হলিউডের সেরা ১০টি রোমান্টিক ছবি-Top 10 Hollywood Romantic Movies
হলিউডে অ্যাকশন, থ্রিলার ও হরর মুভির পাশাপাশি বক্স অফিস কাঁপিয়ে বেড়ায় রোমান্টিক ছবিগুলোও। বহু ছবি যুগে যুগে ভালোবাসার বার্তা দিয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে হলিউডে। তাদের ভিড়ে চলচ্চিত্রের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সাইট দ্য ইন্টারনেট মুভি ডাটাবেজ (আইএমডিবি) সেরা ১০ ছবির তালিকা করেছে।
সেখানে ঠাঁই হয়নি জর্জ ক্যামেরনের কালজয়ী চলচ্চিত্র টাইটানিক। যার গল্পে প্রেম ও প্রেমের জন্য বিসর্জন কাঁদিয়েছিলো কোটি কোটি দর্শককে। তালিকায় উঠে আসা সেরা ১০টি ছবি নিয়ে সাজানো এই আয়োজন-
১.দি নোটবুক ( The Notebook )
দি নোটবুক ২০০৪ সালের একটি রোমান্টিক মুভি । নিকোলাস স্পার্কস রচিত একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন নিক ক্যাসাভেটস । মুভিটিতে নোয়া এবং অ্যালে নামের দুজন তুরুণ-তরুণির ১৯৪০ সালের দিকে প্রেমে পড়ার গল্প । যেখানে অ্যালে আর নোয়ার গল্প মিসেস হেমিল্টন নামের একজন বৃদ্ধাকে শোনায় যিনি আলজেইমার রোগে আক্রান্ত । গল্পটার বিবরণে থাকে অ্যালে অনেক বড়োলোকের আদুরে মেয়ে , ছুটিতে গ্রামে বেড়াতে এসে পরিচয় হয় সাধারন ছেলে নোয়ার সাথে । একসাথে সময় কাটাতে কাটাতে ভালোলাগা এবং ভালবাসা । দুজনের এই ভালবাসায় একসময় বাধা আসে যার কারণে অ্যালেকে চলে যেতে হয় শহরে । তারপর কেটে যায় অনেক গুলো বছর । অ্যালের জীবনে নতুন করে আসে ভালোবাসা । কিন্তু নোয়া কোনদিনও ভুলতে পারেনি অ্যালেকে । ১০ বছর পর আবার দেখা হয় নোয়া আর অ্যালের । মুভিটির শেষে নিশ্চিত চোখের পানি আটকাতে পারবেন না ।
আইএমডিবি রেটিং– ৭.৮/১০
২.মি বিফোর ইউ ( Me Before You )
জোজো ময়েসের উপন্যাস Me Before You কে ২০১৩ সালে চলচ্চিত্রে রূপান্তরের ঘোষণা দেন প্রযোজক মাইকেল ওয়েবার । পরিচালকের প্রথম ছবি ছিল এটি । ছবিটির কাহিনী আবর্তিত হয় এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের পুত্র উইলিয়াম ট্রেনরকে ঘিরে যে তিন বছর আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় অচল হয়ে পড়ে । দুর্ঘটনার জন্য সে মৃত্যুর কাছাকাছি সময়ে চলে আসে , হাতে আছে আর মাত্র ছয় মাস । এদিকে উইলিয়ামের দেখাশোনার জন্য তার মা লুইসা ক্লার্ককে ঠিক করে । এমনিতেও লুইসাকে প্রথম প্রথম সহ্য করতে পারে না উইলিয়াম কারণ তার হাঁটাচলার অক্ষমতার ব্যাপারটা সে পছন্দ করে না । কিন্তু ধীরে ধীরে লুইসার যত্ন আর পাগলামির প্রেমে পড়ে যায় উইলিয়াম । এ দিকে উইলিয়াম যেহেতু মরণের দিকে ধাবিত হচ্ছে সেহেতু তার মা চায় মৃত্যুটা যেন আনন্দের সাথে হয় । তাই ছেলেকে সুইজারল্যান্ডে পাঠাতে চায় তার । কিন্তু উইলিয়াম কিছুতেই রাজী হয় না । ব্যাপারটা কোন ভাবে জেনে যায় লুইসা । আর এটাকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয় ।
আইএমডিবি রেটিং- ৭.৪/১০
৩.ফ্রেন্ডস উইথ বেনিফিটস ( Friends with Benefits )
ফ্রেন্ডস উইথ বেনিফিটস মুভিটি পরিচালনা করেছেন উইল গ্লুক এবং গল্পের লেখক ছিলেন কিথ মেরিম্যান । ২০১১ সালে ফ্রেন্ডস উইথ বেনিফিটস মুভিটি মুক্তি পায় । সংক্ষেপ একটু কাহিনী যেনে নেয়া যাক । নিউইয়র্ক সিটির একজন নির্বাহী জেমি রেলিস , যিনি তাদের ম্যাগাজিনে একটি পদের জন্য সাক্ষাৎকার নিতে ডিরেক্টর ডিলান ফ্রান্সিস হারপার জুনিয়রকে নিয়োগ করেন । ডিলান নিউইয়র্কে আসার পর জেমির সাথে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠে । তারা সম্পূর্ণরূপে নৈমিত্তিক যৌনতা করে । শুধু মানসিক শান্তির জন্য তারা একসাথে থাকতো । একসময় তারা বিচ্ছেদ হয় এবং পরে বুঝতে পারে যে তারা দুজন দুজনকে ভালোবাসে ।
আইএমডিবি রেটিং- ৬.৫/১০
Friends with Benefits Movie IMDb Link
৪.ফাইভ ফিট এপার্ট ( Five Feet Apart )
ফাইভ ফিট এপার্ট মুভিটি পরিচালনা করেছেন জাস্টিন বালদনি । এই গল্পের লেখক ছিলেন মিক্কি ডাচ্রি এবং টোবিয়াস আইকোনিস । ২০১৯ সালে ফাইভ ফিট এপার্ট মুভিটি মুক্তি পায় । সতের বছর বয়সী স্টেলা তার বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে একটি সিস্টিক ফাইব্রোসিস রোগী হিসেবে দিন কাটায় । তার জীবন রুটিন , সীমানা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণে ভরা , যা সবই পরীক্ষা করা হয় যখন সে উইলের সাথে দেখা করে , একজন অসম্ভব আকর্ষণীয় কিশোর যার একই অসুস্থতা রয়েছে । যদিও নিষেধাজ্ঞাগুলি নির্দেশ করে যে তাদের অবশ্যই তাদের মধ্যে একটি নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে । তাদের সংযোগ যেমন তীব্র হয় , তেমনি নিয়মগুলি জানালার বাইরে ফেলে দেওয়ার এবং সেই আকর্ষণকে আলিঙ্গন করার প্রলোভন দেখায় । যেমন ভালোবাসার কোন সীমানা নেই ।
আইএমডিবি রেটিং-৭.২/১০
Five Feet Apart Movie IMDb Link
৫.দি ফল্ট ইন আওয়ার স্টার্স ( The Fault in Our Stars )
