হাই ব্লাড প্রেশার কমানোর ঘরোয়া উপায়
high blood pressure

হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ কী ?

হাইপারটেনশন বা হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ একটি জটিল দীর্ঘস্থায়ী (ক্রনিক) স্বাস্থ্যগত সমস্যা যার ফলে শরীরের রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। একে সাইলেন্ট কিলারও বলা হয়ে থাকে।

হৃৎপিণ্ডের ধমনীতে রক্ত প্রবাহের চাপ অনেক বেশি থাকলে সেটিকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেশার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

সিস্টোলিক প্রেসার ও ডায়াস্টলিক প্রেসার

দু'টি মানের মাধ্যমে এই রক্তচাপ রেকর্ড করা হয় - যেটার সংখ্যা বেশি সেটাকে বলা হয় সিস্টোলিক প্রেশার, আর যেটার সংখ্যা কম সেটা ডায়াস্টলিক প্রেশার।  প্রতিটি হৃৎস্পন্দন অর্থাৎ হৃদপিণ্ডের সংকোচন ও সম্প্রসারণের সময় একবার সিস্টোলিক প্রেশার এবং একবার ডায়াস্টলিক প্রেশার হয়।

উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণসমূহ

 প্রচণ্ড মাথা ব্যথা করা

ঘাড় ব্যথা করা

বমি বমি ভাব হওয়া; এমনকি বমিও হয়ে যাওয়া।

নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।

উচ্চ রক্তচাপের কিছু কারণ

১) প্রতিদিন ৬ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া।

২) অ্যালকোহল গ্রহণ করা।

৩) প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অনেক বেশি ক্যাফেইন জাতীয় খাদ্য /পানীয় থাকা।

৪) নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে না তোলা।

৫) স্ট্রেস

৬) অবেসিটি, যেহেতু হার্টকে অতিরিক্ত টিস্যুর জন্য বেশি বেশি ব্লাড পাম্প করা লাগে।

৭) বংশগতভাবে অনেকেয় হাই ব্লাড প্রেশারের শিকার হয়ে থাকে।

কী কী কারণে উচ্চ রক্তচাপ দেখা যায়?

কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যাপারটা বংশগত৷ তবে অনেকের ক্ষেত্রে জীবনযাপনের কারণেই উচ্চ রক্তচাপ দেখা যায়৷ যেমন, ওবেসিটি, অতিরিক্ত মদ্যপান৷ এছাড়া থাইরয়েডের সমস্যা, কিডনির সমস্যা, নাগাড়ে পেন রিলিভিরা ট্যাবলেট খাওয়ার ফলেও এই প্রবণতা দেখা দেয়৷ এসব কারণে উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ দেখা যায়৷

হাই ব্লাড প্রেশার কমানোর ঘরোয়া উপায়

হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ এখন ঘরোয়া রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণত সিস্টোলিক ব্লাড প্রেসার ১৪০ এর বেশি বা ডায়াস্টোলিক ৯০ এর বেশি হলে একে উচ্চ রক্তচাপ বলে। উচ্চ রক্তচাপ শরীরে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু রক্তচাপ প্রাথমিক অবস্থায় থাকলে ঘরোয়া কিছু বিষয় মেনে চললে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।

১.কলা

কলা এমন একটি ফল যা ব্লাড প্রেশারের রোগীরা প্রেশার কন্ট্রোল করার জন্য প্রতিদিন খেতে পারেন। কলাতে থাকা পটাসিয়াম প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। একই সাথে কলাতে সোডিয়ামের পরিমাণ কম উপরন্তু কোলেস্টেরল ফ্রি। হাইপারটেনশনের পাঠকেরা আপনারা প্রতিদিন একটি করে কলা খেতে পারেন।

২.পালং শাক

হার্টকে চাঙ্গা রাখতে এবং রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে প্রায় প্রতিদিনই পালং শাক খেতে হবে। কারণ এই শাকটির অন্দরে ঠাসা পটাশিয়াম, ফলেট, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার শুধু রক্তচাপ কমায় না, সেই সঙ্গে শরীরের একাধিক অঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৩.পেঁয়াজের রস

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার পাশাপাশি যদি পেঁয়াজের রস খেতে পারেন, তাহলে দেহের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না। এখন প্রশ্ন হল কীভাবে খেতে হবে পেঁয়াজের রস? এক্ষেত্রে ১ চামচ পেঁয়াজের রসের সঙ্গে সমপরিমাণে মধু মিশিয়ে খাওয়া শুরু করতে হবে। তাহলেই দেখবেন কেল্লা ফতে!

