হলিউডের সেরা দশ থ্রিলার সিনেমা-Top 10 Hollywood Thriller Movies
বর্তমান সময়ে মুভি এবং টিভি সিরিজের প্রতি ঝুকছে সবাই। তা যদি হয় রোমাঞ্চকর এবং টুইস্ট এ ভরপুর থ্রিলার মুভি, তাহলে তো কথাই নেই। সাসপেন্স এবং রহস্য ঘেরা একটি থ্রিলার মুভি দেখে খুব ভালো ভাবেই ২-৩ ঘন্টা কাটানো যায়। থ্রিলার মুভি লাভারসদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি ১০ টি সেরা হলিউড থ্রিলার মুভির শর্ট রিভিউ। যা পেয়ে যাবেন যেকোনো স্ট্রিমিং সাইটে।
১.Inception-ইনসেপশন
মুভিটি হয়তো অনেকরই দেখা অথবা নাম শুনেছেন কিন্তু দেখেননি। ২০১০ সালে মুক্তি প্রাপ্ত এই অসাধারণ মুভিটির পরিচালক হলেন ক্রিস্টোফার নোলান। যিনি মানুষের মন নিয়ে খেলা করতে ভালবাসেন। তার পরিচালিত প্রতিটি মুভির একে অপরটির সাথে কোনো মিল নেই। ইন্সেপশন এর মতো আকশনধর্মী এবং সায়েন্স ফিকশনাল মুভি শুধু মাত্র তার দ্বারাই সম্ভব। মুভির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিশ্ববিখ্যাত অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও। ডম কোব (লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও) একজন চোর যা মানুষের স্বপ্নের মধ্যে প্রবেশ করার ক্ষমতা রাখে এবং তার এই দক্ষতা তাকে কর্পোরেট গুপ্তচরবৃত্তির জগতে তাকে অনেক বড় স্থানে নিয়ে গেছে। কিন্তু বিনিময়ে তাকে মূল্য দিতে হয়েছে অনেক। মুভিটি বাস্তবতা এবং স্বপ্নের যোগসূত্র। মুক্তি পাওয়ার পর মাত্র দুই সপ্তাহেই ছবিটি আয় করেছে ১৪৩ মিলিয়ন ডলার। ইতিমধ্যে এই ছবিটিকে বিখ্যাত নিউইয়র্ক টাইমস, ইএসএ টুডে, শিকাগো সান টাইমস, নিউইয়র্ক পোস্টের মতো সংবাদমাধ্যমগুলো বিশেষ স্বীকৃতি দিয়েছে। মুভিটি দেখে নিতে পারেন নেটফ্লিক্স এবং আমাজন প্রাইম স্ট্রিমিং সাইটে।
২. অরফান-Orphan
থ্রিলার মুভি দেখতে চান, তবে সেক্ষেত্রে টুইস্ট এবং রহস্য থাকবেনা তা কি হয়? যদি মুভিতে লিড কাস্ট থেকে থাকে অরফানেজ থেকে নিয়ে আসা একটি ৯ বছর বয়সী নিষ্পাপ মেয়ে তাহলে তো কথাই নেই।
তবে তার নিষ্পাপ চেহারা দেখে গলে পরলে চলবে না। অদ্ভুত কান্ডগুলি এই বাচ্চা মেয়েই ঘটায় যা আপনাকে মুহুর্তে মুহুর্তে আশ্চর্য করবে। কাহিনি এগিয়ে চলে এবং হতে থাকে রহস্যভেদ। ২০০৯ সালে মুক্তি প্রাপ্ত অরফান মুভিটি একটি সাইকোলজিকাল থ্রিলার হিসেবে দর্শকের কাছে পরিচিত, যা প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং এখনো মনে জায়গা তৈরি করে আছে। ২-৩ ঘন্টা কেটে যাবে সাস্পেন্সে। যারা এখনো দেখেননি এখনি দেখে ফেলতে পারেন নেটফ্লিক্স এ।
৩.দ্য সিক্সথ সেন্স-The Sixth Sense