দি ফল্ট ইন আওয়ার স্টার্স মুভিটি পরিচালনা করেছেন জোশ বুনে । ২০১৪ সালে দি ফল্ট ইন আওয়ার স্টার্স মুক্তি পায় । অসাধারণ মুভি এবং অসাধারণ এক লাভ স্টোরি । এক কিশোরি হাযেল গ্রেস যার ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে । কিন্তু সে একটা এক্সপেরিমেন্টাল ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে তখন বেঁচে যায় । তাঁর ডাক্তারের পরামর্শে একটা ক্যান্সার সাপোরটিং গ্রুপে যায় । আর তাঁর সাথে দেখা হয় অগাস্টাস এর সিথে যার কিনা একটি পা নেই । আর শুরু হয় তাঁদের বন্ধুত্ব । আস্তে আস্তে দুজনেই প্রেমে পড়ে । শেষে এই মুভি আপনাকে কান্না করাবে ।
আইএমডিবি রেটিং- ৭.৭/১০
The Fault in Our Stars Movie IMDb Link
৬.আ ওয়াক টু রিমেম্বার ( A Walk to Remember )
আ ওয়াক টু রিমেম্বার মুভিটি পরিচালনা করেছেন অ্যাডাম শংকম্যান । এতো সুন্দর একটি গল্পের লেখক ছিলেন নিকোলাস স্পার্ক । ২০০২ সালে মুভিটি মুক্তি পায় । ল্যান্ডন একজন উড়নচণ্ডী স্বভাবের ছেলে । স্কুলের পপুলার ছেলেদের একজন । হৈ-হুল্লোর আর মজা করে বেড়ানোই তার কাজ । অন্যদিকে জেমি স্কুলের সবচেয়ে ভদ্র মেয়ে । ধর্মের ব্যাপারেও অনেক রক্ষনশীল । স্কুলের ছেলেমেয়েরা সুযোগ পেলেই তাকে ক্ষেপাতে ভুল করেনা । দুজনের অবস্থা অনেকটা উত্তর আর দক্ষিন মেরুর মত । ল্যান্ডনের একটি অপকর্মের শাস্তি স্বরুপ তাকে স্কুলের পর কিছু কাজ করতে হয় । এর মধ্যে নাটকে অভিনয় করা অন্যতম । সারা দিন-রাত স্ক্রিপ্ট মুখস্ত করে ল্যান্ডল । নাটকের শেষের দিকে একটি চুমু খাওয়ার দৃশ্য আছে । ভালবাসা কখন , কোথায় , কিভাবে , কারসাথে হয়ে যাবে সেটা কেউই বলতে পারেনা । আর এর পরিণতিও কেউ জানেনা । নিজের অজান্তেই ল্যান্ডন ভালবেসে ফেলে জেমিকে । এই ভালবাসাই হয়তো ভবঘুরে স্বভাবের ল্যান্ডনকে সত্যিকারের মানুষে রুপান্তর করে । একসময় সম্পূর্ন ভিন্ন জগতের দুটি মানুষ কিভাবে যেন এক হয়ে যায় । কিন্তু নিয়তির পরিহাস , কাছে পেয়েও হারাতে হয় জিমিকে । মানুষটা হয়তো নেই , কিন্তু রয়ে যায় ভালবাসা নামের অদৃশ্য কোন এক মায়া ।
আইএমডিবি রেটিং- ৭.৩/১০
A Walk to Remember Movie IMDb Link
৭.ওয়ান ডে ( One Day )
ওয়ান ডে একটি রোমান্টিক ড্রামা চলচ্চিত্র যা লোন শেরফিগ পরিচালিত ডেভিড নিকোলসের একটি চিত্রনাট্য থেকে নির্মিত হয়েছিল । ২০১৪ সালে মুভিটি মুক্তি পায় । তাদের কলেজ স্নাতকের দিন একসাথে রাত কাটানোর পর ডেক্সটার এবং এমা প্রতি বছর একই তারিখে দেখানো হয় । ঐদিন তারা কখনো কখনো একসাথে ছিল আবার কখনো কখনো একসাথে ছিল না । এমা স্মার্ট কিন্তু সাফল্য তার জন্য দ্রুত আসে না , যেখানে ডেক্সটারের জন্য সাফল্য এবং মহিলারা খুব সহজেই আসে । বছরের পর বছর ধরে তারা আলাদা হয়ে যায় কারণ তাদের জীবন বিভিন্ন দিক নেয় । কিন্তু যখন তারা অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং তাদের জীবন আবার বিপরীত দিক নিতে শুরু করে , তখন এমা এবং ডেক্সটার দেখতে পান যে তারা একে অপরের সাথে সম্পর্কিত ।
