পিরিয়ডের সময় প্যাড ব্যবহারের নিয়ম

পিরিয়ডের সময় প্যাড ব্যবহারের নিয়ম

স্বাস্থ সচেতনতার তথ্য জানা অতি আধুনিক মেয়েরা শুধুমাত্র সঠিক নিয়ম বা পদ্ধতি জানে না বলে ‘মেয়েদের স্বাস্থ্য সমস্যা’য় ভুগতে হচ্ছে। মেয়েদের মাসিক ঋতুস্রাবে সাধারণত স্যানিটারি ন্যাপকিন বা কাপড়ের ন্যাপকিন ব্যবহার করে থাকে। আগে মেয়েদের ঋতুচক্র বা মাসিকের সময় কাপড়ের ন্যাপকিন বা তুলার প্যাড করলেও বর্তমান সময়ে চটকদার বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পরে শুকনো স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যাবহারে ঝুঁকেছে। লোভনীয় বিজ্ঞাপনে প্রভাবিত হয়ে মেয়েদের মাসিকের প্যাড বা ন্যাপকিন ২৪ ঘণ্টা বা টতাও বেশি সময়ও পরে থাকে। ফলে আক্রান্ত হয় অনাকাঙ্খিত মেয়েলি সমস্যা বা রোগে আক্রান্ত হয়। এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোন ধারনা না থাকায় নিজের অজান্তেই তারা নিজের ক্ষতি করে চলে। মেয়েদের মাসিকের সময় করণীয় ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কিছু তথ্য প্রদান করা হল।

স্যানিটারি ন্যাপকিন কি?

Sanitary Napkin বা স্যানিটারি ন্যাপকিন হচ্ছে মাসিক বা ঋতুমতী অবস্থায় মেয়েদের ব্যবহৃত বিশোষক বস্তু। এছাড়াও গর্ভপাত কিংবা অস্ত্রপাচারের কারনে মেয়েদের বিশেষ অঙ্গ থেকে রক্তস্রাব থামানোর কিংবা শোষণের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। এগুলো প্যাড, বা রাজঃপট নামেও পরিচিত।

স্যানিটারি ন্যাপকিনের দাম

বাংলাদেশের বাজারে একটি প্যাডের গড় মুল্য ১২ টাকা (প্রায়)। ৮ পিস প্যাডের একটি প্যাকেটের গড় মুল্য ৯৫ টাকা। তবে ব্র্যান্ডভেদে প্যাডের দামের পার্থক্য রয়েছে। ৮ পিসের স্যানিটারি প্যাড বা ন্যাপকিনগুলোর এক একটি প্যাকেটের দাম নিচে দেওয়া হলোঃ

সেনোরা (৮ পিস) ন্যাপকিনের দাম ৳১২০।

ফ্রিডম ন্যাপকিনের দাম ৳১১০।

জয়া স্যানিটারি ন্যাপকিনের (১৬ টি) দাম ৳২০০।

মোনালিসা ১০ পিসের প্যাকেট  এর দাম ৳১১০

হুইসপার (১৫ পিস) ৳২৫০,

ভেনাস ৫ পিস প্যাকেটের দাম ৳৫৫

সফটি ১৫ পিসের প্যাকেট প্যাডের মুল্য ৳২৬৫।

কোন স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড সবচেয়ে ভালো

বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে অনেক দেশী বিদেশি ব্র্যান্ডের পাশাপাশি ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের তৈরি করা প্যাডও কিনতে পাওয়া যায়। প্যাড তৈরিতে বেশি আরি যন্ত্রপাতির প্রয়োজন না হওয়ায় অনেকেই বর্তমানে এটি তৈরি করে থাকেন।

ভালো মানের স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাডের জন্য স্কয়ার, এসিআই, বসুন্ধরা, এসএমসি বেশ এগিয়ে রয়েছে। পাশাপাশি অনেক ছোট ছোট কোম্পানিও Sanitary প্যাড উৎপাদনের বেশ সফলতা লাভ করছে। বাংলাদশের ভালো মানের স্যানিটারি প্যাড বা ন্যাপকিন ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে জয়া, সেনোরা, ফ্রিডম, মোনালিসা, হুইসপার, ভেনাস, সফটি উল্লেখযোগ্য।

প্যাডের প্রকারভেদ

আমাদের দেশে যে প্যাডগুলো বাজারে পাওয়া যায়, গঠন প্রণালীর দিক থেকে সেগুলোকে প্রধানত ৩ ভাগে ভাগ করা যায়।

স্যানিটারি জেল-ফাইবার প্যাড, তুলা-গজ কাপড়ের প্যাড এবং কাপড়ের প্যাড।

স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি

স্যানিটারি ন্যাপকিন

যেকোন স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড কোনভাবেই তিন বা চার ঘণ্টার বেশি পরা উচিৎ নয়। মেয়েদের মাসিক ঋতুস্রাব শুরুর প্রথম ২/৩ দিন অতিরিক্ত রক্তস্রাব হয়। এসময় অনেকে ছয় বা সাত ঘণ্টা পর পর প্যাড পরিবর্তন করে। কিন্তু চতুর্থ বা পঞ্চম দিন থেকে স্রাব কমে আসায় একই ন্যাপকিন ২৪ ঘণ্টা কিংবা তারও বেশি সময় ধরে অনেকে পরে থাকে। এইকারনে তাদের যে সমস্যা হতে পারে তা হলঃ যোনিপথে চুলকানি, প্রদাহ, অ্যালার্জি।

