গ্যাস্ট্রিকের সহজ ঘরোয়া চিকিৎসা
Easy home remedies for gastritis

গ্যাস্ট্রিক কি?

বৈজ্ঞানিকভাবে যে জিনিসটিকে গ্যাস্ট্রিক বলা হয় সেটির আসল নাম হচ্ছে পেপটিক আলসার ডিজিজ। এসিডের কারণে এটাকে বলে পেপটিক আলসার ডিজিজ। এবং যখন বলা হচ্ছে গ্যাস্টিক আছে তখন বোঝা হচ্ছে তার পেপটিক আলসার রয়েছে। এটা পাকস্থলিতে বা ডিওডেনামে হতে পারে।

গ্যাস্ট্রিক এর লক্ষণ

গ্যাস্ট্রিক এর অনেক গুলো লক্ষণ রয়েছে। যেমন -

বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া 

পেটে ফুলে যাওয়া বা পেট ফাঁপা

পেটে ব্যথা

বদহজম

পেট ব্যথা

আলসার

পেটে জ্বালাপোড়া

ক্ষুধামান্দ্য

রক্ত ​​বমি বা বমির সাথে কফি গ্রাউন্ড-মত উপাদান থাকা

কালো, ট্যারি স্টুল

গ্যাস্ট্রিকের কারণ

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরী হওয়ার পিছনে কারনগুলো রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য -

দীর্ঘ সময় পর্যন্ত খালিপেটে থাকা

অসাস্থ্যকর, তেল-চর্বিযুক্ত, অধিক মসলাদার যুক্ত খাবার গ্রহন। 

খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে না খাওয়া।

অ্যালকোহল পান।

দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ ইত্যাদি

গ্যাস্ট্রিক এর ঔষধ এর নাম

রেনিটিডিন ছাড়াও গ্যাস্ট্রিক নিরাময় করতে আরো বেশকিছু ঔষধ বাজারে প্রচলিত রয়েছে। এই ঔষধগুলো হচ্ছে সেকলো, এক্সিলক ২০, ইসুটিন ২০, ওপি ২০, নিউ ট্রাক , ওর ট্রাক, সার্জেল, মাক্সপ্রো, লোসেকটিল, ফিনিক্স ২০, রাবিপ্রাজল, এন্টারসিড, এবং ইসোমিপ্রাজল বিপি।

গ্যাস্টিকের সহজ ঘরোয়া চিকিৎসা

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় পড়তে হয় না এমন মানুষ পাওয়া খুব কঠিন। কম কিংবা বেশি সবাইকেই এই সমস্যায় পড়তে হয়। খাবারে সামান্য একটু অনিয়ম হলেই শুরু হয়ে যায় গ্যাস্ট্রিকের মারাত্মক ব্যথা। অনেক সময় অতিরিক্ত অনিয়মে এই সাধারণ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাই সৃষ্টি করে আলসার। তাই শুরুতেই সতর্ক হওয়া জরুরি। জেনে রাখা উচিৎ গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তির কিছু ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি।

১.পানি পান

প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। এটি শুধু আপনার গ্যাস্টিকের সমস্যা কমাবে না আরো অনেক রোগের হাত থেকে মুক্তি দেবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন।

২.তুলসী পাতা

এর শীতল এবং বায়ুনাশকারী উপাদান আপনাকে তাৎক্ষণিকভাবেই গ্যাস-অম্বল থেকে মুক্তি দেবে। সুতরাং গ্যাস-অম্বলের কোনো লক্ষণ দেখা গেলেই কয়েকটি তুলসী পাতা খেয়ে নিন। অথবা ৩-৪টি তুলসী পাতা সেদ্ধ করে এক কাপ গরম পানিতে কয়েক মিনিট রেখে দিন। এরপর তা পান করুন।

৩.অ্যালোভেরা

অ্যালোভেরায় উপস্থিত নানাবিধ খনিজ একদিকে যেমন ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি হজম ক্ষমতার উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, অ্যালোভেরার উপাদান পেটে তৈরি হওয়া অ্যাসিডের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

৪.দই  

দই আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে করে দ্রুত খাবার হজম হয়, ফলে পেটে গ্যাস হওয়ার ঝামেলা দূর হয়।

৫.পেঁপে 

পেঁপেতে রয়েছে পাপায়া নামক এনজাইম যা হজমশক্তি বাড়ায়। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলেও গ্যাসের সমস্যা কমে।

৬.বেকিং সোডা

বেকিং সোডা পেটের অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে তাৎক্ষণিক রেহাই পেতে সাহায্য করে। ১ গ্লাস পানিতে ১/৪ চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে পান করুন। ভালো ফলাফল পাবেন।

