বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি
The right way to have a baby

বাচ্চা নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি

বাচ্চা গ্রহণ করতে চান, তারা ঠিক উপরের নিয়মে হিসাব-নিকাশ করে ডেঞ্জার পিরিয়ডে সহবাস করবেন। এতে ফলাফল ভাল হওয়ার সম্ভবনা সবথেকে বেশি থাকে। স্ত্রীর জরায়ুতে ‍ওভুলেশন হওয়ার পর ডিম্বাণু সাধারণত ২৪ ঘন্টা জীবত থাকে। … চিকিৎসকের পরামর্শ হচ্ছে, বাচ্চা নিতে চাইলে ডেঞ্জার পিরিয়ডে একদিন পর পর সহবাস করলেই চলবে।

গর্ভবতী হওয়ার জন্য অনেক কিছু তো করা হলো তার জন্য আপনাকে সঠিক নিয়মে মিলন করতে হবে। তার জন্য প্রথমেই ভেবে দেখতে হবে স্বামীর সাথে মিলিত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে। হিসাব করলে দেখা যাবে যে বেশীভাগ সময়ে স্ত্রীর ডিম্বানু নিষিক্ত হওয়ার সময় হয়তো মিলন ঘটে নি যার কারণে গর্ভধারণও হয় নি কখন কিভাবে সহবাস বা মিলন করলে বাচ্চা হয়। অনেকে কনডম ব্যবহার বন্ধ করলেও গর্ভবতী হতে পারেন না প্রায়ই সামান্য কিছু ভুলের কারণে ।

এর কারণ তেমন কিছুই না অনেক ক্ষেত্রে। যেহেতু একজন নারীর ডিম্বাশয় থেকে প্রতিমাসে একবার ডিম্বানু তৈরি করে, সেক্ষেত্রে নারীর ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গর্ভধারণের ক্ষেত্রে। যখন নারীর ডিম্বাশয় থেকে একবার ডিম্বানু তৈরি এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় শুধুমাত্র তখনই বীর্যের সংস্পর্শে এলে ডিম্বানুটি নিষিক্ত হতে পারে এবং গর্ভধারণ করতে পারে।

শুক্রাণু নারীর গর্ভে গিয়ে কতদিন বাচে? জেনে রাখা দরকার যে পুরুষের শুক্রাণু প্রায় পাঁচদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। পুরুষের সাথে মিলিত হয় তার সঙ্গির সাথে তখনই শুক্রাণু ডিম্বানুটির সাথে মিলিত হতে পারে, যদি নারীর ডিম্বানু প্রস্তুত হয়।

ডিম্বানু নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাব্য সময়

অনেকে কনডম ব্যবহার না করলেও গর্ভবতী হতে পারেন না প্রায়ই। এর কারণ তেমন কিছু না। হিসাব করলে দেখা যাবে স্ত্রীর ডিম্বানু নিষিক্ত হওয়ার সময় হয়তো মিলন ঘটেনি যার ফলে গর্ভধারণও হয় নি। একজন নারীর ডিম্বাশয় মাসে একবার ডিম্বানু তৈরি করে। একে ওভুলেশন বলে। যখন এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় শুধুমাত্র তখনই বীর্যের সংস্পর্শে এলে ডিম্বানুটি নিষিক্ত হতে পারে। তবে শুক্রাণু নারীর গর্ভে গিয়ে প্রায় পাঁচদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। তখন যদি নারীর ডিম্বানু প্রস্তুত হয় তখনই শুক্রাণু ডিম্বানুটির সাথে মিলিত হতে পারে।

নারীর মাসিক শুরুর দিন থেকে গুণে গুণে সাতদিন পর্যন্ত এই ডিম্বাণু পুরোপুরি তৈরি হওয়ার সুযোগ নেই বলা চলে। যাদের মাসিক অনিয়ম তাদের কথা আলাদা। কিন্তু যাদের প্রতিমাসে ঠিকঠাক মতো সঠিক সময় মাসিক হয় তারা এ বিষয়টা মাথায় রাখতে পারেন। ইমার্জেন্সি পিল খেলে এ হিসাব কাজ করবে না, এটাও মনে রাখতে হবে। স্বাভাবিক মাসিক হয় যাদের তাদের পিরিয়ড শুরুর প্রথম দিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত স্বামীর সাথে মিলিত হলেও এ থেকে গর্ভধারণ করার সুযোগ খুব কম। গর্ভবতী হতে চাইলে এর পরের ১০ দিন স্বামীর সাথে একবার করে মিলিত হলে কোনো সমস্যা না থাকলে গর্ভবতী হবেন নারী। কারণ এ সময়ের ভিতরেই ডিম্বানুটি প্রস্তুত হয়।