হরর থ্রিলার সিনেমা হিসেবে জনপ্রিয় মুভি দ্য সিক্সথ সেন্স ১৯৯৯ সালে মুক্তি পায়। সিনেমায় একটি ছোট ছেলে যে কি না ভূত দেখতে পায়। যাদের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল এবং যারা মৃত্যুর পরেও শান্তি পায়নি সাধারণত তাদের দেখতে পেত। যাকে সিক্সথ সেন্স বলা যেতে পারে। সাইকাইট্রিস ড. ম্যালকম ব্যতীত ছেলেটি কাউকে তার এই ক্ষমতার কথা জানাতে ভয় পায়। কাহিনি এগিয়ে যেতে থাকে আরও গভীরে। সিনেমার শেষ ১০ সেকেন্ড বদলে দেয় পুরো প্রেক্ষাপট। ক্রিটিকদের কাছে যেমন এই সিনেমা হাই রেটিং পাওয়া তেমনি ব্যবসায়িক দিক থেকেও ব্লকবাস্টার। ছয়টি অস্কার নমিনেশন পাওয়ার পাশাপাশি ৪০ মিলিয়ন ডলার বাজেটের এই মুভি আয় করে ৬৭২ মিলিয়নেরও বেশি। সিনেমাটি রচনা এবং পরিচালনা করেছেন মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক এম নাইট শ্যামালান। আমাজন প্রাইম স্ট্রিমিং সাইটে সিনেমাটি দেখে নিতে পারেন।
৪.দ্য প্রেস্টিজ-The Prestige
২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই অসাধারণ রোমাঞ্চকর সিনেমাটি আপনাকে নিয়ে যাবে জাদুর দুনিয়ায়। সিনেমাটির গল্প হচ্ছে দুই জাদুকরকে নিয়ে। যারা বন্ধু থাকা সত্ত্বেও এক দুর্ঘটনার কারণে তাদের এই বন্ধুত্ব শত্রুতায় পরিণত হয়। তারপর থেকে তারা দুজনই দুজনকে ঘৃণা করে এবং পরবর্তীতে চলতে থাকে তাদের সেরা হওয়ার লড়াই। সাসপেন্সে ভরপুর এই সিনেমাটিতে রয়েছে একের পর এক টুইস্ট। সিনেমার কনসেপ্ট থেকে শুরু করে পুরোটাই এককথায় অসাধারণ। ছবিটি পরিচালনা করেছেন বিখ্যাত পরিচালক ক্রিস্টোফার নোলেন। সিনেমাটি আপনি আমাজন প্রাইমে দেখে নিতে পারবেন।
৫.দ্য ইল্যুশনিস্ট-The Illusionist
কাহিনির পটভূমি ১৯০০ সাল। ভিয়েনার এক ম্যাজিশিয়ান আইজেনহাইম প্রেমে পড়ে সোফির। যে কি না সামাজিক মর্যাদায় তার থেকে অনেক উঁচু অবস্থানের।
সোফির বিয়ে ঠিক হয় রয়্যাল হাউসের প্রিন্সের সঙ্গে। ইল্যুশনিস্ট কি পারবে পুরো দুনিয়ার সামনে কোনো ইল্যুশন তৈরি করতে? শেষ দৃশ্য দেখে বুঝতে পারবেন আপনি এতক্ষণ আসলেই ইল্যুশনের ভেতরে ছিলেন।
৬..দ্য সাইলেন্স অব দি ল্যাম্বস-The Silence Of The Lambs)
১৯৮৮ সালের দ্য সাইলেন্স অব দি ল্যাম্বস উপন্যাস হতে নির্মিত এই মুভিটি মুক্তি পায় ১৯৯১ সালে। এটি একটি জনপ্রিয় আমেরিকার হরর এবং ক্রাইম থ্রিলার। মুভিটিতে অপরাধ এবং ভৌতিক ধারার মিশ্রণ ঘটেছে। ছবিতে একজন মনোচিকিৎসক যে একাধিক খুন করেছেন এবং নরখাদক হিসেবে কারাগারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কাটছেন।এদিকে এফবিআই অনেকদিন ধরে খুনি বাফেলো বিলকে খুঁজছে। বিল খুন করার পর নিহতের গায়ের চাম,ড়া ছাড়িয়ে নিতেন। ৫ টি অস্কার, অনান্য ক্ষেত্রে ৫১টি নমিনেশনসহ ৬৩ টি পুরস্কারপ্রাপ্ত মাস্টারক্লাস। এন্থনি হপকিন্সের ডঃ হ্যানিবাল ক্যারেক্টারটি মনে কাটবে এই মুভিটি দেখলে। চমৎকার অভিনয় এবং গল্পের টুইস্ট পুরো ২ ঘন্টা মাতিয়ে রাখবে আপনাকে। আপনি নেটফ্লিক্স এ মুভিটি দেখতে পারবেন।