৭.রসুন

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য রসুন খুবই কার্যকরী উপাদান। রসুন, কালো মরিচ বীজ, ধনে বীজ এবং জিরা বীজ একসাথে মিশ্রিত করে কয়েক মিনিট উত্তাপে ফুটিয়ে সিদ্ধ করতে হবে , সিদ্ধ করার পর এই মিশ্রন থেকে যে নির্যাস বের হবে সেটা ছেঁকে আলাদা করতে হবে। তারপর সাধারণ তাপমাত্রায় এই নির্যাস ঠান্ডা করে দৈনিক দুই বার পান করতে হবে।

৮.কলাকমলা 

কলা ও কমলা পাকস্থলীর অতিরিক্ত সোডিয়াম দূর করতে সহায়তা করে। এতে করে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এ ছাড়াও কলার সলুবল ফাইবারের কারণে কলা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ক্ষমতা রাখে। সারা দিনে অন্তত দুটি কলা খান। পেট পরিষ্কার রাখতে কলার জুড়ি মেলা ভার।

৯.আদা

আদা সবচাইতে কার্যকরী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানসমৃদ্ধ খাবার। পেট ফাঁপা এবং পেটে গ্যাস হলে আদা কুচি করে লবণ দিয়ে কাঁচা খান, দেখবেন গ্যাসের সমস্যা সমাধান হবে।

১০.ঠাণ্ডা দুধ 

পাকস্থলীর গ্যাসট্রিক অ্যাসিডকে নিয়ন্ত্রণ করে অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দেয় ঠাণ্ডা দুধ। এক গ্লাস ঠাণ্ডা দুধ পান করলে অ্যাসিডিটি দূরে থাকে।

১১.দারুচিনি

হজমের জন্য খুবই ভালো। এক গ্লাস পানিতে আধাচামচ দারুচিনির গুঁড়ো দিয়ে ফুটিয়ে দিনে ২ থেকে ৩ বার খেলে গ্যাস দূরে থাকবে।

১২.জিরা 

জিরা পেটের গ্যাস, বমি, পায়খানা, রক্তবিকার প্রভৃতিতে অত্যন্ত ফলপ্রদ। জ্বর হলে ৫০ গ্রাম জিরা আখের গুড়ের মধ্যে ভালো করে মিশিয়ে ১০ গ্রাম করে পাঁচটি বড়ি তৈরি করতে হবে। দিনে তিনবার এর একটি করে বড়ি খেলে ঘাম দিয়ে জ্বর সেরে যাবে।

১৩.লবঙ্গ 

২-৩টি লবঙ্গ মুখে দিয়ে চুষলে একদিকে বুক জ্বালা, বমি বমিভাব, গ্যাস দূর হয়। সঙ্গে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।

১৪.এলাচ 

লবঙ্গের মতো এলাচ গুঁড়ো খেলে অম্বল দূরে থাকে।

১৫.পুদিনা পাতার পানি 

এক কাপ পানিতে ৫টা পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে খান। পেট ফাঁপা, বমিভাব দূরে রাখতে এর বিকল্প নেই।

১৬.মৌরির পানি  ও সরষে

মৌরি ভিজিয়ে সেই পানি খেলে গ্যাস থাকে না। এছাড়া সরষে গ্যাস্ট্রিকের সারাতে করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে সরষে যোগ করা হয় যাতে সেসব খাবার পেটে গ্যাস্ট্রিক সৃষ্টি করতে না পারে।

১৭.আমলা

আমলা টুকরো করে রোদে দিয়ে খান কাজে দেবে। পেটে গ্যাস ও বদহজমজনিত সমস্যা সমাধানে আদা খুব উপকারী। খাবারে আদা যোগ করে বা কিছু পরিমাণ আদা চিবিয়ে রসটুকু গ্রহণ করলে পেটে গ্যাস প্রতিরোধ করা যায়।

১৮.শসা

শসা পেট ঠাণ্ডা রাখতে অনেক বেশি কার্যকর। এতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাসের উদ্রেক কমায়।

১৯.ডাবের পানি

ডাবের পানি খেলে হজম ক্ষমতা বাড়ে এবং সব খাবার সহজেই হজম হয়ে যায়। এছাড়া গ্যাসের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায় নিয়মিত ডাবের পানি খেলে। তাই সম্ভব হলে প্রতিদিন ডাবের পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।

২০.আপেল সাইডার ভিনেগার

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে তাৎক্ষণিক রেহাই পেতে এর জুড়ি নেই। ১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ২ টেবিল চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করে ফেলুন। 

প্রস্রাবের রাস্তায় চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় - Home Remedies for Vaginal Itching
হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ রোগের চিকিৎসা - Treatment of hand foot and mouth disease
গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার খাওয়া নিষেধ
আলফা সিরাপের উপকারিতা
মাসিকের কতদিন পর সহবাস করলে বাচ্চা হয়
পিল খেতে ভুলে গেলে কি করবেন
গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায় - Ways to relieve constipation during pregnancy
গর্ভাবস্থায় খাবারে অরুচি হলে করণীয় - What to do if you have aversion to food during pregnancy
মোটা হওয়ার ভিটামিন ক্যাপসুল