৪.রসুন

উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী একটি জিনিস হলো রসুন৷ সকালে খালি পেটে এক কোয়া রসুন চিবিয়ে পানি খেলে রক্তচাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে৷

৫.কাঁচা বাদাম

কাঁচা বাদাম মানে যে বাদামটি বালুতে ভাঁজা হয়নি। প্রতিদিন ৪-৫ টি কাঁচা বাদাম আপনাকে রাখবে প্রেশার থেকে কয়েকশ হাত দূরে। কাঁচা বাদামে আছে mono-saturated ফ্যাট। প্রমাণিত হয়েছে এই ফ্যাট রক্তের কোলেস্টেরল কমিয়ে আনে সেই সঙ্গে arterial inflammation ও কমিয়ে দেয়। ফলশ্রুতিতে আপনি থাকেন লোয়ার ব্লাড প্রেসার লেভেলের আওতায়।

৬.ডাবের পানি

শখ করেই অনেকে ডাবের পানি খেয়ে থাকেন৷ তবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, রক্তচাপ কমানোতেও নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়া খুব উপকারী৷

৭.নিমতুলসী

নিমের দুটি পাতা ও তুলসি দুটো পাতা বেটে, তার সঙ্গে অল্প জল মিশিয়ে প্রতিদিন খেলে রক্তচাপ কমে৷ খালি পেটে সপ্তাহখানেক খেলেই এর উপকারীতা বোঝা যাবে৷

৮.হলুদ

অনেকেই হয়ত জানি না এর আরেক নাম কারকিউমিন। এর অনেক গুলো গুণের মধ্যে একটি হল এটি সারা শরীরের ইনফ্লামেসন দূর করে। ইনফ্লামাসনের প্রাথমিক কারণ হিসেবে হাই কোলেস্টেরল এমনকি হাই ব্লাড প্রেশারকে দায়ি করা হয়। হলুদ ব্লাড ভেসেল শিথিল করে। এটি ব্লাড থিনার-ও, যা হাইপারটেনশনের সাথে ফাইট করার আরেকটি শক্তিশালী হার্ব।

৯.মিষ্টি আলু

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এই সবজিটি খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে পটাশিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা ব্লাড প্রসোরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

১০.কালোজিরা

কালজিরার তেলে এমন কিছু উপাদান আছে যেগুলো কোলেস্টেরল আর ব্লাড প্রেশার কমাতে সাহায্য করে বলে প্রমাণিত হয়েছে। প্রতিদিন এক চা চামচ করে কালোজিরার তেল খান। যদি এই তেল খেতে আপনার খারাপ লাগে তাহলে জুস অথবা চায়ের সাথে মিশিয়েও খেতে পারেন।

১১.লেবুর রস

হাইপারটেনশনের কন্ট্রোলের জন্য নিয়মিত লেবুর রস পানের অভ্যাস করুন। লেবু ব্লাড ভেসেল নরম করে এবং তাদের রিজিডিটি দূর করে। ফলে হাই ব্লাড প্রেশার কমে যায়। উপরন্তু লেবুতে থাকা ভিটামিন বি এর জন্য হার্ট ফেলুয়ার এর চান্স কমে যায়। যাদের হাই ব্লাড প্রেশার আছে তারা দিনে কয়েকবার লেবুর পানি পান করবেন।

১২.জাম

এই ফলটির শরীরে থাকা ফ্লেবোনয়েড নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই উপাদানটি শরীর থেকে টক্সিক উপাদানদের বের করে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে ব্লাড প্রেশারকে নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে।

হস্তমৈথুন  ছাড়বেন কিভাবে ?
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট এবং ওজন বৃদ্ধি - Baby Weight Chart and Weight Gain During Pregnancy
আক্কেল দাঁত কি ? আক্কেল দাঁত হলে কি করবেন?
জরায়ু ইনফেকশন এর লক্ষণ ও করণীয়
এলকুলি সিরাপ এর উপকারিতা
মেলাটোনিন হরমোন বৃদ্ধির উপায় - Ways to increase the hormone melatonin
পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় - Home remedies for ankle pain relief
জ্বরের ঔষধের নাম ও খাওয়ার নিয়ম - Names and rules of consumption of fever medicine
জ্বর ও মাথাব্যাথায় যে দোয়া পড়বেন - Prayers for fever and headache
গর্ভাবস্থায় মাথা ঘোরানো প্রতিরোধে করণীয় - Things to do to prevent dizziness during pregnancy