মেয়েদের সাদা স্রাব বন্ধ করার উপায়
মেয়েদের যোনিপথ বা মাসিকের রাস্তা দিয়ে স্রাব যাওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা। বেশিরভাগ মেয়ের ক্ষেত্রেই মাসিক শুরু হওয়ার ১–২ বছর আগে থেকে সাদা স্রাব যাওয়া শুরু হয়। এটি সাধারণত নির্দিষ্ট বয়সের পর মাসিক চিরতরে বন্ধ বা মেনোপজ হওয়ার আগ পর্যন্ত চলতে থাকে।
স্রাবের স্বাভাবিক পরিমাণ, রঙ ও গন্ধে পরিবর্তন আসলে সেটি শঙ্কার কারণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুত সঠিক চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।
মেয়েদের জন্য সাদাস্রাব খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার। কিন্তু অতিরিক্ত এবং দুর্গন্ধ যুক্ত সাদাস্রাব খুব বিব্রতকর এবং জরায়ূর মুখে ইনফেকশন হওয়ার অন্যতম কারন। চিকিৎসা বিজ্ঞানে অতিরিক্ত এবং দুর্গন্ধ যুক্ত সাদাস্রাবকে লিউকরিয়া বলে।
সাদা স্রাব কী
লিউকোরিয়া বা সাদা স্রাব হচ্ছে– নারীদের একটি বিশেষ সমস্যা। অধিকাংশ স্রাব জীবনশৈলী ও শরীরবৃত্তীয় সংক্রান্ত, যার কোনো চিকিৎসা প্রয়োজন হয় না। তবে প্রচুর পরিমাণে রক্তে দাগ, দুর্গন্ধযুক্ত, স্বাভাবিক রঙের না হলে গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে।
সাধারণত স্বাভাবিক স্রাব পাতলা ও সামান্য চটচটে হয়। এটি অনেকটা সর্দির মতো। সাধারণত যোনি সাদা স্রাবের পরিমাণ ডিম্বস্ফূটন এবং যখন মানসিক চাপ বৃদ্ধি, মাসিক চক্রে তারতম্য হয়।
সাদা স্রাবের সমস্যা কেন হয়
১. মনের ভালোমন্দের প্রভাব অবশ্যই শরীরের ওপর পড়ে। তাই মানসিক চাপ হতে পারে সাদা স্রাবের অন্যতম কারণ।
২. পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও পুষ্টির অভাবে হতে পারে সাদা স্রাবের সমস্যা। তাই বিশ্রাম নেয়ার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ডিম, দুধ, মাছ, মাংস, সবুজ সবজি ও ফলমূল খেতে হবে।
৩. কৃমির সংক্রমণ হলে আপনি যা-ই খান, তার একটি বড় অংশ কৃমির পেটে চলে যাবে। কৃমির সমস্যা থেকে হতে পারে সাদা স্রাব।
৪. কাপড় অপরিচ্ছন্নতা থাকলে ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে রেখে ব্যবহার করলে সাদা স্রাবের সমস্যা হতে পারে। পরনের কাপড় রোদে শুকিয়ে ব্যবহার করা ভালো।
৫. জন্ম বিরতিকরণ পিল খাওয়ার কারণেও সাদা স্রাব হতে পারে। যদি পিল খেতেই হয়, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
সাদাস্রাব-এর কারণ ও লক্ষণসমূহ
১. জরায়ূরতে ব্যাকটেরিয়া জন্মালে। জরায়ূ সব সময় ভেজা থাকে তাই তাড়াতাড়ি ব্যাকটেরিয়া বাসা বাধতে পারে।
২. ছোঁয়াচে যৌন রোগ।
৩. ইস্ট এর সংক্রামন ঘটলে।
৪. অতিরিক্ত সাদা স্রাব-এর কারণে কোমরে ব্যথা করে।
৫. গন্ধ যুক্ত সাদাস্রাব নিঃসরণ।
৬. তলপেট ভারি হয়ে থাকা।
৭. শরীর দুর্বল লাগা।
৮. চোখের নিচ গর্ত হয়ে যাওয়া, চোখের নিচ কালো হয়ে যাওয়া।
৯. বদ হজম।
১০. জরায়ূতে চুলকানি অথবা জ্বালাপোড়া।
১১. আন্ডার গার্মেন্টস এ দাগ লেগে থাকা।
১২. মুখের মলিনতা নষ্ট হয়ে যাওয়া ও
১৩. সহবাসের সময় যৌনিতে জ্বালা করা।
সাদা স্রাব প্রতিরোধে করনীয়
১. কখনও খালি পেটে থাকা যাবে না।
২. খুব বেশি জরায়ূ চুলকালে কুসুম গরম পানিতে লবন দিয়ে, জরায়ূরর মুখ ভালো করে ধুতে হবে।
৩. জরায়ূরর মুখ সব সময় পরিষ্কার এবং শুকনো রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে জরায়ূর মুখ ভেজা থাকে বলেই বেশি ইনফেকশন হয়।
৪. স্যানিটারি ন্যাপকিন ৫ ঘণ্টা অন্তর বদলাতে হবে।
চিকিৎসা
সাদাস্রাব খুব বেশি আকার ধারন করলে চিকিৎকের শরণাপন্ন হতে হবে। জরায়ূর মুখ পরিষ্কার এবং শুকনো রাখলে ইনফেকশন হওয়ার হার অনেক কমে যায়। হোমিওপ্যাথিতে এ রোগের যথাযথ চিকিৎসা রয়েছে। অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ।