প্রস্রাবের রাস্তায় চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় - Home Remedies for Vaginal Itching

যোনিতে চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়

যোনি চুলকানি অনেক অবস্থার একটি উপসর্গ হতে পারে. এটি যোনি শুষ্কতা বা রাসায়নিক বিরক্তির মতো কিছুর কারণে হতে পারে, যেমন সুগন্ধযুক্ত সাবানে পাওয়া যায়। ইস্ট ইনফেকশন, ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস, সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ইনফেকশন (STI) বা অন্য কিছুর কারণেও চুলকানি হতে পারে।

যোনিতে চুলকানির জন্য অনেক ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে, তবে আপনি যে প্রতিকারটি বেছে নেবেন তা চুলকানির কারণের উপর নির্ভর করবে।

যেসব কারণে হতে পারে চুলকানি

সাধারণ যেসব কারণে গোপন অঙ্গে চুলকানি হতে পারে সেগুলো হচ্ছে অ্যালার্জি। টাইট কাপড় পরিধান, কোন সাবান বা পারফিউমের রিঅ্যাকশন, ঘামে ভেজা কাপড় দীর্ঘ সময় পরে থাকা ইত্যাদি। এছাড়াও ইস্ট ইনফেকশন বা ব্যাকটেরিয়ার কারণেও হতে পারে এই চুলকানি।হতে পারে হরমোনের সমস্যা বা কোন ত্বকের রোগের কারণেও। মেনোপজের পরও গোপন অঙ্গে হতে পারে এমন চুলকানি। গোপন অঙ্গ যথেষ্ট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার পরও যদি প্রতিদিন ঘনঘন চুলকানি হতে থাকে যা মোটেও স্বাভাবিক নয়, তাহলে আপনার উচিত এখনোই সচেতন হয়ে যাওয়া।

ঘরোয়া উপায়

গোপন অঙ্গে চুলকানির সমস্যা নারী জীবনের অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি ঘটনা। বেশিরভাগ নারীই নজ্জায় এই বিষয়টি চেপে যান কিংবা মোটেও গুরুত্ব দেন না। যৌনাঙ্গের এই চুলকানির (itching) সমস্যার ঘরোয়া প্রতিকার সম্ভব। 

নিম পাতার ব্যবহার

নিম পাতাকে বলা হয় প্রকৃতিক ভেষজ। এর মধ্যে রয়েছে নানান প্রকারের ওষুধী গুনাগুন। বহুকাল আগ হতেই বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় এই নিম পাতাকে। আর তাই কারো যদি যোনিতে চুলকানি হয়ে থাকে তহলে নিম পাতা দিয়ে পানি গরম করে সেই পানি দ্বারা গোসল বা যোনি পরিস্কার করলে খুব তারাতাড়ি আপনার যোনির চুলকানি সেরে যাবে।

নারকেল তেলের ব্যবহার

বহুকাল আগ হতেই আমাদের দাদী নানীরা এই রোগের জন্য নারকেল তৈলের ব্যবহার করে আসছে ।  ২০১৬ সালের এক গবেষনায় প্রমানিত হয় যে নারিকেল তেল ক্যান্ডিডা অ্যালবিব্যান্স এর বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকরী। তাই যে কোন ধরনের ছত্রাকের আক্রমণ রোধে নারকেল তেলের ব্যবহার করা যাবে। এতে করে আপনার যোনির চুলকানি উপশম হবে।

লবণ-গরম পানি

গোসলের পানির সাথে গরম পানি ও ৪ টেবিল চামচ লবণ মিশিয়ে নিতে হবে। ওই জলে কমপক্ষে আধা ঘন্টা নিজেকে ভিজিয়ে রেখে বসে থাকতে হবে। এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে এই নোনা জল সংক্রমণকারী ব্যাকটেরিয়াগুলিকে বিনাশ করতে সক্ষম। এটিও যৌনাঙ্গের চুলকানি প্রতিরোধের একটি উপায়।

দই

Lactobacillus acidophilus নামে একধরনের ভাল ব্যাকটেরিয়া রয়েছে দইয়ে। আপনার শরীরকে যেকোনওরকম ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে। যেখানে খুব চুলকানি হচ্ছে বা সংক্রমণের প্রভাব পড়েছে, ২০-৩০ মিনিট দই লাগিয়ে রাখুন। তারপর ইষদুষ্ণ জলে ধুয়ে নিন। কাজ হবে। সরাসরি যৌনাঙ্গেও দই লাগাতে পারেন। দিনে দু’বার লাগান। ঘণ্টা দুই রেখে ধুয়ে নিন।

সীডার ভিনিগার

গরম জলের সাথে ২ টেবিল চামচ সীডার ভিনিগার মিশিয়ে যৌনাঙ্গ ভালভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। যৌনাঙ্গের চুলকানি থেকে নিস্তার পেতে সপ্তাহে দুইবার এই মিশ্রণের ব্যবহার করতে হবে।

ঘি

গরুর ঘি শরীরের অনেক রোগ দূর করতে সহায়ক। আয়ুর্দেব বিশেযজ্ঞদের মতে, গরুর ঘি হালকা গরম করে তুলায় ভিজিয়ে যৌনাঙ্গে রাতে দিয়ে রাখুন। সেই ঘি থেকে গোপনাঙ্গের শুষ্কতা দূর হবে। তবে অতিরিক্ত কোনও সমস্যায় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।

ঠান্ডা ঠান্ডা বরফ

চুলকানি থেকে তাৎক্ষনিক রেহাই এর জন্য বরফ বা বরফ-ঠান্ডা জলের সেঁক দিতে হবে। রাতের বেলা যখন এই চুলকানির তীব্রতা খুব বৃদ্ধি পায় তখন এই প্রতিকারটি খুবই কার্যকারী। নারী ও পুরুষ উভয়েরই ক্ষেত্রে এটি একটি দ্রুত প্রতিকার।

যৌনাঙ্গে চুলকানি প্রতিকার

১. ছত্রাকের সংক্রমণ হলে, এন্টিফাংগাল ওষুধ যেমন – ketoconazole, miconazole, clotrimazole, tioconazole, fluconazole ইত্যাদি ওষুধ খেতে হয় ৩ থেকে ৫ দিন। তবে কিছু ওষুধ একদিনেও কাজ করে। তাই ডোজ ও কতদিন খাবেন তা জানতে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এছাড়া lactobacillus acidophilus ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে এর সাথে।

২. ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে এন্টিব্যায়োটিক ড্রাগস খেতে হয়। যে এন্টিবায়োটিকই খান না কেন তা কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ দিন খাবেন।

৩. প্যারাসাইটের সংক্রমণ হলে Metronidazole খেতে পারেন। এছাড়াও vaginal clindamycin cream (clencin) or tinidazole এইগুলো যোনিতে লাগাতে হয়।

৪. বেশি চুলকানি হলে Lidocaine নামক জেল আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন। এতে সাময়িক আরাম হবে। কিন্তু পুরা সেরে যাবেনা। তাই ডাক্তারকে দেখাবেন।

৫. চুলকানি কমানোর জন্য এন্টিহিস্টামিন যেমন – fexofenadine, loratadine খেতে পারেন।

৬. এছাড়া প্রদাহ কমাতে steroid cream ব্যবহার করা যেতে পারে।

৭. মেনোপোজের পর চুলকানি হলে ইস্ট্রোজেন সাপোজেটরি যোনিপথে ব্যবহার করা যেতে পারে।

যৌনাঙ্গে চুলকানি প্রতিরোধ

বলা হয়ে থাকে যে কোন অসুখ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ করাই বেশি ভাল। সুতরাং এই রোগটি যাতে আপনার না হয় তাই আগেই সাবধান থাকুন ও নিচের কথাগুলো মেনে চলুন।

১. রঙীন ও বেশি সুগন্ধিযুক্ত টয়লেট টিস্যু ও সাবান যৌনাঙ্গে ব্যবহার করবেন না।

২. ফেমিনিন হাইজিন স্প্রে ও ডুশ ব্যবহার করবেন না।

৩. ভেজা কাপড় পরে বেশিক্ষণ থাকবেন না। গোসল বা ব্যায়ামের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভেজা কাপড়টি পাল্টে নিবেন। যারা সুইমিং পুলে সাঁতার কাটেন তাদের ক্লোরিনের কারণেও ইচিং হতে পারে , তাই সাবধান হন।

৪. আপনার যৌনাঙ্গ পরিষ্কার রাখুন সবসময়। আর প্রসাব বা পায়খানা করার সময় হাত দিয়ে সামনে থেকে পেছনে এই নিয়মে পরিষ্কার করতে হবে। খেয়াল রাখবেন পায়খানার রাস্তার জীবাণু যেন যোনিতে না লাগে।

৫. দই খান, এতে ল্যাকটোব্যাসিলাস নামক উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে।

৬. সুতির কাপড় দিয়ে তৈরি অন্তর্বাস বা পেন্টি পরুন। সিনথেটিক পেন্টি পরবেন না।

৭. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

৮. ওজন কমান।

বাংলাদেশে টেস্টটিউব বেবি ও এর ব্যয় - Test tube baby in Bangladesh and its cost
পেটের দূষিত বায়ু দূর করার উপায় - Ways to get rid of polluted stomach air
যৌন স্বাস্থ্য ভালো রাখবেন যেভাবে
গর্ভপাত বা মিসক্যারেজের কারণ - Causes abortion or miscarriage
গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাদ্য-Nutritious food during pregnancy
ইবনে সিনা হাসপাতালের ঠিকানা ও ফোন নম্বর
ঘুম না হলে কী করণীয়
হামদর্দ নিশাত ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
পিরিয়ডের রক্তের রং জানান দেবে স্বাস্থ্যের অবস্থা
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি হলে করণীয় - What to do in case of excessive vomiting during pregnancy