আইএমডিবি রেটিং- ৭/১০
৮.এন্ডলেস লাভ ( Endless Love )
এন্ডলেস লাভ ২০১২ সালে মুক্তি পায় । ছবিটি পরিচালনা করেন শানা ফেস্ট । একটি বিশেষাধিকারী মেয়ে এবং একটি ক্যারিশম্যাটিক ছেলের গল্প যার তাত্ক্ষণিক আকাঙ্ক্ষার ফলে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় । বাবা-মা তাদের আলাদা রাখার চেষ্টা করে আরও বেপরোয়া করে তুলেছিলেন । ডেভিড প্রথমবারের মতো দশম শ্রেণীতে তাকে দেখার পর থেকেই জেডের প্রতি ভালোবাসা ছিল । উচ্চ বিদ্যালয় শেষ হওয়ার সাথে সাথে , ডেভিড তার সাথে কখনই কথা বলেনি যতক্ষণ না তার পরিবার একসাথে হয় । একসময় তারা প্রেমে পাগল হয়ে যান । এমন একটি ভালবাসা যা কেবল বাবা-মা তাদের আলাদা করার চেষ্টা করার সাথে সাথে আরও শক্তিশালী হয় ।
আইএমডিবি রেটিং- ৬.২/১০
৯.এবাউট টাইম ( About Time )
এবাউট টাইম মুভিটি পরিচালনা করেছেন রিচার্ড কার্টিস এবং গল্পের লেখক ছিলেন রিচার্ড কার্টিস । ২০১৩ সালে এবাউট টাইম মুক্তি পায় । ২১ বছর বয়সে টিম লেক আবিষ্কার করেন যে তিনি সময়মতো ভ্রমণ করতে পারেন । আরেকটি অসন্তোষজনক নববর্ষের পার্টির রাতে টিমের বাবা তার ছেলেকে বলেন যে তার পরিবারের পুরুষদের সবসময়ই ক্ষমতা ছিল সময়ের মধ্যে ভ্রমণ করতে । টিম ইতিহাস পরিবর্তন করতে পারে না , কিন্তু সে তার নিজের জীবনে যা ঘটেছে এবং ঘটেছে তা পরিবর্তন করতে পারে । তাই সে তার পৃথিবীকে একটি ভাল জায়গা বানানোর সিদ্ধান্ত নেয় । টিম অবশেষে সুন্দর কিন্তু অনিরাপদ মেরির সাথে দেখা করে । তারা প্রেমে পড়ে । তারপর শুরু হয় সুন্দর ও অসুন্দর কিছু সময় ।
আইএমডিবি রেটিং- ৭.৮/১০
১০.দি ভাও ( The Vow )
দি ভাও মুভিটি পরিচালনা করেছেন মাইকেল সুসি । এত সুন্দর একটা গল্পের লেখক ছিলেন স্টুয়ার্ট সেন্ডের । ২০১২ সালে দি ভাও মুভিটি মুক্তি পায় । লিও এবং পেইজ একটি দম্পতি যারা বিয়ে করেছেন । একটি দুর্ঘটনার পর , পেইজ অজ্ঞান হয়ে যায় এবং যখন সে জেগে ওঠে সে লিওকে মনে রাখে না । তার বাবা-মা যাকে সে আর লিও একত্রিত হওয়ার পর থেকে দেখেনি তারা এসে তার সাথে দেখা করে । লিও পেইজে তার সাথে বাড়িতে নিয়ে আসতে চায় কিন্তু তার বাবা-মা চায় পেইজ তাদের সাথে যাবে । যেহেতু সে কিছুই চিনতে পারে তাই সে তার বাবা-মায়ের কাছে যায় । লিও আবার তাকে আদর করে এবং তাকে জেতার চেষ্টা করে ।
আইএমডিবি রেটিং- ৬.৮/১০