ফুলুরি হাঁস-Falcated duck
ফুলুরি হাঁস বা শিখাবিশিষ্ট হাঁস Anatidae (অ্যানাটিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Anas (অ্যানাস) গণের অন্তর্ভুক্ত এক প্রজাতির পরিযায়ী হাঁস। এরা শিখাযুক্ত হাঁস নামেও পরিচিত।
ইংরেজি নাম: Falcated duck
বৈজ্ঞানিক নাম: Anas falcata
বর্ণনাঃ
লম্বায় ৫১ সেন্টিমিটার। ওজন ৬৫০ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় তফাৎ রয়েছে। প্রজনন মৌসুমে পুরুষ পাখির রং বদলায়। এ সময় পুরুষ পাখির বর্গাকার মাথা গাঢ় সবুজ দেখায়। প্রজননের বাইরে বাদামি মিশ্রণ। প্রজনন মৌসুমে ডানার পালক লেজের ওপর গিয়ে কাস্তের মতো ঝুলে পড়ে। পিঠ ধূসর। সাদা গলায় সবুজ বেল্ট। বুকে সাদা-কালো অসংখ্য কারুকাজ। বস্তিপ্রদেশ হলুদ-কালো। ঠোঁট কালো। চোখ ঘন বাদামি। পা কালো। স্ত্রী পাখির মাথা ধূসর। শরীরে বাদামি ডোরা। ওড়ার পালক ধূসরাভ ও সাদা। প্রজনন বাইরে পুরুষ পাখির মাথা, ঘাড় কালো। বাদবাকি স্ত্রী পাখির মতোই দেখতে। অপ্রাপ্তবয়স্কদের চেহারা স্ত্রী পাখির মতো।
স্বভাবঃ
ফুলুরি হাঁস দলবদ্ধভাবে বসবাস করে এবং অপ্রজননকালীন মৌসুমে বিশাল বিশাল দলে বিচরণ করে। বড় সংরক্ষিত জলাশয়ে এদের সহজে দেখা যায়। খাবার খোঁজে অগভীর জলে। প্রজনন মৌসুমে সাঁতার কাটতে কাটতে মুরগির মতো আওয়াজ করে। তবে ওড়ার সময় ভিন্নভাবে আওয়াজ করে। এ সময় উচ্চৈঃস্বরে শিস কাটতে শোনা যায়।
প্রজননঃ
প্রজনন মৌসুম মে থেকে অক্টোবর। সাইবেরিয়ার পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্ব চীনের জলাশয়ের কাছাকাছি ভূমিতে শুকনো লতা ও পালক বিছিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৬-১০টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২৩-২৫ দিন।
খাদ্য তালিকাঃ
উদ্ভিদ বীজ ও ছোট জলজ জীব এদের প্রধান খাদ্য।
বিস্তৃতিঃ
পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মিয়ানমার, চীন, মঙ্গোলিয়া, সাইবেরিয়া, ভিয়েতনাম ও জাপান পর্যন্ত। ছাড়াও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। শীতকালে এরা বাংলাদেশের ঢাকা বরিশাল সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবস্থান করে ।
অবস্থাঃ
সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এরা বিস্তৃত, প্রায় ৩৫ লক্ষ ৫০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস। বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে, তবে এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।