সঠিকভাবে ব্লাড প্রেসার মাপার নিয়ম
blood pressure

সঠিকভাবে ব্লাড প্রেসার মাপার নিয়ম

যারা দীর্ঘদিন উচ্চ রক্তচাপ বা হাই-প্রেসারে ভুগছেন, তাদের নিয়মিত রক্তচাপ মাপা জরুরি। নানা কারণে রক্তচাপ বাড়তে পারে। কিন্তু রক্তচাপ না বাড়লেও অনেক সময়ে যন্ত্রে মাপ ভুল আসে। এর অন্যতম কারণ মাপার সময় ঠিক জায়গায় হাত রাখা।

উচ্চ রক্তচাপ কী

হৃৎপিণ্ডের ধমনীতে রক্ত প্রবাহের চাপ অনেক বেশি থাকলে সেটিকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেশার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ ১২০/৮০ মিলিমিটার পারদের নিচে থাকে। কারও রক্তচাপ ১৪০/৯০ মিলিমিটার পারদ বা তার বেশি হলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলে বিবেচনা করা যায়। যদিও বয়স নির্বিশেষে রক্তচাপ খানিকটা বেশি বা কম হতে পারে।

রক্তচাপ পরিমাপের যন্ত্রের নাম

রক্তচাপ নির্ণয় করার যন্ত্রকে ইংরেজিতে বলা হয় স্ফিগমোম্যানোমিটার (sphygmomanometer)। বাজারে ডিজিটাল ও অ্যানালগ দুই ধরনের যন্ত্র পাওয়া যায়। এছাড়া একটি স্টেথেস্কোপও লাগবে। বাজারে ওমরন (omron), এএলপিকে2 (ALPK2) ইত্যাদি অনেক ডিজিটাল ব্লাড প্রেশারের মেশিন পাওয়া যায়। কিন্তু অনেক সময় ডিজিটাল মেশিনে ভুল রিডিং আসে। ডিজিটাল মেশিন ব্যবহার করলে ভালো মানের মেশিন ব্যবহার করবেন।

ব্লাড প্রেশার মাপার সঠিক নিয়ম

১) রোগী চেয়ারে পেছনে হেলান দিয়ে বসে, দুই হাত টেবিলের উপর থাকবে। রোগীর হাত এমনভাবে রাখতে হবে যেন হার্টের সমতলে থাকতে হবে। হাফ হাতা অথবা ঢিলা জামা পরা ভালো। জামার হাতা ভাজ করে উঠিয়ে রাখার সময় যেন টাইট হয়ে না যায়। রক্তচাপ মাপার কাপ এবার কনুই থেকে ২.৫ সে.মি উপরে বাঁধুন। খুব ঢিলা অথবা টাইট করে বাঁধা যাবে না। স্থূল ব্যক্তি ও বাচ্চাদের কাফের সাইজ ভিন্ন হয়।

২) কনুইয়ের উপরে হাত দিয়ে ব্রাকিয়াল ধমনির অবস্থান নির্ণয় করে স্টেথোস্কোপের ডায়াফ্রাম বসাতে হবে। ডায়াফ্রাম কাপড়ের উপরে রাখলে ডায়াফ্রাম ও কাপড়ের ঘর্ষণে শব্দ শুনতে অসুবিধা হয়।

