হলিউডের সেরা ১০ সিনেমা-Top 10 Hollywood Movies
সিনেমা জগতে হলিউডের ভূমিকা আজও অগ্রপথিকের। আজ হলিউডের চলচ্চিত্র ধারা এমন এক আকাশচুম্বি পর্যায়ে পৌছে গেছে, যেখানে কোনটার থেকে কোনটা ভালো, তা নির্বাচন করা বেশ কষ্টকরই হয়ে পড়ে। কিন্তু চিরাচরিত নিয়মানুযায়ী একজন জিতলে অন্যজনকে হারতে হয়। সেই শর্ত মেনেই সারা বছর ধরে ক্রমাগত বক্সঅফিস হিট ছবিগুলোর মধ্য থেকে সেরা ১০টি বাছাই করে আলোতে আনার চেষ্টা করা হলো। তবে, কিছু কিছু সিনেমা এমন আছে, যেগুলোর কোনো প্রতিযোগিতায়ই অংশ নিতে হয় না। সেগুলো এমনিতেই শীর্ষে থাকে।
১.অ্যাভাটার -Avatar
অবতার ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া একটি বিজ্ঞানভিত্তিক কল্পকাহিনী। প্রখ্যাত পরিচালক জেমস ক্যামেরন ছবিটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন। মূল চরিত্রগুলোয় অভিনয় করেছেন স্যাম ওর্থিংটন, জোয়ি সালডানা, স্টিফেন ল্যাং, মিচেলে রড্রিগেজ, জোয়েল ডেভিড মুর, জিওভান্নি রিবিসি এবং সিগুর্নি উইভার৷ পটভূমি হলো ২২ শতকের মাঝামাঝি; যখন মানুষ আলফা সেনটাউরি তারা মন্ডলে একটি গ্যাসীয় গ্রহে মানুষের বসবাস উপযোগী উর্বর উপগ্রহ প্যানডোরায় আনঅবটেনিয়াম নামক একটি মূল্যবান খনিজ আহরণের জন্য খননকাজ শুরু করে৷ খনিজ উপনিবেশ এলাকার ক্রমাগত সম্প্রসারণের ফলে এ উপগ্রহের স্থানীয় অধিবাসী নাভিদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে; প্যানডোরা উপগ্রহের আদিবাসী এই নাভিরা অনেকটা মানুষের মত দেখতে ৷ প্যানডোরার এই আদিবাসীদের সাথে যোগাযোগের জন্য একদল গবেষক জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ারড নাভি ও মানুষের সংকর দেহ ব্যবহার করেন যা এই চলচ্চিত্রের নাম ৷
অ্যাভাটার চলচিত্রটির পটভূমি তৈরি হয়েছে একদল লোভী মানুষ আর নিরীহ প্যানডোরাবাসির মধ্যে এক অসম কিন্তু সাহসি যুদ্ধ নিয়ে।
কাহিনীর সূত্রপাত ২১৫৪ সালে, যখন আর.ডি.এ আনঅবটেনিয়ামের খোঁজে প্যানডোরা নামক পৃথিবীর মত এক গ্রহে গিয়ে মানুষ হাজির হয়। যার আবহাওয়া মানুষের নিঃশ্বাস উপযোগী নয়। এই গ্রহের অধিবাসীদের বলা হয় নাভি। নাভিরা তাদের গ্রহে খুব আনন্দেই বসবাস করছিল যতদিন পর্যন্ত না মানুষের অসাধু ইচ্ছা প্রকাশিত না হয়।
নাভিদের পরিবেশ সম্পর্কে ভালোভাবে জানার জন্য বিজ্ঞানীরা নাভিদের মত দেখতে কিছু দেহ তৈরি করলেন, যা কিনা যন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
২.স্পাইডারম্যান : নো ওয়ে হোম-spiderman: no way home
মার্ভেল কমিক্স চরিত্র স্পাইডারম্যানের চতুর্থ কিস্তি এটি। পরিচালনা করেছেন জন ওয়াটস। এতে স্পাইডারম্যানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন টম হল্যান্ড। তার চরিত্রের নাম পার্কার। এ ছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে ছিলেন যেনদায়া, জ্যাকব বাটালন, মারিসা টোমেই, জেমি ফক্স, বেনেডিক্ট কাম্বারব্যাচ এবং আলফ্রেড মোলিনা। আইএমডিবি রেটিংয়ে সিনেমাটি ১০-এর মধ্যে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানে রয়েছে এ সিনেমা।
৩.জুরাসিক ওয়ার্ল্ড ডোমিনিয়ন
জুরাসিক পার্ক ফ্র্যাঞ্চাইজির ষষ্ঠ ফিল্ম এবং জুরাসিক ওয়ার্ল্ড ট্রিলজির শেষ পর্ব জুরাসিক ওয়ার্ল্ড: ডোমিনিয়ন বক্স অফিসে জাদু দেখিয়েছে। কলিন ট্রেভরোর পরিচালনায় মাত্র ১৮৫ মিলিয়ন বাজেটে নির্মিত সিনেমাটি বক্স অফিসে ১ বিলিয়নের বেশি আয় করেছে। ১৯৯৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জুরাসিক পার্ক’ বক্স অফিসে ১.৩৩ বিলিয়নের বেশি সংগ্রহ করেছিল।
৪.ডিউন
