পর্ন মুভি দেখার ক্ষতিকর দিক

পর্ন মুভি দেখার ক্ষতিকর দিক

পর্ন বর্তমান সময়ের এক মহামারি সমস্যা। বেখেয়ালে এতে আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত লাখো তরুণ। তবে আশার কথা হলো, পর্নের বিরুদ্ধে বৈজ্ঞানিক গবেষণা যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা। তবুও অনেকেই পর্ন আসক্তি থেকে মুক্তির যাত্রা শুরু করার প্রেরণা পায় না। তাদের জন্যই এ আর্টিকেল।

নারীরা ঘৃণার চোখে দেখে

পর্ন আসক্ত পুরুষদেরকে সাধারণ রুচিশীল নারীরা হীনমন্য ও চরিত্রহীন মনে করে। নারীরা যখন জানতে পারে যে তার পরিচিত কোনো পুরুষ নিয়মিত পর্ন ছবি দেখে তখন তার সম্পর্কে খারাপ মনোভাব জন্ম নেয় এবং তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। বিশেষ করে আমাদের সমাজের নারীরা তো অবশ্যই।

রুচিবোধের অবনতি

নিয়মিত পর্ন ছবি দেখতে দেখতে পুরুষদের রুচিবোধের অধঃপতন হয়। পর্ন সিনেমার অনৈতিক ও যৌনতা নির্ভর বিকৃত সম্পর্ক গুলোকেই তখন ভাল লাগতে শুরু করে। ফলে যারা নিয়মিত পর্ন সিনেমা দেখে তাদের রুচি বিকৃত হয়ে যায়। জীবনের স্বাভাবিক সম্পর্কগুলোতেও নিজের অজান্তে বিকৃতি খোঁজে তাদের চোখ।

ফ্যান্টাসির দুনিয়া

নিয়মিত পর্ন ছবি দেখতে দেখতে বাস্তব জগৎ ছেড়ে পুরুষরা ফ্যান্টাসি দুনিয়াতে চলে যায়। অর্থাৎ বাস্তব জীবনেও তারা পর্ন সিনেমার মত সঙ্গী আশা করে এবং তারা স্বপ্ন দেখে তাদের যৌন জীবনটাও পর্ন সিনেমার মতই হবে। তাই ফ্যান্টাসি দুনিয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে তারা বাস্তব জীবনের সুখ শান্তি হারায়। সাধারণ নারীদেরকে তখন আর তাদের যথেষ্ট মনে হয় না।

নিঃসঙ্গতা

অতিরিক্ত পর্ন নেশার কারণে সাধারণ নারীদের প্রতি বিতৃষ্ণা চলে আসে পর্ন আসক্তদের। তারা পর্ন সিনেমার নায়িকাদের মত আকর্ষনীয় দেহ ও চেহারার নারী খোঁজে বাস্তব জীবনে। কিন্তু পর্ন সিনেমার নায়িকাদের সৌন্দর্য মূলত কৃত্রিম সৌন্দর্য, তাদের আচরণও কৃত্রিম। মেকআপ, লাইট ও ক্যামেরার কারসাজিতে তাদেরকে মোহনীয় ভাবে দেখানো হয় যা বাস্তব জীবনে খুঁজে পাওয়া সম্ভব না। তাই পর্ন আসক্তরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিঃসঙ্গ থেকে যায় অথবা সংসারে অসুখী হয়।

শারীরিক ক্ষতি

নিয়মিত পর্ন ছবি যারা দেখে তাদের মধ্যে হস্ত মৈথুনের অভ্যাসটাও বেশি থাকে। অতিরিক্ত হস্ত মৈথুন করার ফলে তাদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বাড়ে এবং যৌন জীবনে নানান সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।

ভয়াল নেশা

পর্ন সিনেমার নেশা মাদকের নেশার মতই ভয়ংকর। মাদকাসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যেমন কষ্টসাধ্য, পর্ন আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়াও দূরহ ব্যাপার। পর্ন আসক্তির কারণে পরিবারের সাথে সম্পর্ক খারাপ হয়, পড়াশোনায় ক্ষতি হয় এমনকি নিজের মধ্যেও হীনমন্যতার সৃষ্টি হয়।

সামাজিকভাবে হেয় হতে হয়

পর্ন আসক্তদের মোবাইলে, কম্পিউটারে, পেন ড্রাইভে সব খানেই পর্ন ছবি থাকে অধিকাংশ সময়। অনেক সময় এসব অনৈতিক বিষয়গুলো পরিবারের কাছে ধরা পড়ে যায়। ফলে পরিবারের কাছে হেয় হতে হয় পর্ন আসক্তদেরকে। এছাড়াও সমাজের মানুষজন, বন্ধুবান্ধব বিষয়টি জেনে গেলে তাদের কাছেও হেয় হতে হয় তাদেরকে।