জন্ম বিরতিকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ করা

যদি আপনার ড্রয়ারে কনডম থাকে তা আপনি যে কোন সময় ফেলে দিতে পারেন। যদি আপনি গর্ভ নিরোধক বড়ি সেবন করেন তবে আপনি এটা গ্রহণ বন্ধ করতে পারেন এবং সরাসরি চেষ্টা শুরু করতে পারেন। অথবা আপনি মাসিক শুরুর আগ পর্যন্ত পিল চালিয়ে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে ডাক্তারের শিশু জন্মের তারিখ নির্নয় করতে সহজ হয়। আপনার মাসিকচক্র ফিরে আসতে ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। আপনি পিল খাওয়া অবস্থায় গর্ভধারন করলে পিল খাওয়া বন্ধ করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। পিল খাওয়া অবস্থায় গর্ভধারন করলে যে শিশুর ক্ষতি হবে তা নয়, তবে সাবধানতা অবলম্বন করা ভাল। যদি আপনি গর্ভনিরোধের জন্য ইন্জেকশন ব্যবহার করে থাকেন তবে সন্তান ধারন করার জন্য এক বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

ডিম্বাণু প্রস্তুত হওয়ার আগেই শারীরিক মিলন 

পুরুষের শুক্রাণু জরায়ু বা ডিম্বনালীতে দুই থেকে তিনদিন বেঁচে থাকে। কিন্তু নারীর ডিম্বাণু মাত্র ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা নিষিক্ত হওয়ার অবস্থায় থাকে। এরপর সেখানে আর কোনো শুক্রাণু কাজ করতে পারে না। তাই ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাব্য দিনে শারীরিক মিলন না করে মাসিক শেষ হওয়ার পর একদিন পর পর শারীরিক মিলন করতে হবে। যেন ডিম্বাণু প্রস্তুত হলে শুক্রাণু মিলিত হতে পারে। জরায়ুতে অপেক্ষমাণ শুক্রাণুও সেটা করতে পারে।

শারীরিক মিলন প্রতিদিন নয় 

অনেকের ধারণা বাচ্চা চাইলে প্রতিদিন শারীরিক মিলন জরুরী। এটা ঠিক নয়। প্রতিদিন শারীরিক মিলনে অবসাদ বা ক্লান্তি চলে আসতে পারে। নারীর মিলিত হওয়ার আগ্রহ কমে যেতে পারে এবং পুরুষের বীর্যের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এর ফলে ডিম্বাণু প্রস্তুত হওয়ার সময় শারীরিক মিলন না ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। তাই এক দিন পর পর শারীরিক মিলন গর্ভবতী হওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায়। এতে করে শারীরিক মিলনের আগ্রহও থাকে আবার ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশী থাকে।

সঠিক যৌন মিলন

গর্ভধারণের জন্য কিছু যৌন পদ্ধতি পালন করা যেতে পারে। যৌন মিলনের বহুল প্রচলিত পজিশন নারীর উপরে পুরুষ। একে মিশনারি পজিশন বলে। মিশনারি পজিশনে শারীরিক মিলন এক্ষেত্রে সাহায্য করেতে পারে বলে মনে করেন অনেকে। কারণ এতে নারী কোনো রকম নড়াচড়া ছাড়াই বিছানায় পিঠ লাগিয়ে শুয়ে থাকতে পারেন। যদিও এ সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য নেই বা সেমন কোন গবেষনা হয়নি।

ইসলামিক নিয়মে বাচ্চা নেওয়ার নিয়ম

দোয়া পড়া ইবাদত। তবে সে দোয়া প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশিত মতে হতে হবে। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী সহবাসের আগে কেন দোয়া পড়বেন? এ দোয়া কি শুধুই সহবাসের নাকি নিরাপত্তার?

