শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গণমাধ্যম নিষিদ্ধ!

বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ডাঃ মো. বাকির হোসেন এবার নিজের  এবং তার সহযোগীদের অনিয়ম ও দুর্নীতি ধামাচাপ দিতে সংবাদকর্মীদের নিষেধাজ্ঞার চিঠি ইস্যু করেছে। 

গত ২৬ জুলাই অভুতপূর্ব এক চিঠির (যার স্বারক নং ৩৪২৮) মাধ্যমে জানানো হয়- বরিশাল প্রেস ক্লাব এবং বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটর সদস্য ব্যাতিত অন্যান্য গণমাধ্যম কর্মীদের শেবাচিমে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন। 

চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, যদি কোন সাংবাদিক তার অনুমতি ব্যাতিরেকে শেবাচিমে প্রবেশ করে কোন প্রকার তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করে, সেক্ষেত্রে ওই সাংবাদিককে তিনি পুলিশের হাতে তুলে দেবেন। 

এদিকে পরিচালকের এমন পত্রের খবরে বরিশাল প্রেস ক্লাব এবং রিপোর্টার্স ইউনিটি সহ বরিশালের সকল পিন্ট্র এবং ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকগন চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একইসাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে নিন্দার ঝড় ওঠেছে। 

এদিকে, পরিচালকের ওই চিঠির বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে জানতে পেরে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছেন।

মন্ত্রনালয়ের  জনস্বাস্থ্য ও বিশ্ব স্থ্যসেবা বিভাগের অতি:সচিব মো. হাবিবুর রহমান আগামী২৪ডটকমকে বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার পরিচালকের নেই।

তিনি আরও বলেন, সংবাদকর্মী দ্বারা জটিল কোন সমস্যা দেখা দিলে পরিচালক তার উপরস্থ্য কর্মকর্তাদের অবহিত করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করতে পারতো। তিনি সেটা না করে তথ্য অধিকার আইনের সুস্পষ্ট লংঘন করেছেন।

বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী নাসিরউদ্দিন বাবুল বলেন, প্রেস ক্লাবের অধীনে সব সাংবাদিকরা নয়, যাদের পত্রিকার পরিচয়পত্র রয়েছে তাদের প্রেস ক্লাব বেঁধে রাখার এখতিয়ার রাখেনা। আর পরিচালক যে চিঠি দিয়েছে তা তিনি দিতে পারেন না। তারপরও পরিচালকের পত্রের জবাব লিখিত আকারে দেয়া হয়েছে। 

বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল বিশ্বাস বলেন, শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিকদের নিয়ে ভুলের জগতে রয়েছে, তিনি যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন তা মোটেও তার এখতিয়ারভুক্ত নয়। অবিলম্বে তার চিঠি প্রত্যাহার করে নেয়া উচিত। 

বরিশাল মেট্রোপলিটন প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাজী আবুল কালাম আযাদ তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করে বলেন, ক্লাব এবং সাংবাদিককতা সম্পূর্ন ভিন্ন বিষয়, বরিশালে সাংবাদিকদের একাধীক সংগঠন রয়েছে। এর বাইরেও অনেক পত্রিকা এবং অনলাইন সংবাদপত্রের সাংবাদিক রয়েছে। এর ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার পিছনে পরিচালকের হীন উদ্দেশ্য রয়েছে। যা আড়াল করতেই তিনি এই পথ বেছে নিয়েছে, যা সাংবাদিকরা কোন ক্রমেই মেনে নিবেনা বলে তিনি মন্তব্য করেন।

শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পারিচালক ডা: মো. বাকির হোসেন আগামী২৪ডটকমকে বলেন, আপনাদের জ্বালায় আমি অতিষ্ঠ। আমি আমার কাজ করবো, না আপনাদের তথ্য দিবো। তিনি আবারও বরিশাল প্রেস ক্লাব ও রিপোর্টার্স ইউনিটির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের কথা বলেন।



যেকারণে সংবাদকর্মীদের উপর ক্ষীপ্ত পরিচালক

সম্প্রতি পরিচালকের একান্ত সহকারি সৈয়দ নান্নান এবং ব্লাড ব্যাংকের কর্মচারি আবুল কালাম ওরফে (পট) তাজুলের বিরুদ্ধে বরিশালের স্থানীয় এবং অনলাইন পত্রিকায় বিভিন্ন অনিয়ম এবং দুর্নীতি বিষয়ক তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশিত হয়। 