এটি বিজ্ঞান কল্পকাহিনি ভিত্তিক একটি সিনেমা। পরিচালনা করেছেন ডিনিস ভিলেনিউভ, এরিক রথ ও জন স্পাইটস। ১৯৬৫ সালের ফ্র্যাঙ্ক হার্বার্ট-এর উপন্যাস ডিউন অবলম্বনে ‘ডিউন’ সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে। অভিনয় করেছেন জেনডিয়া, টিমটি শালামে, রেবেকা ফার্গুসন, অস্কার আইজ্যাকসহ অনেকে। আইএমডিবি রেটিংয়ে এ সিনেমা পেয়েছে ৮.২ পয়েন্ট।
৫.টপ গান: ম্যাভেরিক
২০২৩ সালের আয়ের তালিকায় শীর্ষ স্থানে রয়েছে টপ ক্রুজের ‘টপ গান: ম্যাভেরিক’। ১৯৮৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত টম ক্রুজের সুপারহিট চলচ্চিত্র টপ গানের সিক্যুয়েল এটি। দীর্ঘ ৩৬ বছর পর সিনেমাটির সিক্যুয়েল নিয়ে আসেন টম ক্রুজ। ১৭০ মিলিয়ন বাজেটের সাথে ফিল্মটি প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্রের তালিকায় ১১ তম স্থানে উঠে এসেছে। ১৯৮৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘টপ গান’এর বাজেট ছিল মাত্র ১৫ মিলিয়ন এবং বক্স অফিসে ৩৫৭ মিলিয়ন সংগ্রহ করেছে সিনেমাটি।
৬.নো টাইম টু ডাই
জেমস বন্ড সিরিজের সিনেমা এটি। বছরের অন্যতম আলোচিত সিনেমা। পরিচালনা করেছেন ক্যারি জোজি ফুকুনাগা ও মেট্রো গোল্ডউইন মেয়ার। এটি ড্যানিয়েল ক্রেগের বন্ড সিরিজের শেষ সিনেমা। এতে আরও অভিনয় করেছেন ক্রিস্টোফ ওয়াল্টজ, রামি মালেক, আনা ডি আরমাস, ডেভিড ডেনসিক, বিলি ম্যাগনুসেন, জেফরি রাইট, রালফ ফিয়েনস, লিয়া সিডক্স ও নাওমি হ্যারিস। আইএমডিবি রেটিং এ সিনেমা পেয়েছে ৭.৪।
৭.ডক্টর স্ট্রেঞ্জ ইন দ্য মাল্টিভার্স অফ ম্যাডনেস
মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্স এর অন্যতম জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জ; বরাবরই জনপ্রিয়তায় অন্যতম। ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জ ইন দ্য মাল্টিভার্স অফ ম্যাডনেস’ নিয়েও দর্শকদের প্রত্যাশা ছিল আকাশ সমান। বক্স অফিসে দর্শকদের প্রত্যাশার প্রতিফলনও ঘটেছে এমনই। স্যাম রাইমির পরিচালনায় ২০০ মিলিয়ন বাজেটের সিনেমাটি ৯৫৫ মিলিয়ন বাজেট আয় করে নেয়।
৮.মিনিয়নস : দ্য রাইজ অফ গ্রু
‘ডেসপিকেবল মি’ ফ্র্যাঞ্চাইজির পঞ্চম সিনেমাটি সিরিজের আগের সিনেমাগুলোর আয়ের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। ৮০ মিলিয়ন বাজেটের অ্যানিমেশন সিনেমাটি প্রায় ৯৩৯ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে! এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটি ২০১০ সাল থেকে মোট ৪.৬ বিলিয়নেরও বেশি আয় করেছে, যেখানে তাদের মোট বাজেট ছিল মাত্র ৩৭৯ মিলিয়ন ডলার।
৯.শাং-চি অ্যান্ড দ্য লেজেন্ড অব দ্য টেন রিংস
শাং-চি অ্যান্ড দ্য লেজেন্ড অব দি টেন রিংগস ২০২১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আমেরিকান সুপারহিরো মুভি। এটি মার্ভেল কমিক্স ভিত্তি করে নির্মিত একটি সিনেমা। শাং-চি চরিত্রকে কেন্দ্র করে এর গল্প। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন সিমু লিউ, আওকোয়াফিনা, মিশলে ইয়োহ, টনি চিউ ওয়ালি লিউং প্রমুখ। আইএমডিবি রেটিংয়ে এ সিনেমার পয়েন্ট ৭.৫।
১০.দ্য ফাদার
এটি হলিউডের কমার্শিয়ালের বাইরে ভিন্নধর্মী গল্পের সিনেমা। এক ধরনের অভিজ্ঞতা এবং অস্থির জগতের যাত্রা নিয়ে গল্প বলেছে এটি। বাস্তব এবং বিশ্বাসযোগ্য করেই সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে। এতে অভিনয় করেছেন অলিভিয়া কোলম্যান, অ্যান্টনি হপকিন্স, মার্ক গ্যাটিস, অলিভিয়া উইলিয়ামস, ইমোজেন পুটস, রুফাস সেওয়েল, আয়েশা ধরকার। আইএমডিবি রেটিংয়ে এ সিনেমার স্থান ৮.৩।