কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়
Home Remedies for Constipation

কোষ্ঠকাঠিন্য কি

কোষ্ঠকাঠিন্য Constipation একটি অস্বাভাবিক শারীরিক অবস্থা যখন একজন ব্যক্তি সহজে মলত্যাগ করতে সক্ষম হন না। সাধারণত: এক-দুই দিন পরপর মলত্যাগের বেগ হওয়া এবং শুষ্ক ও কঠিন মল নিষ্কাশন কোষ্ঠকাঠিন্য বলে পরিচিত। ডাক্তারদের মতে কেউ যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করার পরও প্রতি সপ্তাহে তিনবারের কম পায়খানায় যায় তখনই এই অবস্থাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়।

কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ

১. কম জল খেলে

২. আঁশজাতীয় বা ফাইবার যুক্ত খাবার, শাক-সবজি ও ফলমূল কম খেলে,

৩. পনির, ছানা ইত্যাদি দুগ্ধজাত খাবার অত্যাধিক পরিমাণে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়াতে পারে,

৪. কায়িক পরিশ্রম, হাঁটা-চলা বা শরীরচর্চা একেবারেই না করলে,

৫. দীর্ঘদিন কোনও অসুস্থতার কারণে বিছানায় শুয়ে থাকার ফলে,

৬. মারাত্মক দুশ্চিন্তা বা অবসাদের ফলে,

৭. অন্ত্রনালীতে ক্যান্সার হলে,

৮. ডায়াবেটিস হলে

৯. মস্তিষ্কে টিউমার হলে এবং মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা শরীরে বাসা বাঁধতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ

অনিয়মিত মল ত্যাগ ছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্যের আরও কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে, সেগুলি হল –

গ্যাস

পেট ফুলে যাওয়া

সবসময় পেট ভর্তি লাগা

তলপেটে ব্যথা

তলপেটে ক্র্যাম্পস

মাথা ব্যথা

কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রকারভেদ

সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্যের তিনটি প্রকারভেদ রয়েছে, তা হল –

নরমাল ট্রানজিট কন্সটিপেশন : এটি খুব সাধারণ। মল ঠিকমতো পরিষ্কার হয় না, শক্ত হয়ে যায়। এর থেকে পেটে ব্যথা বা ফোলাভাব হতে পারে।

স্লো ট্রানজিট কন্সটিপেশন : এক্ষেত্রে অনেক সময় বাথরুম যাওয়ার তাগিদ অনুভব হয় না। সপ্তাহে একবারের চেয়েও কম মল ত্যাগ হয়। মল শুকনো, শক্ত হয়ে যায়। এর থেকে পেট ফুলে যায়, যা খুবই বেদনাদায়ক।

ডিফেকশন ডিসওর্ডারস : মল ত্যাগ করা খুব কঠিন হয়ে ওঠে। মল শক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে সহজে বেরোতে পারে না। এক্ষেত্রে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়

কোষ্ঠকাঠিন্য একটি বিরক্তিকর ও যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা। অনেকের টয়লেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায়, কিন্তু পেট পরিষ্কার হয় না। এ নিয়ে অস্বস্তিতে ভোগেন তাঁরা। মলত্যাগ যদি সপ্তাহে তিনবারের কম অথবা পরিমাণে খুব কম হয়, অনেকক্ষণ ধরে চেষ্টা করেও মলত্যাগ না হয়, অথবা মল অস্বাভাবিক রকমের শক্ত বা শুকনো হয়, তাহলে তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে। বিভিন্ন কারণে এ সমস্যা দেখা দেয়। তবে অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস কোষ্ঠকাঠিন্যের পেছনে প্রধান ভূমিকা পালন করে। তাই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

১. কলমিশাক

কলমিশাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।কলমিশাকের পাতা ও কাণ্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ থাকে। আঁশ খাদ্য হজম, পরিপাক ও বিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে। কলমিশাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং শরীর সুস্থ থাকে।