ওই সংবাদ প্রকাশের সময় পরিচালকের বক্তব্য নিতে গেলে তিনি তেলে বেগুনে জলে ওঠেন। ওই সংবাদ প্রকাশের একদিন পরেই পরিচালক প্রেসক্লাব এবং রিপোর্টার্স ইউনিটে পত্র প্রেরন করে। 

সুত্র মতে, ব্লাড ব্যাংকের কর্মচারি আবুল কালাম ওরফে (পট) তাজুলকে বহিরাগত থেকে স্থায়ী করে হাসপাতালে সাবেক পরিচালক সিরাজুল ইসলাম। এরপরেই তাজুল নিষিদ্ধ ফুট সাপ্লিমেন্ট স্পাইরন কোম্পানির ওষুধ বর্হিবিভাগের চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে লিখতে বাধ্য করে। এছাড়া ব্লাড ব্যাংকের রশিদ ছাড়া অর্থ উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া, কন্ট্রাক্ট সার্ভিসের (বাতিল) লোকদের দালাল সাজিয়ে তার নিজস্ব বহিরাগত ক্লিনিকে (ডক্টরর্স ডিজিটাল ল্যাব) প্রেরন করে সেখান থেকেও অর্থ হাতিয়ে নেয়া শুরু করে। 

এছাড়া হাসপাতালের সামনে মেহেন্দিগঞ্জ ফার্মেসি নামের একটি ওষুধের দোকান রয়েছে তাজুলের। সেখান থেকে ওষুধ কিনতে বাধ্য করা হয় রোগীদের। 

সম্প্রতি হাসপাতালে ১০ কোটি টাকা ব্যায়ে ক্রয় করা ডিজিটাল এক্স্ররে মেশিন বসানো নিয়ে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে পরিচালক। নিয়ম মাফিক মেশিনটি বসানোর পূর্বে রোগীর নিরাপত্তা বেষ্টনি দেয়ার কথা থাকলেও সেরকম কিছু না করে তরিঘরি করে মেশিনটি দিয়ে এক্স্ররে শুরু করে  ফলে এক রকম অজান্তেই রোগীরা মারাত্মক রেডিয়েশনের শিকার হচ্ছে। 

এসব বিষয়ে পরিচালকের নিকট জানতে বরিশালে কর্মরত সংবাদকর্মীরা চাইলেও তিনি একইভাবে তার দপ্তরে যোগাযোগ করার কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের তথ্য প্রদান করতে গিয়ে তিনি মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে উঠেছেন।

অপরদিকে, সম্প্রতি বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন চলাকালে রিটানিং অফিসার হাসপাতালের পরিচালককে প্রার্থীর পক্ষে হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারিদের নিয়ে সভা করলে তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রেরন করে। যা স্থানীয় এবং জাতীয় পত্রিকাসহ ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করায় তিনি গণমাধ্যমের উপর চরম ক্ষিপ্ত হয়। 

জনসেবা করতে জনপ্রতিনি হওয়ার প্রয়োজন নেই:আতিকুর রহমান
চরফ্যাসনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন
চরফ্যাসনে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় মামলা দায়ের
চরফ্যাসনের দুলারহাটে বসত ঘরে ঢুকে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের
জনসেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভূয়া রিপোর্ট প্রদান,৫০হাজার টাকা জরিমানা
চরফ্যাসনের দক্ষিণ আইচায় সুপারী চোর ধরে বিপাকে গৃহস্থ
চরফ্যাসনে পরিবার উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে দুস্থদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
চরফ্যাসনের চরকলমী ইউনিয়নের একই পরিবারে দুই কৃষককে কুপিয়ে জখম
চেয়ারম্যান বাজারে দোকান ভিটা দখলে নিতে সাইনবোর্ড ছিড়ার অভিযোগ
চেয়ারম্যানসহ ২ মেম্বার প্রার্থীকে কারণ দর্শাণোর নোটিশ দিয়েছেন রিটানিং অফিসার