৭.প্রিমাল ফেয়ার-Primal Fear
১৮-১৯ বছর বয়সের এক ছেলের ওপর অভিযোগ উঠেছে সে নাকি তার আশ্রয়দাতা ধর্মযাজককে খুন করেছে। একজন নামকরা আইনজীবী ছেলেটির পক্ষে এই কেসটি হাতে নেন। যিনি সবসময় স্পটলাইটে থাকতে চান। ছেলেটি কি আসলেই খুন করেছে? নাকি সে নির্দোষ? কারণ খুনের পর পুলিশ একমাত্র ওই ছেলেটির রুমে অবস্থানের আলামত খুঁজে পেয়েছে। এসবের উত্তর জানার জন্য আপনাকে সিনেমার শেষ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আর অনেক টুইস্ট তো আছেই সিনেমাজুড়ে।
৮.মনটেজ-Montage
১৫ বছর আগে একটি ছোট মেয়েকে অপহরণ করা হয়। তারপর মেয়েটাকে মৃত উদ্ধার করা হয়। কিন্তু অপরাধীকে ধরা যায়নি। ১৫ বছরেও এই রহস্যের কূলকিনারা করা যায়নি। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। ১৫ বছর পর আবারও একটি শিশু অপহরণ হয়। ১৫ বছর আগে যেভাবে অপহরণ করা হয়েছিল সেই একইভাবে এবারও অপহরণ করা হয়। গোয়েন্দাদের পাশাপাশি মাঠে নামে সেই মা যে ১৫ বছর আগে তার মেয়েকে হারিয়েছিল। সে তার মতো করে রহস্য উদঘাটন করতে থাকে। পাশাপাশি গোয়েন্দাদের তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে থাকে। সিনেমাটির সবশেষে দেখা যায় চমক।
৯.ম্যাচস্টিক ম্যান-Matchstick Men
রয় এবং ফ্রাঙ্ক একে অন্যের পার্টনার। দুজন একই সঙ্গে কাজ করে। হঠাৎ একদিন রয়ের সঙ্গে অনেক আগে আলাদা হয়ে যাওয়া তার প্রাক্তন স্ত্রীর মেয়ের সঙ্গে দেখা হয়। প্রথমে বিরক্ত হলেও আস্তে আস্তে সন্তানের প্রতি ভালোবাসা সে বেশ উপভোগ করতে থাকে। কিন্তু একদিন এক বড় বিপজ্জনক কাজে সে মেয়েকে নিয়ে ফেঁসে যায়। তার মেয়ের জীবন হুমকির মুখে পড়ে শুধু তারই জন্য। আর এরপরই আসবে গল্পের টুইস্ট।
১০.দ্য এক্সাম-the exam
অসাধারণ একটা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার সিনেমা দ্য এক্সাম। সময় ৮০ মিনিট। একটি প্রশ্নের উত্তর। আর কিছু অদ্ভুত নিয়ম বলে পরিদর্শক চলে যায়। থেকে যায় পিস্তলধারী একজন গার্ড এবং সেই আটজন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার রুমটি একদম বন্ধ। কোনো জানালা নেই। খালি আছে প্রবেশ করার জন্য একটি মাত্র দরজা। আর রুমের ভেতর আটটি ডেস্ক ও চেয়ার রাখা। সেই ডেস্কের ওপর পরীক্ষার্থীদের নাম্বার আর একটি করে পেন্সিল রাখা। সব সিনেমার মতো এই সিনেমার শেষেও রয়েছে টুইস্ট।