২.মধু

মধু উচ্চ ঔষধিগুণ সম্পন্ন একটি ভেষজ তরল। কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে মধু খুবই উপকারী। দিনে তিনবার দুই চা চামচ করে মধু খান। আপনি চাইলে এক গ্লাস গরম পানির মধ্যে মধু ও লেবুর রস মিশিয়েও খেতে পারেন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এটি পান করুন। কিছু দিনের মধ্যে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে। তবে হ্যাঁ, ডায়াবেটিক রোগীরা মধু খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

৩.গাজর

গাজর একটি পরিচিত সবজি যা হাতের কাছেই পাওয়া যায়। অনেকের প্রিয় এই সবজিটি প্রাকৃতিক ডায়াটেরি ফাইবারের বেশ ভালো উৎস। মাত্র আধা ইঞ্চির ৭ খণ্ড গাজরে রয়েছে প্রায় ১.২ গ্রাম ফাইবার। প্রতিদিন গাজর খাওয়ার অভ্যাস কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি মিলবে।

৫.শসা

শসার ডায়াটেরি ফাইবার শসাকে করে তোলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার মহা ঔষধ। কারণ শসার বেশির ভাগ অংশই পানি দিয়ে তৈরি। তাই নিয়মিত শসা খেলে দূর হবে কোষ্ঠকাঠিন্য।

৫.পেয়ারা

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, ওজন কমাতে পেয়ারার জুরি নেই। তাই যারা পেটের সমস্যায় ভুগছেন তারা পেয়েরা খেতে পারেন।

৬.লেবু

লেবু বা লেবুর রস কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অনেক খুবই কার্যকরী। এক গ্লাস গরম পানিতে অর্ধেক লেবুর রস দিয়ে দিন। এর সঙ্গে আধা চা চামচ নুন এবং সামান্য মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এটা পান করুন। দ্রুত ফল পেতে সন্ধ্যায় আরেকবার পান করুন এই মিশ্রণ। কিছুদিনের মধ্যেই ফল পাবেন।

৭.কলা

কেলা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা এর পটাশিয়াম বৃহদান্ত্র ও ক্ষুদ্রান্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।

৮.আঙ্গুর

প্রতিদিন অর্ধেক বাটি আঙ্গুর বা অর্ধেক গ্লাস আঙ্গুরের রস পান করুন। যদি বাড়িতে আঙ্গুর না থাকে বা আঙ্গুর খেতে ভাল না লাগে, তাহলে দু চামচ কিশমিশ জলেতে ভিজিয়ে রাখুন সারা রাত। কিশমিশসহ এই পানি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করুন। দেখবেন কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দ্রুত দূর হয়ে যাবে।

৯.আপেল

প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে একটি খোসাসহ পুরো আপেল খাওয়া উচিত। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক কাপ কুসুম গরম পানি পান করতে হবে। এটা হজমে সহায়তা করবে এবং কোষ্ঠবদ্ধতা দূর করবে।

১০.এলাচ

বড় একটি সাদা এলাচ এক কাপ গরম দুধে ভিজিয়ে রাখতে হবে সারা রাত। সকালবেলা এই এলাচটি থেঁতো করে দুধসহ খেয়ে ফল মিলবে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাটি যদি ভয়াবহ রকমের বেশি হয় তাহলে সকাল ও রাতে একইভাবে দুধসহ এলাচ খেয়ে ফল মিলবে হাতেগরম।

পিল খাওয়ার নিয়ম
ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার উপায় - Ways to stop hair loss in boys
বাংলাদেশের সেরা শিশু নিউরোলজিস্ট ডাক্তার
যৌনরোগ থেকে সুরক্ষিত থাকতে যা করবেন - What to do to protect yourself from sexually transmitted diseases
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তালিকা, বরিশাল
পিরিয়ডের সময় প্যাড ব্যবহারের নিয়ম
বরিশাল জেলার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের তালিকা
আপেলিন সিরাপ এর উপকারিতা
বাচ্চা বুকের দুধ কম পেলে করণীয় - What to do if the baby gets less breast milk
বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ঢাকা ঠিকানা