আমতলীতে আউশের বাম্পার ফলন দাম কম থাকায় দিশেহারা কৃষকরা
“কত কষ্ট হইর‌্যা এই বচ্ছর আউশ ধান দিছি, ধান ভালোই অইছে কিন্তু আডে ধানের দাম কোম। কি হরমু অনেক টাহা লোকসান দিতে অইবে। ধার হইর‌্যা জমি চইছি, কিদ্ধা হেই ধার টাহা দিমু কইতে পারি না”। এ কথাগুলো বলেছেন আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের বেতমোর গ্রামের কৃষক বসির ও আবদুস কুদ্দুস

হায়াতুজ্জামান মিরাজ,আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।


“কত কষ্ট হইর‌্যা এই বচ্ছর আউশ ধান দিছি, ধান ভালোই অইছে কিন্তু আডে ধানের দাম কোম। কি হরমু অনেক টাহা লোকসান দিতে অইবে। ধার হইর‌্যা জমি চইছি, কিদ্ধা হেই ধার টাহা দিমু কইতে পারি না”। এ কথাগুলো বলেছেন আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের বেতমোর গ্রামের কৃষক বসির ও আবদুস কুদ্দুস। 

 
বরগুনার আমতলীতে আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলন হওয়ায় আশাবাদী হলোও  বাজারে ধানের দাম কম থাকায় দুচিন্তায় কৃষকরা। কৃষকরা জানান, ধানের দাম কম থাকায় লাভবান হওয়ায় সম্ভবনা নেই। একর প্রতি উৎপাদন খবর ২২-২৫ হাজার টাকা। ওই জমিতে উৎপাদিত ফসলের বিক্রয় মূল্য ১৫-২০ হাজার টাকা। একর প্রতি কৃৃষকের লোকসান ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা।  


উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, এ বছর আমতলীতে আউশ ধান চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়ছিল ১০ হাজার ৫০০ হেক্টর। ওই লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধানের আবাদ হয়। লক্ষমাত্রার চেয়ে ২ হাজার হেক্টর জমিতে বেশী আউশ চাষাবাদ হয়েছে। আউশ ধান চাষের উপযুক্ত সময় মধ্য বৈশাখ মাস থেকে শুরু করে ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। বীজতলা থেকে শুরু করে পাঁচ মাসের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল ধানের ফলন আসে। শ্রাবন মাসের শেষ দিকে কৃষকরা ধান কাটা শুরু করেছে। উচ্চ ফলনশীল জাতের বিরি-৪৮, বিরি-২৭, বিআর-২৬ ও বাউ- ৬৩ ধান চাষ করছে কৃষকরা।একর প্রতি উৎপাদন লক্ষমাত্রা দের মেট্রিক টন। 

এ সময় কৃষকরা ধান কাটায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আউশের বাম্পার ফলন হলেও বাজারে ধানের দাম কম থাকায় একর প্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হবে কৃষকদের। বাজারে প্রতিমণ ধান ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ধানের দাম কম থাকায় দুচিন্তায় কৃষকরা। কৃষকরা জানান, জমির বর্গামূল্য, চাষাবাদ, রোপন, কীটনাশক নিড়ানি, বীজের মূল্য ও ধান কাটায় এক একর প্রতি  জমির উৎপাদন খরচ ২২-২৫ হাজার টাকা। ওই জমিতে ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৩২-৩৫ মণ। বাজারে প্রতিমণ ধান ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে ওই জমিতে আয় হবে ১৫-২০ হাজার টাকা। এতে একর প্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। কৃষকরা আরও জানান, টাকা ও শ্রম বিনিয়োগ করে যা আয় হবে তা দিয়ে পোষায় না। উত্তরাঞ্চলের মিল ও দক্ষিণাঞ্চলের অটো রাইস মিল মালিকরা ধান ক্রয় না করায় বাজারে ধানের দাম কমে গেছে। এদিকে আমতলী খাদ্য গুদামের বোরো সংগ্রহে অভিযানে ১ হাজার ৪০ টাকা মণ ধরে ৬৫০ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের বরাদ্দ রয়েছে। তারা এরমধ্যে  ৩০০ মেট্রিক টন শুকনা ধান ক্রয় করেছে। কিন্তু সরকারী মূল্যে ধান ক্রয়ের প্রভাব বাজারে পরছে না।


বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, উপজেলার গুলিশাখালী, আঠারোগাছিয়া, কুকুয়া, হলদিয়া, চাওড়া, আমতলী সদর ও আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে আউশ ধান কাটছে কৃষকরা।


চাওড়া কাউনিয়া গ্রামের জিয়া উদ্দিন জুয়েল জানান, এ বছর ৫০ শতাংশ জমিতে বিরি-৪৮ জাতের আউশ ধানের চাষ করেছিলাম। উৎপাদন খবর হয়েছে ১২ হাজার টাকা। ওই জমিতে ১৬ মণ ধান পেয়েছি। বাজারে ৪৫০ টাকা মণ ধরে ৭ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি করেছি। তিনি আরও জানান বাজারে ধানের দাম কম থাকায় এ লোকসান গুনতে হলো। বাজারে ধানের দাম বেশী হলে তেমন লোকসান হতো না।
একই গ্রামের আলতাফ মুন্সি জানান, ৭৩ হাজার টাকা ব্যয়ে তিন একর জমিতে আউশ ধানের আবাদ করেছিলাম। ওই জমিতে ১০৫ মণ ধান পেয়েছি। বাজারে ধানের দাম কম থাকায় ওই ধান ৫৮ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। এতে লাভতো দুরের কথা ১৫ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে।


গুলিশাখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী গ্রামের আবদুল হক ঘরামী জানান, ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে প্রতিমণ ধান ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ধানের দাম কম থাকায় কৃষকদের লোকসান হবে।


মাষ্টার এন্টার প্রাইজ আড়তের ম্যানেজার মিঠু মিত্র বলেন, উত্তরাঞ্চলের মিল মালিকরা ধান ক্রয় না করায় বাজারে ধানের দাম কমে গেছে।  
ধান-চাল আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ বশির হাওলাদার বলেন, বাজারে দুই ধরনের ধান রয়েছে। প্রকার ভেদে ওই ধানের মণ ৪০০-৫০০ টাকা। বাজারে ধানের দাম কম থাকায় কৃষকদের লোকসান হবে। তিনি আরও বলেন, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, চাদপুর, দিনাজপুর, গাছুরিয়া মিল ও দক্ষিনাঞ্চলের পাঁচটি অটো রাইস মিল মালিকরা ধান ক্রয় করতো। এখন তারা ধান ক্রয় না করায় বাজারে ধানের দাম কমে গেছে।


আমতলী খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা রবীন্দ্র নাথ বলেন, বোরো সংগ্রহ অভিযানে ১ হাজার ৪০ টাকা মণ দরে শুকনো ৬৫০ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের বরাদ্দ পেয়েছি। এরমধ্যে ৩০০ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হয়েছে।


আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম বদরুল আলম বলেন, এ বছর আউশ ধানের ফলন ভালো। লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে ২ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ বেশী হয়েছে। তিনি আরও বলেন বাজারে ধানের দাম কম থাকায় কৃষকদের লোকসান গুনতে হবে।


শেখ হাসিনা সব সময় নড়িয়ার মানুষের সাথে আছেন
আমতলীতে পঞ্চম উপজেলা পরিষদের সম্বন্বয়সভা অনুষ্ঠিত
একই দিনে পাঁচটি বসতঘর নদী গর্ভে বিলীন নদী ভাঙনে
চরফ্যাসনে বিকাশে প্রতারক চক্রের প্রতারনায় মাদ্রাসা ছাত্রের আত্মহত্যা
আগামী কাল চরফ্যাসন আসছেন স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী
শেখ হাসিনা দুর্যোগকালীন সময়ে দুস্থ মানুষের পাশে দাড়িয়েছেনঃ এমপি জ্যাকব
চরফ্যাসনে আবাসন প্রকল্পের দরজা বিক্রির অভিযোগ দফাদার কামালের বিরুদ্ধে,চোরাই দরজা উদ্ধার
চরফ্যাসনে মাদরাসা ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু , ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর
চরফ্যাসনে কঠোর বিধিনিষেধ উপেক্ষিত, নেই স্বাস্থ্যবিধির বালাই
দুই সাংবাদিককে হত্যার হুমকি,সন্ত্রাসীদের জিম্মিদশায় অবরুদ্ধ পরিবার