চুলকানি দূর করার সহজ উপায়
লার্জি ছাড়াও হঠাৎ করে হাত-পায়ে চুলকানি শুরু হয়ে যেতে পারে। এটি খুব সাধারণ একটি ব্যাপার আর কিন্তু এই ব্যপারটি বিরক্তি পর্যায়ে চলে যায় যখন চুলকানি না থামে। আর বার বার চুলকাতে থাকে। সংবেদনশালী ত্বক যাদের তারা চুলকাতে চুলকাতে লাল করে ফেলে। এই চুলকানির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অনেকেই বিভিন্ন মলম ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু মলম ব্যবহারে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। তার চেয়ে যদি ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের চুলকানি দূর করা যায়, তা যেমন নিরাপদ তেমনি অনেক বেশি কার্যকর। জেনে নিন ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের চুলকানি দূর করার উপায়।
অ্যালোভেরার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। ত্বকের সব ধরনের সমস্যাই সমাধান করে অ্যালোভেরা। অ্যালোভেরায় থাকা অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি গুণ ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ ও প্রদাহ সারায়। তাই চুলকানির স্থানে অ্যালোভেরা ব্যবহার করলে মুহুর্তেই মিলবে স্বস্তি।
২.তুলসি
চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে আপনি তুলসি ব্যবহার করতে পারেন। কয়েকটি তুলসি পাতা পিষে নারকেল তেলে মিশিয়ে ত্বকে মালিশ করুন, এর ফলে আপনি চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এই পদ্ধতিটি শরীর থেকে ফাঙ্গাল অপসারণে সহায়তা করতে পারে।
৩.লেবুর রস
লেবুর রসেও আছে প্রদাহবিরোধী উপাদান। তাই চুলকানির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার করতে পারে লেবুর রস। তবে লেবুর রস সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করবেন না, সামান্য পানি মিশিয়ে নিতে পারেন।
৪.ওটমিল
চুলকানি দূর করতে আপনার গোসলের পানিতে ওটমিল মেশাতে পারেন। চুলকানি থেকে স্বস্তি পেতে গোসলের পানিতে কলোইডাল ওটস মিশিয়ে গোসল করে নিন। কলোইডাল ওটমিলস মিশ্রিত পানিতে গোসল করলে প্রদাহ কমে ও ত্বকের ওপর স্বস্তিদায়ক আবরণ পড়ে। যে পানিতে ওটমিল মেশাবেন তা কুসুম গরম হলে ভালো হয়।
৫.নারকেল তেল
নারকেল তেল ত্বকে ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ পণ্য। যে কোন প্রকার চুলকানি, পোকার কামড় বা অন্য কোন কারণে ত্বকে চুলকানি হলে যেখানে চুলকাবে সেখানে নারকেল তেল দিয়ে দিন। যদি সম্পূর্ণ শরীরে চুলকানি হয় তবে পুরো শরীরে নারকেল তেল মাখতে পারেন। কুসুম গরম পানিতে নারকেল তেল মিশিয়ে গোসলও করে ফেলতে পারেন।
৬.বরফ
চুলকানি সারাতে বরফ দারুণ কার্যকরী এক পদার্থ। এটি শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ কমিয়ে দিতে পারে। তাই সেই জায়গায় বরফ ঘষে নিন। বরফ ঘষে নিতে পারলেই আপনি সমস্যার সমাধান করে নিতে পারবেন।
চন্দন শরীর থেকে চুলকানির সমস্যা দূর করে এবং এটি ত্বকের জন্যও অত্যন্ত উপকারি। চুলকানির জায়গায় চন্দনের পেস্ট লাগাতে পারেন।
৮.আপেল সিডার ভিনেগার
আপেল সাইডার ভিনেগার ত্বক থেকে চুলকানি দূর করতেও কার্যকর বলে বিবেচিত হয়েছে। স্নানের জলে ২ থেকে ৩ কাপ আপেল সিডার ভিনেগার যোগ করুন এবং এটিতে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য বসুন। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে স্নান করার সময় ভিনেগার জল দিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করুন এবং ত্বকের চুলকানি দূর করুন।
৯.ভিটামিন ডি
শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন দিনগুলোতে চুলকানির প্রবণতা বেড়ে যায়। এটা কিন্তু কালতালীয় ব্যাপার নয়। শরীরে ভিটামিন ডি কতটুকু রয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে ত্বকের চুলকানি বাড়তে পারে অথবা কমতে পারে। ডা. তারিন বলেন, ‘আপনার শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি নিশ্চিত করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ভিটামিন ডি কমে গেলে (সাধারণত শীতকালে) ত্বকের সমস্যা ও চুলকানি অগ্নিমূর্তি ধারণ করতে পারে।’
১০.বেকিং সোডা
বেকিং সোডা মিশিয়ে গোসল করলে তা ত্বকের জন্য আরামদায়ক হতে পারে। মিনেসোটার রোজল্যান্ডে অবস্থিত তারিন ডার্মাটোলজির ত্বক বিশেষজ্ঞ মোহিবা তারিন বলেন, ‘ত্বকের চুলকানি কমাতে একটি কার্যকর উপায় হলো পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে গোসল করা। বেকিং সোডা ত্বকের পৃষ্ঠের অ্যাসিডকে নিষ্ক্রিয় করে প্রদাহ কমায়, পিএইচে ভারসাম্য আনে ও ত্বকের ওপরে বিদ্যমান ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে।’
১১.নিম
নিম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি, তা আমরা জানি। চুলকানি থেকে বাঁচতেও আপনি নিম ব্যবহার করতে পারেন। নিম পাতা পিষে আক্রান্ত স্থানে লাগান। চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এটি একটি দুর্দান্ত প্রাকৃতিক উপায়।
১২.পর্যাপ্ত পানি পান
চুলকানির চিকিৎসায় কেবলমাত্র শরীরের বাইরের দিক বা ত্বক নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হবেন তা নয়, আপনার শরীরের ভেতরের দিকটাও বিবেচনায় রাখতে হবে। ডা. অ্যাডিগান বলেন, ‘প্রচুর পানি পান করে হাইড্রেটেড থেকে আপনার ত্বককেও হাইড্রেটেড বা আর্দ্র রাখতে পারেন।’ ত্বক আর্দ্র থাকলে চুলকানির প্রবণতা কমে যাবে।