সাহসী মানুষের গল্প – ২য় খন্ড Sahosi Manusher Golpo (2nd Part)


গ্রন্থের নামঃ সাহসী মানুষের গল্প ২য় খণ্ড

লেখক: মোশারাফ হোসেন খান

ভাষা: বাংলা (Bangla/Bengali)

ফরম্যাট: পিডিএফ (PDF)

প্রকাশক: আইসিএস পাবলিকেশন

প্রকাশকাল: প্রথম প্রকাশ, ডিসেম্বর ১৯৯৯

পৃষ্ঠা: ৭১

বিষয়: গল্প ও কবিতা, শিশু-কিশোর


ঘাসের কাফনে ঘুমান সৈনিক

অত্যন্ত সুন্দর, সুদর্শন একটি যুবক। নাম মুসয়াব ইবন উমাইর। মক্কার প্রতিটি মানুষ তাকে অবাক হয়ে দেখে।

মুসয়াব ছিলেন পরিবারের দারুণ আদরের ধন। চোখের মণি। মায়ের অর্থের কোনো অভাব ছিল না। সেই সম্পদ দুই হাতে খরচ করতেন মুসয়াব। তিনি ছিলেন যেমন সৌখিন, তেমনি রুচিবান।

ভোগ বিলাসের প্রতি ছিল তার বেজায় ঝোঁক । জীবনের প্রথম দিকে ।

খুব মূল্যবান পোশাক পরতেন মুসয়াব । আর শরীরে মাখতেন রাজ্যির যত্তসব দামী দামী খোশবু , সুগন্ধি । 


মুসয়াব রাস্তায় হাঁটার সময় আশপাশের সবাই খোশবুর গন্ধে চোখ বন্ধ করেই বুঝতে পারতো , ঐ যাচ্ছে , নিশ্চয়ই মুসয়াব যাচ্ছে !

রাসূলও ( সা ) দারুণ পছন্দ করতেন মুসয়াবকে ।

পরবর্তীতে রাসূলের ( সা ) সামনে মুসয়াবের প্রসঙ্গে কথা উঠতেই মৃদু হেসে বলতেন :

তিনি ‘ মক্কায় মুসয়াবের চেয়ে সুদর্শন এবং উৎকৃষ্ট পোশাকধারী আর কেউ ছিল না ' ।

আর তখনকার জ্ঞানীগুণী এবং ঐতিহাসিকরা সবাই এক বাক্যে বলতেন , মুসয়াব ছিলেন মক্কার সর্বোৎকৃষ্ট সুগন্ধি ব্যবহারকারী ।

শুধু সৌন্দর্যের দিক দিয়েই মুসয়াব আলোচিত ছিলেন না । তিনি আলোচিত ছিলেন ব্যক্তি হিসাবেও ।

মুসয়াবের বাইরের পোশাক - আশাক , দেহগঠন যেমন ছিল সুন্দর , দর্শনীয় — ঠিক তেমনি পরিচ্ছন্ন ছিল তার অন্তরটিও । একেবারে ধবধবে সাদা । সাদা আর কবুতরের হালকা পালকের মত নরম মসৃন ।

সেই জাহেলিয়াতের যুগেও মুসয়াবের অন্তরে লাগেনি এতটুকু কালিমার দাগ । শিরক ও কুফরীর ব্যাপারে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সতর্ক - সজাগ । 


তখনও দীনের দাওয়াত পাননি মুসয়াব ।

ততোদিনে তিনি অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন জাহেলী সমাজের কুফরী কার্যকলাপে ।

তিনি মুক্তির পথ খুঁজতে থাকলেন ।

একসময় তার সামনে হাজির হলো সেই কাংখিত মুক্তির পয়গাম । জ্বলে উঠলো তৃষিত চোখে আলোর ঝলক ।

ভোরের সোনালী সূর্যের আলোতে গোসল করলেন মুসয়াব ।

দুই হাত ভরে টেনে নিলেন ইসলামের শীতল - স্নিগ্ধ বাতাস । সেই প্রদীপ্ত সূর্য আর মুক্ত নির্মল বাতাসে আরও বিস্তৃত , আরও সুন্দর হয়ে উঠলো মুসয়াবের ভেতর , তার হৃদয় ।

ইসলাম গ্রহণের পর একেবারেই বদলে গেলেন মুসয়াব । 


তার সকল শ্রম , সকল চেষ্টা এখন ইসলাম প্রচারের জন্য ব্যয় করেন । আর সেই সাথে মুসয়াবের বাড়ে জ্ঞান , বুদ্ধি , সাহস এবং দৃঢ়তা ।

আগের চেয়ে এখন তিনি অনেক বেশি সাহসী এবং সংকল্পে সুদৃঢ় । এমনি সুদৃঢ় যে , মুসয়াবের সত্যের পথ থেকে টলাতে পারে এমন কোনো বিপদ , এমন কোনো ভয় পৃথিবীতে ছিল না । মা অত্যন্ত ভালোবাসতেন মুসয়াবকে ।

আর মুসয়াবও সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন মাকে । সেই সাথে ভয়ও করতেন । তার মা ছিলেন খুবই প্রতাপশালীনী । যেমন ছিল তার ব্যক্তিত্ব , তেমনি ছিল তার মেজাজ ।

মুসয়াব খুব ভাল করেই জানতেন তার মাকে । এজন্য ইসলাম গ্রহণের খবরটি তিনি প্রথম দিকে গোপন রাখতে চেয়েছিলেন ।

কিন্তু মুসয়াবের মত ব্যক্তির কোনো খবরই কি আর বেশিক্ষণ গোপন থাকে ?

মুহূর্তেই মক্কার অলিতে গলিতে পৌঁছে গেল তার ইসলাম গ্রহণের খবর । 


খবরটি শুনে সবাই তো হতবাক । বিস্ময়ে বিমূঢ় ।

এও কি সম্ভব !

তারা মনে করলো , আমরা শত চেষ্টা করেও মুসয়াবকে ফেরাতে পারবো না । একমাত্র পারবেন তার মা ।

তারা আর দেরি না করে খবরটি মুসয়াবের মায়ের কানে পৌঁছে দিল ।

মা তো শুনেই আগুন ! এতবড় কথা , এতবড় স্পর্ধা ! সমাজ - গোত্রের মুখে চুনকালি মাখিয়ে ছেলে কিনা ইসলাম গ্রহণ করলো ! আমাদের বিশ্বাস এবং ধর্মের বিপরীত চলে গেল !

জ্বলে উঠলেন মা । 

আর সেই আগুনে বাতাস দিতে থাকলো সমাজপতিরা । তাই তো , মুসয়ারের এতবড় দুঃসাহস ! আমাদের চৌদ্দপুরুষের ধর্ম , আচার - অনুষ্ঠানকে পায়ে পিষে সে কিনা কবুল করলো মুহাম্মাদের ( সা ) মত এক হত দরিদ্র , এতিম মানুষের ধর্ম ইসলাম ! না , এটা সহ্য করা যায় না । অতএব

- অতএব প্রতিশোধের দিকে এগিয়ে গেল তারা ।

ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন
ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি- Moral basis of Islamic movement
সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী রহঃ এর জীবনী
হিদায়াত – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী - Hidayat – Syed Abul A’la Maududi
মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবন – আব্দুল খালেক - Daily life of Muslims – Abdul Khalek
শান্তিপথ – সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী - Shantipath - Syed Abul A'la Maududi
মাতা – পিতা ও সন্তানের অধিকার – আল্লামা ইউসুফ ইসলাহী
কবীরা গুনাহ – ইমাম শামসুদ্দীন আয যাহাবী - Kabira sin - Imam Shamsuddin Az-Zahabi