বিপরীত লিঙ্গের প্রতি অশ্রদ্ধা

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরুষ (পড়ুন অশিক্ষিত পুরুষ) অশ্রদ্ধার চোখে দেখতে শুরু করছে মেয়েদের। ভাবছে নারী বোধহয় শুধুই ভোগ্যবস্তু। শুধু সহবাসের জন্য নারীর প্রয়োজন। সমাজে নারীর গুরুত্ব হারাচ্ছে। ফলে বাড়ছে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির মতো ঘটনা। যে দেশে অশিক্ষিতের সংখ্যা বেশি, সেখানে এর কুফলই বেশি আসবে, তাতে সন্দেহ কী। কারণ ভালোমন্দ বুঝে নেওয়ার ক্ষমতা এই অশিক্ষিত শ্রেণির মধ্যে নেই। অথচ হাতে আছে সিডি, ডিভিডি, পেন-ড্রাইভ, ইন্টারনেট।

মস্তিষ্ক গ্রহণ ক্ষমতা

পর্ন দেখলে প্রথমেই তার প্রভাব পড়ে দর্শকের মস্তিষ্কে। অতিরিক্ত পর্ন দেখা আসক্তির পর্যায়ে চলে যায়, যা মাদকাসক্তির চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।নিয়মিত ও অতিমাত্রায় পর্ন দেখলে ধীরে ধীরে আপনার একাধিক অভ্যাস পরিবর্তন করে দিতে পারে। একটা সময় হ্যালুসিনেশনের মাত্রা বেড়ে যায় এতে মস্তিষ্কের গ্রহণ ক্ষমতা কমে যেতে পারে।

স্মৃতিশক্তি 

পর্ন দেখার প্রবণতা আপনার স্মৃতিশক্তির ওপর খুবই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ফলে অনেক কিছুই আপনি খুব সহজেই ভুলে যেতে শুরু করবেন।

পর্নোগ্রাফি আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

পর্নোগ্রাফি অনেকসময় জীবনকে দুর্বিষহ করে ফেলে। মানুষ নিজেকে অপরাধী ভাবতে থাকে কিন্তু এ থেকে বের হয়ে আসতে পারে না।

অন্য কারও সাথে শেয়ার করতেও দ্বিধাবোধ করেন। এ আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে আপনি নিম্নোক্ত উপায় অবলম্বন করে দেখতে পারেন:

আপনার সকল ডিভাইসে ইলেকট্রনিক পর্ণো এবং বুকমার্ক মুছে ফেলুন।

আপনার সব হার্ড-কপি পর্ণো ডিসকার্ড করুন।

পাসওয়ার্ড না দিয়ে অন্য কেউকে ইলেকট্রনিক ডিভাইসে অ্যান্টি-পর্ণ সফটওয়্যার ইনস্টল করিয়ে নিতে পারেন যেন চাইলেও পাসওয়ার্ডের অভাবে আপনি সাইটগুলোতে ঢুকতে না পারেন।

একটি পরিকল্পনা করুন – যখন আপনি তীব্র আসক্তি অনুভব করবেন তখন কি করলে আপনি এটি ভুলে থাকতে পারবেন সেসব কাজের একটি তালিকা তৈরী করুন।

যখন আপনার পর্নো দেখতে মন চাইবে, নিজেকে মনে করিয়ে দিন কিভাবে এটি আপনার জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। চাইলে লিখেও রাখতে পারেন।

বিশেষ কোন বিষয় বা মুহূর্তে যদি আসক্তি আসে তবে সেগুলো এড়ানোর চেষ্টা করুন।

যোগব্যায়াম, মেডিটেশন করুন নিয়মিত। নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।

সর্বোপরি নিজের নৈতিক জ্ঞানের উন্মেষ ঘটান যেন আপনার মন শান্ত থাকে।

ব্লাড ক্যান্সারের কারণ ও এর প্রতিকার - Causes and treatment of blood cancer
পানিশূন্যতা দূর করার উপায় - Ways to cure dehydration
গর্ভাবস্থায় পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ - Symptoms of water loss during pregnancy
আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা- home treatment for dysentery
গর্ভাবস্থায় জরায়ুতে ব্যথার কারণ - Causes of uterine pain during pregnancy
বাংলাদেশের সেরা নিউরোলজিস্ট ডাক্তার
মেয়েদের ব্রেস্ট ব্যথার কারণ - Causes of breast pain in girls
জরায়ুতে টিউমারের লক্ষণ - Symptoms of Uterine fibroids
মেয়েদের ব্রেস্ট বড় করার উপায় - Ways to increase breast size for girls
পোড়া ক্ষত শুকানোর ঔষধ