হাত-পা ঝিনঝিন করার কারণ  - Causes tingling in hands and feet
Causes tingling in hands and feet

হাত-পায়ে ঝি ঝি বা অবশ হয়ে যায় কেন? ধরলে যা করবেন

হাতে বা পায়ে ‘ঝিন ঝিন ধরা’ বিষয়টি নিয়ে আমরা সবাই পরিচিত। সাধারণত পা বা হাতের ওপর লম্বা সময় চাপ পড়লে সাময়িক যে অসাড় অনুভূতি তৈরি হয় সেটিকেই আমরা ঝি ঝি ধরা বলে থাকি। শরীরের কোথাও অনেকক্ষণ চেপে বসলে কিছুক্ষণ পর জায়গাটি অবশ অবশ লাগে, অস্বস্তিকর পিনপিন করে, মনে হয় যেন ওই অংশে কাঁটা ফুঁড়ছে। ইংরেজিতে একে বলে pins and needles।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এমন পিনপিন কাঁটা কাঁটা হওয়াকে বলে Paraesthesia। এটি কিছুক্ষণের জন্য থাকে, আবার নিজে নিজেই চলে যায়। তাই অনেকে একে temporary paraesthesia বলে।

যে কারণে হয়

১) কখনও সখনও দীর্ঘক্ষণ হাতের উপর ভর দিয়ে শোয়া বা পায়ের উপর পা তুলে রাখার ফলে অবশ হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। তবে এমনটা বার বার তহে থাকলে এবং শরীরের অন্যান্য অংশেও হলে সতর্ক হওয়া জরুরি। মাল্টিপল স্ক্লেরোসিসের কারণে এমনটা হতে পারে। এই সমস্যায় স্নায়ুতন্ত্রের মায়োলিন সিথ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। তাই দেশি না করে চিকিৎসকের কাছে যান।

২) যে সব মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাঁদের অনেকের মধ্যেই পেরিফেরাল স্নায়ু রোগের প্রকোপ লক্ষ্য করা যায়। পেরিফেরাল স্নায়ুর সমস্যায় পায়ের পাতা ঘন ঘন অবশ হয়ে যেতে পারে। পরবর্তীকালে এই অবশ ভাব শরীরের উপরের অংশেও ছড়িয়ে পড়ে।

৩) স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ফলে হাত, পা ও শরীরের অন্যান্য অংশে তীব্র ব্যথা এবং জ্বালা হতে পারে। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, নিউরালজিয়ার কারণে এমনটা হতে পারে। শরীরের যে কোনও অংশেই এই সমস্যা হতে পারে এই রোগ। বিশেষ করে কোনও সংক্রমণের কারণে বা বয়সের কারণে হতে পারে এই রোগ।

৪) মস্তিষ্কে যদি রক্ত সরবরাহ পর্যাপ্ত না হয় সে ক্ষেত্রে স্ট্রোক হয়। বিশেষ করে রক্তনালী কোনও কারণে বাধাপ্রাপ্ত হলে এমন হয়। স্ট্রোকের প্রথম লক্ষণ হল বাঁ হাত অবশ হয়ে যাওয়া যা ক্রণশ হাতের তালু পর্যন্ত ছড়িয়ে পরে।

৫) ‘লাইম ডিজিজ’-এর কারণে শরীরের কোনও কোনও অংশ অবশ হয়ে যেতে পারে। এটি একটি পতঙ্গবাহিত রোগ যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে। এ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হচ্ছে জ্বর, ক্লান্তি, ঘাড়, পেশী ও জয়েন্টের ব্যথা ইত্যাদি। সময় মতো এর চিকিৎসা করা না হলে স্নায়ুর আরও নানা জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৬) চিকিত্সা বিজ্ঞানে এর নাম ‘সিস্টেমিক ডিজিজ’। এই রোগে কিডনি-সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হতে পারে। সিস্টেমিক ডিজিজে হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যেতে পারে। এর জন্য ক্যান্সার সৃষ্টিকারী টিউমার বা স্নায়ুর নানা সমস্যা হতে পারে। প্রাথমিক ভাবে সিস্টেমিক ডিজিজে হাত, পা-সহ শরীরের একাধিক অংশ অবশ হয়ে যেতে পারে।

৭) ফাইব্রোমায়ালজিয়ার মতো সমস্যার কারণে হাত, পা-সহ শরীরের একাধিক অংশ অবশ হয়ে যেতে পারে। এটি মস্তিষ্কের এমন একধরণের সমস্যা যার কারণে হলে স্মৃতির সমস্যা, পেশীতে ব্যথা বা ঘনমেজাজ হারানোর সমস্যা হতে পারে।