৩) মিটার স্কেলটি হার্টের সমতলে রাখতে হবে।

৪) অনেক সময় দেখা যায় প্রেশার মাপতে গিয়ে প্রকৃত সিস্টোলিক প্রেশার এবং শব্দ শুনতে পাওয়ার মাঝে একটা গ্যাপ তৈরি হয়। এটাই অসকালটেটরি গ্যাপ। এটা এড়ানোর জন্য সব প্রথমে পালপেটরি মেথডে সিস্টোলিক প্রেশার দেখতে হবে। কিভাবে দেখবেন? রেডিয়াল ধমনির উপরে হাত রেখে ব্লাডার ফোলাতে হবে মানে পাম্পার দিয়ে পাম্প করে কাফ ফোলাতে হবে যতক্ষন না পালস বন্ধ হয়। কবজির (wrist joint) ২ সে.মি নিচে বৃদ্ধা আঙ্গুলের সাইডে আমরা তিন আঙ্গুলের সাহায্যে রেডিয়াল পালস অনুভব করি। রেডিয়াল পালস আর কিছুই না আমরা সচারচর হাতে যে পালস দেখে থাকি তাই। যেখানে বন্ধ হবে সেটাই সিস্টোলিক। এরপর আরও ৩০মি.মি উপরে মিটার উঠাতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে চাপ কমাতে হবে এবং ব্রাকিয়াল ধমনীতে রক্ত চলাচল করার কারণে সৃষ্ট শব্দ ( korotcoff sound) শুনতে হবে । শব্দ যেখানে শুরু হয় সেটা সিস্টোলিক প্রেশার এবং যেখানে শব্দ শেষ হবে তাকে ডায়াস্টলিক প্রেশার বলে।


রক্তচাপ কি বাড়ে-কমে

দিনের বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন কাজকর্ম, খাওয়া-ঘুম-বিশ্রাম বা পরিশ্রম-উত্তেজনার সঙ্গে রক্তচাপ পরিবর্তিত হতে পারে। দৈনন্দিন এই ওঠানামার পরিমাণ সিস্টোলিক ১০-১৫ মিলিমিটার এবং ডায়াস্টোলিক ৫-১০ মিলিমিটার পারদের বেশি হওয়ার কথা নয়।

রক্তচাপের প্রকারভেদ

স্বাভাবিক < ১২০ এবং < ৮০ (মিলিমিটার পারদচাপ)

প্রাক্-উচ্চ রক্তচাপ ১২০-১৩৯ অথবা ৮০-৮৯ (মিলিমিটার পারদচাপ)

উচ্চ রক্তচাপ (পর্যায়-১) ১৪০-১৫৯ অথবা ৯০-৯৯ (মিলিমিটার পারদচাপ)

উচ্চ রক্তচাপ (পর্যায়-২ )> ১৬০ অথবা > ১০০(মিলিমিটার পারদচাপ)

সিস্টোলিক ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপের পর্যায় ভিন্ন হলে সর্বোচ্চ পর্যায়কেই গণনায় নিতে হবে। যেমন কারও রক্তচাপ ১৭০/ ৯৫ মিমি পারদচাপ হলে তাঁকে পর্যায়–২ হিসেবে গণনা করতে হবে এবং সেই মোতাবেক চিকিৎসা দিতে হবে। রক্তচাপ যা–ই হোক না কেন, হৃদ্‌পিণ্ডের অবস্থা কিংবা অন্যান্য টার্গেট অর্গানের পরিস্থিতি বুঝে নির্ধারিত সময়ের আগেও চিকিৎসা শুরু হতে পারে। বয়সভেদেও রক্তচাপের ভিন্নতা রয়েছে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

হার্ট দুর্বল কি না, বুঝবেন যেসব লক্ষণে - Heart is weak or not, understand the symptoms
লিভার ক্যান্সারের কারন ও লক্ষন
জরায়ু ইনফেকশন এর লক্ষণ ও করণীয়
বাচ্চাদের পেট ব্যাথা কমানোর উপায় - Ways to relieve stomach ache in children
মাথা ব্যথার ঔষধের নামের তালিকা - List of names of headache medicines
ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার উপায় - Ways to stop hair loss in boys
ডেঙ্গু থেকে বাঁচার উপায় - Ways to avoid dengue
মেরুদন্ডের ব্যথার ব্যায়াম - Exercises for back pain
গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যাথার কারণ - Causes of headache during pregnancy
চোখের পাতা কাঁপা কোন রোগের লক্ষণ - Eyelid twitching is a symptom of any disease