চরফ্যাসনের ফাতেমা মতিন মহিলা মহাবিদ্যালয়ের উম্মুক্ত(বাউবি) বিএ/ বি,এস,এস পরিক্ষা কেন্দ্রে পরিক্ষায় অনৈতিক সুবিধা দেয়ার নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিলেও পরিক্ষার হলে সুবিধা না দেয়ায় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার বিকালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের এই হাতাহাতি ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। পরে উম্মুক্ত পরিক্ষার সমন্বয়কারী ওই কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হেসেনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।
জানাযায়,ফাতেমা মতিন মহিলা মহাবিদ্যালয়ে কেন্দ্রে চরফ্যাসন সরকারী কলেজ,বেগম রহিমা ইসলাম কলেজ ও ফাতেমা মতিন মহিলা মহাবিদ্যালয়ে ২০১৭ সনের ব্যাচে প্রায় ৮শ’ শিক্ষার্থী বিএ/ বিএসএস পরিক্ষায় ভর্তি হন। তারা ২০১৯সনে সেশন ফি পরিশোধ পুর্বক পরিক্ষার প্রস্তুতি নিলেও করোনা মহামারীর কারণে পরিক্ষা বন্ধ থাকে। ২০২১সনে সেই পরিক্ষা শুরু হলে তারা পরিক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে ফাতেমা মতিন মহিলা মহাবিদ্যালেয় ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী প্রথম ও দ্বিতীয় সেমিষ্টারে ৯৫ জন ও তৃতীয়- চতুর্থ সেমিষ্টারে ৮০ জন, ও পঞ্চম- ৬ষ্ঠ সেমিষ্টারে ১৩০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। শুক্রবার সকালে বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিকালে বিকালে রাস্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে ফাতেমা মতিন মহিলা মহাবিদ্যালয়ে ৯৫ জন শিক্ষার্থীসহ ওই কেন্দ্রে ১৬৩ জন শিক্ষার্থী পরিক্ষায় অংশগ্রহন করেন। শুক্রবার সকালে বাংলা দ্বিতীয় পত্র ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে ফাতেমা মতিন মহিলা মহাবিদ্যালয়ের পঞ্চম ও ৬ষ্ট সেমিষ্টারে বিএস/ বিএসএস পরিক্ষায় সুবিধা দেয়ার নামে পরিক্ষা কমিটির শিক্ষকরা অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিলেও শিক্ষার্থীদেরকে পরিক্ষার হলে কোন সুবিধা দেননি। পরিক্ষায় সুবিধা না পেয়ে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত টাকা নেয়ার প্রতিবাদ জানালে শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের হট্টগোল বাধে।
ফাতেমা মতিন মহিলা মহাবিদ্যালয়ের নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পরিক্ষার্থী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ফাতেমা মতিন মহিলা মহাবিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের পরিক্ষা কমিটির দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত দুই শিক্ষক প্রভাষক ফারুক রানা ও প্রভাষক মনিরুল ইসলাম পরিক্ষার হলে অনৈতিক সুবিধা দেয়ার নামে সেশন ফি ছাড়াও তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা আদায় করেন। এবং শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড আটকিয়ে আরো দুই থেকে তিন হাজার টাকা আদায় করেন। কিন্তু শুক্রবার বিকালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে পরিক্ষা দিতে গেলে হলে শর্তানুযায়ী সুবিধা দেয়া হয়নি। পরিক্ষার হলে সুবিধা না পেয়ে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার প্রতিবাদ করেন। এবং তারা ওই শিক্ষকদের বিচার চেয়ে অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ জানায়। তবে বর্তমান পরিক্ষা কমিটির দ্বয়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রভাষক খোরশেদ আলম জানান, পূর্বে উম্মুক্ত পরিক্ষা কমিটিতে দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত দুই প্রভাষক ফারুক রানা ও মনিরুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের পরিক্ষার হলে সুবিধা দেয়ার নামে সেশন ফির বাহিরে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিয়ে বর্তমান পরিক্ষা কমিটির সাথে সমন্বয় না করে সটকে পড়ায় এ ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে।
পরিক্ষা কমিটির সাবেক দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত অভিযুক্ত শিক্ষক প্রভাষক ফারুক রানা জানান, আমি উম্মুক্ত পরিক্ষা কমিটির দ্বায়িত্বে থাকাকালীন কোন শিক্ষার্থীর কাজ থেকে সেশন ফির বাহিরে অতিরিক্ত কোন টাকা হাতিয়ে নেইনি। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। শুক্রবার পরিক্ষার হলে কি হয়েছে তা আমার জানা নাই। ফাতেমা মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ও উম্মুক্ত পরিক্ষার সমন্বয়কারী মোহাম্মদ হোসেন জানান, পরিক্ষা স্বচ্ছ ও নকল মুক্ত হওয়ায় অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে শিক্ষার্থীরা দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়া বিষয়টি মৌখিক ভাবে তাকে জানিয়েছেন। এবং ভুক্ত ভোগী শিক্ষার্থীরা তাকে টাকার নেয়া বিষয় উল্লেখিত একটি তালিকা দিয়েছেন। অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের সদুত্তর দেননি তিনি।