প্রিয়নবি কেন স্বামী-স্ত্রীর মিলনের আগে দোয়া পড়তে বলেছেন? এর কারণই বা কী? আর এ দোয়ায় মানুষ কী বলে থাকেন? আসুন জেনে নেয়া যাক :

স্বামী-স্ত্রী মিলনের আগে যে দোয়া পড়তে হয়-

بِسْمِ اللّهِ اللّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَ جَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়ত্বানা ওয়া জান্নিবিশ শায়ত্বানা মা রাযাক্বতানা।

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তোমার নামে (যৌন মিলন বা সহবাস) আরম্ভ করছি, তুমি আমাদের (স্বামী-স্ত্রী উভয়ের) কাছ থেকে শয়তানকে দূরে রাখ। আমাদের এ মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবেন, সে সন্তানকেও শয়তান (যাবতীয় আক্রমণ) থেকে দূরে রাখ।’

দুটি পদ্ধতি নিয়ে সামান্য গবেষনা হয়েছে। একটি মিশনারি এবং অন্যটি ডগি স্টাইল। ডগি পদ্ধতি হচ্ছে মহিলা চার হাত-পায়ে ভর দিয়ে উপুড় হয়ে থাকে এবং সঙ্গী পিছন দিক থেকে যৌন সংসর্গ করে। সাধারন ভাবে বুঝা যায় এই পদ্ধতিতে বীর্য সহজেই সারভিক্স পর্যন্ত পৌছাতে পারে। এই দুটি পদ্ধতিতেই বীর্য সহজে যোনি হয়ে সারভিক্সের সম্মুখে পৌছে। হতে পারে দাঁড়িয়ে বা আপনি উপরেও ভালো পজিশন। এ সম্পর্কে খুব বেশী তথ্য নেই। তাই আপনি আপনার মতো যৌন সংসর্গ চালিয়ে যান।

সহবাসের পরপরই যা করবেন : যোনী এবং সারভিক্সের আশে পাশেই থাকে বীর্য। একবার বীর্যপাত হওয়া মানে আপনার যোনীতে কয়েক লক্ষ শুক্রানুর প্রবেশ। আপনি যৌন মিলনের পরে দাঁড়িয়ে পড়লেও সব শুক্রানুর সরে যাওয়ার কোন কারন নেই। তাই যৌনমিলনের পর সাথে সাথে দাঁড়িয়ে পড়লেও গর্ভধারনে কোন সমস্যা হয় না।

যদি আপনার হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকে এবং কোন সমস্যা না থাকে তবে যৌনমিলনের পর ৩০ মিনিট শুয়ে থাকা ভালো। শারীরিক মিলনের পর বিছানায় পিঠ লাগিয়ে শুয়ে থাকুন। যেন বীর্য জরায়ুর দিকে সহজে প্রবাহিত হতে পারে। একটা কোলবালিশ পায়ের নীচে দিয়ে রাখতে পারেন যেন পাগুলো একটু উঁচু হয়ে থাকে। মোট কথা বীর্য যতখানি সময় ধরে জরায়ুর ভিতরে রাখা যায় ততই ভালো। এভাবে শুয়ে থাকলে বীর্য সহজে জরায়ু, সারভিক্স হয়ে ফ্যালোপেন টিউবে প্রবেশ করে। শারীরিক মিলনের জন্য ঘুমের আগের সময় বেছে নিন। যেন মিলনের সাথে সাথেই উঠে না যেতে হয় বিছানা থেকে। কিন্তু যদি আপনার জরুয়ুতে ইনফেকশন থাকে এবং ডাক্তার সহবাসের পরপর মুত্রথলি খালি করতে বলে তবে যৌনমিলনের পর দেরী করা ঠিক হবে না।মিলনের পর পরই নিজেকে পরিষ্কার করে নেয়ার অভ্যাস খুবই ভালো। এতে কোনো রকম ইনফেকশনের ভয় থাকে না। কিন্তু গর্ভধারণের জন্য অন্তত ১ ঘন্টা পানি বা সাবান দিয়ে যৌনাঙ্গ না ধুয়েই থাকতে হবে।

