ্গ কিছুক্ষণ চিবিয়ে নিন। এটি সঙ্গে সঙ্গে বমি বমি ভাব দূর করে দেবে।

লেবু

খুব সহজ এবং সস্তা একটি উপায় হল লেবু। এক টুকরা লেবু মুখে নিয়ে কিছুক্ষণ চুষে নিন। এ ছাড়া এক গ্লাস পানিতে এক টুকরা লেবুর রস, এক চিমটি লবণ মিশিয়ে পান করুন। এটি দ্রুত বমি বমি ভাব দূর করে দিবে। এক টুকরা লেবু নাকের কাছে নিয়ে কিছুক্ষণ শুঁকে দেখতে পারেন, এটিও শারীরিক অস্বস্তি অনেকটাই কমিয়ে দেবে।

জিরা

জিরা আরেকটি উপাদান যা আপনার বমি বমি ভাব নিমিষে দূর করে দিবে। কিছু পরিমাণ জিরা গুঁড়া করে নিন, তারপর সেটি খেয়ে ফেলুন। মুহূর্তের মধ্যে বমি বমি ভাব দূর হয়ে যাবে।

লেবু বা লবঙ্গ

মোসন সিকনেসের সমস্যা থাকলে সঙ্গে সব সময় লেবু বা লবঙ্গ সঙ্গে রাখুন। রাস্তায় বমি বমি লাগলে সঙ্গে সঙ্গে মুখে লেবু বা লবঙ্গ দিয়ে দিন। এটি দ্রুত বমি বমি ভাব দূর করে দেবে।

আদা

দ্রুত বমি বমি ভাব দূর করতে আদা খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। এক টুকরা আদা চায়ের সঙ্গে খান, এটি দ্রুত বমি বমি ভাব দূর করে দেবে। আদা হজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। ১ টেবিল চামচ আদার রস, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস এবং সামান্য বেকিং সোডা মিশিয়ে খেয়ে দেখুন। এটিও বমি বমি ভাব দূর করতে সাহায্য করবে।

কী করবেন

১.বমি হলে শরীর থেকে প্রচুর লবণ ও পানি বেরিয়ে যায়। তাই বমি হলেই স্যালাইন পানি পান করতে হবে। তা না হলে রোগী খুব দুর্বল হয়ে পড়বেন। পানিশূন্যতা দেখা দেবে। অনেকের ধারণা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনি রোগীদের স্যালাইন খাওয়া যাবে না, ধারণাটি ঠিক নয়। পানি ও লবণের অভাব যে করেই হোক পূরণ করতে হবে।

২.একবারে স্যালাইন পানি পান না করতে পারলে একটু পরপর অল্প অল্প করে নিতে হবে। স্যালাইন যাতে বমির মাধ্যমে বের না হয়ে যায়, সে জন্য দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বমির ওষুধ আগে খেয়ে নিন।

৩.সাধারণ সমস্যায় এক-দুবার বমি হওয়ার পর স্যালাইন খেলেই খানিকক্ষণ পর রোগী সুস্থ বোধ করেন। সাধারণ বমির ওষুধে সেরেও যায়। তবে বারবার বমি হতে থাকলে হাসপাতালে নেওয়া দরকার। খাবার স্যালাইনও সে ক্ষেত্রে বের হয়ে আসতে থাকে। তাই প্রয়োজনে রোগীকে শিরাপথে স্যালাইন দিতে হবে।

৪.হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বমি কমানোর ইনজেকশন দিয়ে কিছুটা উপশম করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ইতিহাস জেনে ও প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বমির কারণ অনুসন্ধান করে তারপর সেটার চিকিৎসা শুরু হবে। কোনো কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়ও বমি হতে পারে। তাই সাম্প্রতিক সময়ে কোনো ওষুধ সেবন করে থাকলে সেটি চিকিৎসককে জানাতে ভুলবেন না।

গর্ভাবস্থায় সাদা স্রাবের কারণ - Causes of white discharge during pregnancy
পিল খাওয়ার নিয়ম
ইবনে সিনা হাসপাতালের ঠিকানা ও ফোন নম্বর
বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ঢাকা ঠিকানা
হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ রোগের চিকিৎসা - Treatment of hand foot and mouth disease
অতিরিক্ত ঘাম কমানোর হোমিওপ্যাথি ঔষধ - Homeopathy medicine to reduce excessive sweating
নারীদের হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ - Heart attack symptoms in women
যৌন স্বাস্থ্য ভালো রাখবেন যেভাবে
জিও ভিটা সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা- home treatment for dysentery