লক্ষণ

হাত-পা ঝিন ঝিন করা, হাত-পা অবশ হয়ে আসা, হাত-পায়ের অনুভূতি কমে যাওয়া, ব্যথা করা, হাত-পায়ের শক্তি কমে যাওয়া।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি রোগ নির্ণয়ে রোগীর ইতিহাস শুনতে হবে এবং ভালো করে রোগীকে শারীরিক পরীক্ষা করাতে হবে। ডায়াবেটিস, থাইরয়েড হরমোন ও প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে নার্ভ কন্ডাকশন পরীক্ষা করা যেতে পারে।

করণীয়

* স্নায়ুকে চাপমুক্ত করুন: সংশ্লিষ্ট স্নায়ু থেকে চাপ দূর করলে ঝি ঝি অনুভূতি চলে যাবে। স্নায়ুকে চাপমুক্ত করতে শারীরিক ভঙ্গিতে (যেমন- পায়ের ওপর পা তুলে বসে থাকা অথবা বাহুতে ভার দিয়ে ঘুমানো) পরিবর্তন আনুন। অর্থাৎ যদি মনে হয় যে শারীরিক ভঙ্গির কারণে স্নায়ুতে চাপ পড়েছে, তাহলে পজিশন পরিবর্তন করুন।

* নড়াচড়া করুন: হাঁটলে অথবা নড়াচড়া করলে রক্তপ্রবাহ বাড়বে এবং ঝি ঝি ধরার অস্বস্তিকর অনুভূতি চলে যাবে। পায়ের ওপর পা তুলে বসে থাকলে ধীরে ধীরে হাঁটার চেষ্টা করুন অথবা হাতের ভার সরিয়ে নাড়াচাড়া করুন। এর ফলে রক্তপ্রবাহের স্বাভাবিকতা ফিরে এসে কয়েকমিনিটের মধ্যে ঝি ঝি অনুভূতি দূর হয়ে যাবে।

* হাতকে মুষ্টিবদ্ধ করুন ও খুলুন: আপনার হাতে বা বাহুতে ঝি ঝি ধরলে হাতকে মুষ্টিবদ্ধ করুন ও খুলুন। প্রক্রিয়াটি কিছুসময় পুনরাবৃত্তি করুন। এই ব্যায়ামে দ্রুত রক্তপ্রবাহ বাড়বে ও স্নায়ুগুলো প্রশান্ত হবে। ঝি ঝি অনুভূতি তাড়াতে ব্যায়ামটি বেশ কার্যকর।

* পায়ের আঙুলকে উপর-নিচ করুন: আপনার পায়ে ঝি ঝি ধরলে পায়ের আঙুলগুলোকে নাড়াচাড়া করলে (বিশেষ করে উপর-নিচ করলে) উপকার পেতে পারেন। পায়ের আঙুলগুলোকে উপর-নিচ করলে রক্তপ্রবাহের স্বাভাবিকতা ফিরে আসে অথবা রক্ত চলাচল বাড়ে। এটা পায়ের অসাড় অবস্থা দূর করে।

* মাথাকে এক পাশ থেকে আরেক পাশে ঘোরান: আপনার হাতের বাহুতে ঝি ঝি ধরলে মাথাকে এক পাশ থেকে আরেক পাশে ঘোরালে অস্বস্তিকর অনুভূতি উধাও হবে। তবে কাজটা করতে হবে ধীরে ধীরে। এতে ঘাড়ের স্নায়ুগুলো থেকে চাপ কমে যায়, যার ফলে বাহুর অসাড়তা দূর হয়ে যায়।

সঠিকভাবে ব্লাড প্রেসার মাপার নিয়ম
পিরিয়ডের সময় প্যাড ব্যবহারের নিয়ম
যৌনরোগ থেকে সুরক্ষিত থাকতে যা করবেন - What to do to protect yourself from sexually transmitted diseases
মেয়েদের সাদা স্রাব বন্ধ করার উপায়
হাত পা ঘামা থেকে মুক্তির উপায় - Ways to get rid of sweaty hands and feet
মেরুদন্ডের হাড় ক্ষয়ের লক্ষণ প্রতিকার - Symptom Remedies for Osteoporosis of the Spinal Cord
নাক কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, বরিশাল-Best ENT Specialist Doctor in barisal
ঘুম না হলে কী করণীয়
দাঁতের কালো দাগ দূর করার উপায় - Ways to remove black stains on teeth
পিল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা