
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়-University of Chittagong
সংক্ষিপ্ত নাম: চবি
ধরন: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, সহ-শিক্ষা
স্থাপিত: ১৮ নভেম্বর ১৯৬৬
অধিভুক্তি: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
আচার্য: রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ
উপাচার্য: শিরীণ আখতার
শিক্ষায়তনিক: ব্যক্তিবর্গ ৮৭২
প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ ৩১১ (পুরুষ ২৭৭, নারী ৩৪)
শিক্ষার্থী: ২৭,৫০০ (ছাত্র ১৮০০০, ছাত্রী ৯,৫০০)
ঠিকানা: ফতেহপুর, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম, ৪৩৩১, বাংলাদেশ ২২.৪৭১০০২১° উত্তর ৯১.৭৮৮৪৬৯৩° পূর্ব
শিক্ষাঙ্গন: ২,১০০ একর (৮৫০ হেক্টর)
ওয়েবসাইট: www.cu.ac.bd
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে অবস্থিত বাংলাদেশের সরকারি বহু-অনুষদভিত্তিক গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়। এটি ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলায় স্থাপিত হয়। এটি দেশের তৃতীয় এবং শিক্ষাঙ্গণ আয়তনের দিক থেকে দেশের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৯ সালের হিসাবে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২৭,৫০০ শিক্ষার্থী এবং ৮৭২ জন শিক্ষক রয়েছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পূর্বে এই বিশ্ববিদ্যালয় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেছিল। সে সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেছিল।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অর্ন্তভূক্ত রয়েছে। চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার। এখানে রয়েছে চট্টগ্রামের সর্ববৃহত বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষার্থী শিক্ষাগ্রহণ ও অধ্যাপনা করেছেন যার মধ্যে ১ জন নোবেল বিজয়ী এবং একাধিক একুশে পদক বিজয়ী অর্ন্তভূক্ত রয়েছেন। ২০২০ সালের হিসেবে, দেশে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৯ম এবং বৈশ্বিক অবস্থান ৩১০১ তম।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার (১৪ মা) উত্তরে হাটহাজারী থানার ফতেহপুর ইউনিয়নের জঙ্গল পশ্চিম-পট্টি মৌজার ২,১০০ একর (৮৫০ হেক্টর) একর পাহাড়ি এবং সমতল ভূমির উপর অবস্থিত। পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন ছিল ১,৭৫৩.৮৮ একর (৭০৯.৭৭ হেক্টর), যা পরবর্তীতে ২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রায় ৯ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সীমানা প্রাচীর নিমার্ণের মাধ্যমে বর্ধিত করা হয়। ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষাঙ্গণ আয়তনের দিক থেকে দেশের সর্ববৃহৎ এই বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রম শুরু হয়।
কীভাবে যাবেন
চট্টগ্রাম মহানগরীর অক্সিজেন মোড় থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরত্ব ১২ কিলোমিটার।
সড়কপথে
রুট ১: চট্টগ্রাম নগরীর নিউ মার্কেট মোড় থেকে হাটহাজারীগামী দ্রুতযান স্পেশাল সার্ভিস বাসে করে সরাসরি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়া যায়। এই বাস-গুলো নিউমার্কেট - টাইগারপাস মোড় - জিইসি - ২ নং গেইট - অক্সিজেন - বায়েজিদ রোড় হয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অতিক্রম করে।
রুট ২: নিউমার্কেট মোড় থেকে ৩ নাম্বার বাস যোগে নিউ মার্কেট - কাজীর দেউড়ী - মেহেদী বাগ - প্রবর্তক মোড় - পাঁচলাইশ - মুরাদপুর - অক্সিজেন মোড় যায়। অক্সিজেন মোড় যাওয়ার পর বিকল্প গাড়ীর সাহায্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়া যায়।
রুট ৩: চট্টগ্রাম শহরের অক্সিজেন মোড় এলাকা থেকে বাস বা সিএনজি চালিত অটোরিক্সা যোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়া যায়।
এছাড়াও আরও বিভিন্ন রুটে বাস/সিএনজি চালিত যানবাহন যোগে বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়া যায়।
রেলপথে
চট্টগ্রাম শহরের চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন (বটতলি রেলওয়ে স্টেশন নামেও পরিচিত) অথবা ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেনে বিনামূল্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া যায়। ট্রেনগুলো বটতলি রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রেলওয়ে স্টেশন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রেলওয়ে স্টেশন থেকে বটতলি রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত নির্ধারিত সময়সূচী অনুযায়ী যাতায়াত করে।
যা দেখার আছে
সবুজ পাহাড়ে ঘেরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমি। শহরের কোলাহল আর যান্ত্রিকতা থেকে দূরে অবস্থিত আয়তনের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় এ ক্যাম্পাস যেন প্রকৃতির কোলে গড়ে উঠা এক অপরূপ ও অনন্য নৈস্বর্গ। দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় এ বিদ্যাপীঠ যেন প্রকৃতি আর মানব প্রাণের মেলবন্ধন। সবুজ বৃক্ষসারির উপর উড়ন্ত বিচিত্র রঙের হরেক রকম পাখি, সবুজ পাহাড়ের কোলে থাকা হরিণ, অজগর কিংবা বিচিত্র আর দুর্লভ প্রাণীর জীবন্ত জাদুঘর চবি ক্যাম্পাস। ঝুলন্ত সেতু, ঝর্ণাধারা, উদ্ভিদ উদ্যান, জাদুঘর, রহস্যময় চালন্দা গিরিপথ এবং সুবিশাল মাঠ এ সবকিছুই উপভোগ চবি ক্যাম্পাসে।
খাওয়া দাওয়া
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যে কোন রেস্তোরাঁয় সুলভ মূল্যে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ভাতঘর, ঢাকা হোটেল, মওয়ের দোকান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার উল্লেখযোগ্য কিছু রেস্তোরাঁ। এছাড়া চট্টগ্রাম শহরে এসেও খাওয়া দাওয়া করতে পারেন।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেনের সময়সূচী
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম শহরের অতি নিকটে হওয়ায় শহরের যে কোন মানের হোটেলে রাত্রি যাপন করা সম্ভব। নীচে কয়েকটি বাজেট হোটেলে নাম ঠিকানা দেয়া হলোঃ
১. হোটেল প্যা রামাউন্ট, স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম। ভাড়াঃনন-এসি সিঙ্গেল ৮০০ টাকা, ডাবল ১৩০০ টাকা, এসি ১৪০০ টাকা ও ১৮০০ টাকা ।
যোগাযোগ : ০৩১-২৮৫৬৭৭১, ০১৭১-৩২৪৮৭৫৪।
২. হোটেল এশিয়ান এসআর, স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম। ভাড়া : নন এসি : ১০০০ টাকা, নন এসি সিঙ্গেল। এসি : ১৭২৫ টাকা ।
যোগাযোগ: ০১৭১১-৮৮৯৫৫৫।
৩. হোটেল সাফিনা, এনায়েত বাজার, চট্টগ্রাম। একটি পারিবারিক পরিবেশের মাঝারি মানের হোটেল । ভাড়া : ৭০০ টাকা থেকে শুরু । এসি ১৩০০ টাকা ।
যোগাযোগ: ০৩১-০৬১৪০।
৪. হোটেল নাবা ইন, রোড ৫, প্লট-৬০, ও আর নিজাম রোড, চট্টগ্রাম। যারা নাসিরাবাদ/ও আর নিজাম রোড এলাকায় থাকতে চান তাদের জন্য আদর্শ । ভাড়া : ২৫০০/৩০০০ টাকা ।
যোগাযোগঃ০১৭৫৫ ৫৬৪৩৮২
৫. হোটেল ল্যান্ডমার্ক, ৩০৭২ শেখ মুজিব রোড, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম। ভাড়া-২৩০০/৩৪০০ টাকা যোগাযোগ: ০১৮২-০১৪১৯৯৫, ০১৭৩১-৮৮৬৯৯৭।