কাপড়ের ন্যাপকিন

অনেকে একই কাপড় বারবার ধুয়ে ব্যাবহার করে। সেক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কাপড়ের ন্যাপকিন অবশ্যই একবার ব্যাবহারের পর গরম জলে সিদ্ধ করে ধুয়ে সরাসরি সূর্যের আলোতে শুকাতে হবে। সূর্যের আলো এখানে বেশ ভাল জীবানুনাশক হিসাবে কাজ করে। ঘরের কোনায় শুকাতে দিলে কোন লাভ নেই

পিরিয়ডের সময় হাইজিন মেনটেইন করার উপায়

১.রক্তপাত কম হোক বা বেশী, একটি স্যানিটারি ন্যাপকিন কখনোই দীর্ঘ সময় ব্যবহার করবেন না। ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পর পর বদলে ফেলুন। যদি রক্তপাত বেশী হয়, তাহলে প্যাড নষ্ট হওয়া মাত্রই বদলে ফেলুন। জমে থাকা রক্তে নানান রকম জীবাণু সংক্রমণ করে আপনি আক্রান্ত হবেন যৌনাঙ্গের নানান রকম অসুখে ও ফাঙ্গাল ইনফেকশনে।

২.প্রত্যেকবার স্যানিটারি ন্যাপকিন বদলের সময় নিজেকে ভালোভাবে পরিছন্ন করে নিন। না, কেবল পানি দিয়ে নন। উষ্ণ পানির সাথে জীবাণুনাশক সাবান বা বডি ওয়াশ দিয়ে নিজেকে ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। তারপর স্থানটি জীবানুনাশক কোন লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ও মুছে নিয়ে তবেই স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করুন।

৩. প্রত্যেকবার স্যানিটারি ন্যাপকিন পরিবর্তনের সময় পরনের প্যানটিও বদলে ফেলবেন। এটা জরুরী। নাহলে এত কষ্ট করে পরিষ্কার হবার কোন মানে নেই।

৪.চেষ্টা করবেন অধিক শোষণ ক্ষমতা সম্পন্ন প্যাড ব্যবহার করতে। এউ পণ্য গুলোতে ব্যবহার করা হয় সিনথেটিক উপাদান এবং শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য ব্যবহার করা হয় ডায়অক্সিন, রেয়নের মত ক্ষতিকর রাসায়নিক। যত বেশী শোষণ ক্ষমতা সম্পন্ন, এসব উপাদানের পরিমাণ ততই বেশী। আর এই সব উপাদান দায়ী ওভারিয়ান ক্যান্সার হতে শুরু করে সন্তান না হওয়া পর্যন্ত হরেক রকম ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য।

৫.কৃত্রিম সুগন্ধীউক্ত প্যাড দেখে আকৃষ্ট হয়ে কিনে ফেলবেন না। চটকদা বিজ্ঞাপনেও ভুলবেন না। এই উপাদানগুলো আপনার গোপন অঙ্গে কালো দাগ ও এলারজিক রিঅ্যাকশনের জন্য দায়ী।

৬.প্যাড ব্যবহারের ক্ষেত্রে অধিক শোষণ ক্ষমতার দিকে না গিয়ে নরম তুলো বা সুতি কাপড়ের তৈরি অরগানিক প্যাড কিনুন। এখন আমাদের দেশেও এগুলো কিনতে পাওয়া যায়। বিজ্ঞাপনে একটি পণ্যকে ভালো বললেই সেটা ভালো হয়ে যায় না।

৭.ব্লিডিং-এর পরিমাণ কম থাকলে এবং আপনি যখন বাড়িতে আছে, তখন চেষ্টা করুন প্যাড ছাড়াই থাকতে। ২৪ ঘণ্টা এক টানা প্যাড পরিধান থেকে গোপন অঙ্গে দুর্গন্ধ তো হবেই, সাথে ব্যাকটেরিয়াল ও ফাঙ্গাল ইনফেকশনও হবে।

প্রস্রাবের রাস্তায় চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় - Home Remedies for Vaginal Itching
গর্ভাবস্থায় প্রসাবের রাস্তায় চুলকানির কারণ - Causes of urinary tract itching during pregnancy
গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাদ্য-Nutritious food during pregnancy
ইবনে সিনা হাসপাতালের ঠিকানা ও ফোন নম্বর
জরায়ু নিচে নেমে যাওয়ার কারন চিকিৎসা ও প্রতিকার
পিল খেতে ভুলে গেলে কি করবেন
আমলকির সিরাপের উপকারিতা
স্তন সুন্দর ও সুডৌল করার টিপস - Tips to make breasts beautiful and shapely
শীতকালে শিশুর যেসব রোগ বাড়ে - Children's diseases that increase in winter
গর্ভাবস্থায় মাথা ঘোরানো প্রতিরোধে করণীয় - Things to do to prevent dizziness during pregnancy