ইউরেশীয় মেঠো-Eurasian wryneck
Eurasian wryneck

মেঠো কাঠঠোকরা-Eurasian wryneck

মেঠো কাঠঠোকরা, ইউরেশীয় ঘাড়বাঁকা বা ইউরেশীয় ঘাড়ব্যথা Picidae (পিসিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Jynx (জিংক্স) গণের এক প্রজাতির পাখি। এরা কাঠঠোকরার-জাতীয় পাখি। তবে এদের ঠোঁট কাঠঠোকরাদের মত নয়, একটু ছোট। খাবারের জন্য বেশির ভাগ সময় মাটিতেই কাটায় বলে এরা মেঠো কাঠঠোকরা নামে পরিচিত।

ইংরেজি নাম: Eurasian wryneck

বৈজ্ঞানিক নাম: Jynx torquilla

বর্ণনাঃ

মেঠো কাঠঠোকরা লম্বা লেজওয়ালা ধূসর-মেটে রঙের পাখি। এদের দৈর্ঘ্য কমবেশি ১৯ সেন্টিমিটার, ডানা ৮.৫ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ১.৬ সেন্টিমিটার, পা ২ সেন্টিমিটার ও লেজ ৬.৮ সেন্টিমিটার। এদের বুক অসংখ্য কালো কালো ফুটকিতে যেমন রঞ্জিত, তেমনি মাথা-পিঠ ও ডানার উপরি ভাগে আছে সাদাটে-লালচে-বাদামি ও ধূসর-ছাইয়ের আশ্চর্য সুন্দর সমন্বয়। দেহতলে লাল-পীতাভ আভা। কালচে চক্ষু-রেখা ঘাড়ের মাঝ বরাবর চলে গেছে। পিঠের দুই পাশে চওড়া কালো টান। বাদামি ডানা সূক্ষ্ম দাগে ভরা ও কালো, পীতাভ, ও ধূসর রঙের ফোঁটা ও ডোরা রয়েছে। ডানার গোড়া ও পেটে কালো লাইন দেখা যায়। ডানায় সাদাটে তীর-ফলক চিন্হ ও ৩-৪টি স্পষ্ট কালচে ছিটা-দাগ রয়েছে। লম্বাটে লেজটি ঘিরে চার-পাঁচটি চওড়া বলয় দেখা যায়। বলয়ের রং বাদামি-ধূসর। পা, পায়ের পাতা ও ঠোঁট বাদামি। চোখ পিঙ্গল-বাদামি। পুরুষ ও স্ত্রী দেখতে একই রকম হলেও পুরুষগুলো একটু বেশি উজ্জ্বল।

স্বভাবঃ

খুব চতুর-বুদ্ধিমান ও সতর্ক পাখি মেঠো কাঠঠোকরা। গুইসাপ, বেজি, বনবিড়ালও এদের পাকড়াও করতে পারে না। মাটিতে বিচরণ করেও বন্যপ্রাণীর শিকারে পরিণত হয় না খুব একটা। বরং বিপদে পড়লে অভিনয় করে পার পেয়ে যায়। হঠাৎ করে এরা যদি কোনো মানুষের নজরে পড়ে যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ঘাড়টাকে ১৮০ ডিগ্রি কোনে ঘোরাতে থাকে আর চোখ উল্টিয়ে লেজ নাড়তে নাড়তে মাটিতে শুয়ে পড়ে। ভাবটা এমন দেখায় মনে হচ্ছে বুঝি ওর ঘাড়টা মচকে গেছে এখন প্রচণ্ড ব্যথায় কোকাচ্ছে। এ অবস্থায় মানুষ ওদের বেগতিক ভাবসাব দেখে থমকে যায় বা ধরতে ইতস্ততবোধ করে। ঠিক তখনই ডানায় বাতাস লাগিয়ে ফুরুৎ।

প্রজননঃ

প্রজনন সময় মে থেকে জুলাই। বাসা বাঁধে গাছের খোড়লে। অনেক সময় অন্য প্রজাতির কাঠ ঠোকরাদের পরিত্যক্ত বাসায়ও ডিম পাড়ে। ডিমের সংখ্যা ৭-১০টি। এদের ডিমের রং সাদা।

খাদ্য তালিকাঃ

উইপোকা, পিঁপড়ে এবং এর ডিম-বাচ্চা, গুবরে পোকা, পিউপা ও অন্যান্য পোকামাকড় এদের মূল খাবার। খেজুরের রস নলি বেয়ে মাটিতে পড়ে জমা হলে সেখানেও ঠোঁট চালায়। 

বিস্তৃতিঃ

মেঠো কাঠঠোকরা পরিযায়ী স্বভাবের পাখি। সাইবেরিয়া ও চীন থেকে লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে শীতে দক্ষিণ এশিয়ায় আসে, বসন্তে চলে যায়। এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা জুড়ে মেঠো কাঠঠোকরার বিস্তৃতি।

অবস্থাঃ

গত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে, তবে আশঙ্কাজনক হারে যেয়ে পৌঁছে নি। সে কারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এদের আবাস, প্রায় ১ কোটি ১৭ লাখ বর্গ কিলোমিটার।

বাদি হাঁস-White-winged Duck
বড় সরালী-Fulvous whistling duck
সিঁদুরে সাহেলি-Scarlet Minivet
কানিবক-Indian Pond Heron
হুদহুদ বা মোহনচূড়া-Common Hoopoe
ধলাগলা মাছরাঙা-White-throated Kingfisher
খয়রাপাখ মাছরাঙা-Brown-winged Kingfisher
মেঘহও মাছরাঙা-Stork-billed Kingfisher
সবুজ ঘুঘু-Common Emerald Dove
কালো–পা কিডিওয়েক-black-legged kittiwake