বর্ষায় সর্দি-কাশি দূর করার সহজ উপায় কি কি
বর্ষার এই স্যাঁতস্যাঁতে সময়টাতেই সর্দি কাশির সমস্যা বেশি হয়। হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজেও হতে পারে এই সমস্যা। নাক দিয়ে ক্রমাগত পানি পড়া, নাক বন্ধ, হাঁচি-কাশি, মাথাব্যথা, জ্বর, কাঁপুনি এর প্রধান লক্ষণ। আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন, ঘাম ও হঠাৎ হঠাৎ রোদের তাপ, সবকিছু মিলিয়ে প্রকোপটা এই সময়টাতে বেশি হয়। চলুন জেনে নিই, হঠাৎ সর্দি কাশি হলে করণীয়-
আদা-চা
আদা চায়ে রয়েছে অনেক উপকারী পদার্থ। এক্ষেত্রে আদার মধ্যে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি গুণ রয়েছে। এই কারণে এই চা খেতে পারলে আপনার থেকে দূরে থাকে বিভিন্ন সংক্রমণ।
কাশির অন্যতম প্রাচীন ঘরোয়া প্রতিকার হলো মধু। এটি প্রাকৃতিক প্রদাহবিরোধী হিসেবে কাজ করে। এর অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল প্রভাব আছে, যা ক্ষুদ্রতর ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাল সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরাও মধু খেতে পারে। তবে এটি দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের দেওয়া উচিত নয়। মধু খাওয়ার মুখের লালা গ্রন্থিগুলো বেশি পরিমাণে লালা উৎপাদন, যা গলার শুষ্কভাব দূর করে। এর ফলে কাশিও কমে যায়।
কাশি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রতিদিন এক চামচ মধু অন্তত তিনবার খেতে হবে। আপনি এক কাপ গরম পানিতে বা ভেষজ চায়েও মধু মিশিয়ে দিনে দুবার পান করতে পারেন।
আপেল সিডার ভিনেগার
গলার মিউকাসকে ভাঙতে ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ ঠেকাতে আপেল সিডার ভিনেগার খুবই উপকারী। সর্দি-কাশির সমস্যা থাকলে প্রতিদিন উষ্ণ পানিতে দু'চামচ আপেল সিডার যোগ করে খালি পেটে খাবেন। ফলে ঠাণ্ডাজনিত অসুখের হাত থেকে অনেকটাই রক্ষা পাবেন।
দুধ
দুধ একটি সুষম খাদ্য। এই পানীয় মুখে তুলে নিতে পারলেই অনেক সমস্যার হয়ে যায় সমাধান। এবার দুধের সঙ্গে সামান্য যদি হলুদ মিশিয়ে নেন তবে দেখবেন ইমিউনিটি অনেকটা বেড়েছে।
বাষ্প নেওয়া
সর্দি-কাশির সমস্যা কমাতে বাষ্প নিতে পারেন। এর ফলে গলার শুষ্কভাব কমবে পাশিপাশি গলা ব্যথা ও কাশির তীব্রতাও কমতে শুরু করবে। পানিতে সামান্য টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে দিলে আরও ভালো ফল পাবেন। গরম পানি একটি পাত্রে রেখে, তার উপরে সামান্য ঝুঁকে আপনার মাথার উপর একটি তোয়ালে দিন। পাঁচ মিনিটের জন্য বাষ্প গ্রহণ করুন। এ ছাড়াও আপনি স্টিম বাথ নিতে পারেন।
লেবুর মধ্যে রয়েছে অনেকটা পরিমাণে ভিটামিন সি। এই ভিটামিন শরীরে ইমিউনিটি বাড়াতে পারে। তাই প্রতিটি মানুষের উচিত এই ভিটামিন খাওয়া। এক্ষেত্রে লেবুতে রয়েছে অনেকটা পরিমাণে ভিটামিন সি।
আর সর্দি কাশির মতো অসুখকে দূর করতে অব্যর্থ ওষুধ তুলসী পাতা। সর্দি মানেই গলা খুশখুশ। ৩ থেকে ৪টা তুলসী পাতা চিনি ও গোলমরিচের সঙ্গে করে মুখে রাখুন। উধাও হবে অস্বস্তি।
এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে, যা সর্দি-কাশির মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া এতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়া, অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিফাংগাল উপাদান রয়েছে, যা সংক্রমণ রুখতে পারে। চাইলে চার-পাঁচ কোয়া রসুন ঘিয়ে নেড়ে নিয়ে গরম থাকতে থাকতে খেয়ে নিন। ঘিয়ে ভাজা রসুন সুপের সঙ্গে মিশিয়ে খেলেও আরাম পাবেন।
রাতে ঘুমানোর সময় মোজায় পেঁয়াজ ঢুকিয়ে ঘুমালে সর্দির হাত থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। পেঁয়াজে উপস্থিত নানা উপাদান সর্দি থেকে স্বস্তি দেয়। পেঁয়াজ গন্ধ শুষে নিতে এবং বায়ুর গুণমান বৃদ্ধিতে সহায়ক। তবে কীটনাশক ও কেমিকেলের দিয়ে উৎপন্ন পেঁয়াজের পরিবর্তে অর্গ্যানিক পেঁয়াজ ব্যবহার করা উচিত।