বাচ্চা নেওয়ার আগের প্রস্তুতি

মানসিক প্রস্তুতি

আপনি ও আপনার স্বামী যখন গর্ভধারণের চেষ্টা করবেন, তখন মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিবেন, আপনারা এখন সন্তান চান কিনা? সন্তানের দেখভাল করার মত লোকজন ও পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় আছে কিনা? ক্যারিয়ারের গঠনের মাঝে সন্তান নিলে সামলাতে পারবেন কিনা? দু’জনের মাঝে ভালো বোঝাপড়া আছে কিনা? মানসিকভাবে বর্তমানে আপনি বিপর্যস্ত কিনা? এই প্রশ্নগুলো নিজেকে করুন। যদি হ্যাঁবাচক উত্তর পান তবে বুঝতে হবে যে আপনি মানসিকভাবে প্রস্তুত। যদি না বাচক উত্তর পান তবে গর্ভধারণের চেষ্টা করার আগে আরও ভালোমতো ভেবে নিন।

আর্থিক প্রস্তুতি

যদিও বলা হয়ে থাকে অর্থই অনর্থের মূল। তারপরও অর্থ ছাড়া জীবন অচল। তাই আপনার পরিবারে কোন নতুন অতিথিকে আনতে চাইলে তার ভবিষ্যতটা যতটা পারেন সুরক্ষিত করার চেষ্টা করবেন। কেননা সন্তান পালন বর্তমান যুগে অনেক ব্যয়সাপেক্ষ। তাই গর্ভধারণ করার ইচ্ছা থাকলে আগে অর্থনৈতিক দিকটাও ভেবে দেখবেন। একটা প্লানও করে নিতে পারেন। একটা ফিক্সড ডিপোজিট অথবা ইন্সুরেন্স করিয়ে নিতে পারেন গর্ভধারণের আগে। এতে আপনার অনাগত সন্তানের ভবিষ্যত সিকিউর থাকবে। এছাড়া একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমানো উচিত গর্ভধারণের চেষ্টাকালীন সময়ে। কেননা গর্ভাবস্থায়, বাচ্চা প্রসবকালীন ও বাচ্চা জন্মদানের পরবর্তী অবস্থায় অর্থের দরকার হয়।

শারীরিক প্রস্তুতি

মেডিকেল চেকআপ: যদি বাচ্চা নিতে চান তবে গর্ভধারণের জন্য একটা বিশেষ সময়ের পরিকল্পনা করুন। এরপর মেডিকেল চেকআপ করুন। এতে করে আপনি জানতে পারবেন যে,বাচ্চা নেয়ার জন্য আপনার শরীর প্রস্তুত কিনা? কেনোনা একটি স্বাস্থ্যবান বাচ্চা জন্মদেওয়া একটি সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান মায়ের উপর নির্ভর করে। এজন্য প্রি-কন্সেপশন, প্রি-প্রেগনেন্সি চেকআপ বা গর্ভধারণ করার আগের চেকআপটা করে নেওয়া উচিত। কেননা কিছু মেডিকেল কন্ডিশন ও জীবনযাত্রার মান গর্ভধারণকে প্রভাবিত করে, এমনকি গর্ভধারণ করার ক্ষমতাকেও প্রভাবিত করে।

গলা ব্যথা সারানোর উপায় - Ways to cure sore throat
শারীরিক দুর্বলতা কাটানোর ঘরোয়া উপায়
যৌনক্ষমতা বৃদ্ধিতে রসুনের ভূমিকা
পায়ের তলায় ব্যথা হলে কি করতে হবে - What to do if the sole of the foot hurts
জরায়ু টিউমার প্রতিরোধের উপায় - Ways to prevent uterine tumors
অণ্ডকোষ ফুলে গেলে করণীয় - What to do if the testicles are swollen
গর্ভাবস্থায় পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ - Symptoms of water loss during pregnancy
কিভাবে কিডনিতে পাথর থেকে মুক্তি পাবেন
ডেঙ্গু থেকে দ্রুত সুস্থ হতে যে খাবার খাবেন - Foods to eat to recover quickly from dengue
গর্ভপাতের মারাত্মক কয়েকটি লক্ষণ - Some serious symptoms of miscarriage