পোষা পাখির খাবারের নাম ও দাম-Name and price of pet food
Name and price of pet food

পোষা পাখির খাবারের নাম ও দাম

১. বাজরিগার

খাঁচায় পালিত পাখিদের মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে বাজরিগার। দেখতে সুন্দর এই পাখি যেকোনো পরিবেশে সহজেই পালন করা যায়, খাবার খরচ একেবারে কম। তিন মাস পরপর এরা ৪/৫টি করে বাচ্চা দেয়। ফলে এই পাখি গোটা পৃথিবীতেই ব্যাপক জনপ্রিয়। বাংলাদেশে এক জোড়া বাজরিগারের দাম সাধারণত ৪শ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার ৫শ টাকা পর্যন্তও হয়। এছাড়াও ইংলিশ ও জাপানি বাজরিগার প্রতি জোড়া ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। পাখি পালন শুরু করার জন্যে বাজরিগার সবচেয়ে ভালো ও সুবিধাজনক পাখি।

২. কোকাটিয়েল

বাজরিগারের পর খাঁচায় পালিত পাখির মধ্যে সব চেয়ে জনপ্রিয় পাখি কোকাটিয়েল। দেখতে সুন্দর এই পাখিটি খুব সুন্দর শীষ বাজায়। আপনি চাইলে টিয়া পাখির মত এদেরও পোষ মানাতে পারবেন। বাংলাদেশে যেসব কোকাটিয়েল পাওয়া যায় তাদের মধ্যে লুটিনো কোকাটিয়েলের প্রতি জোড়ার দাম হয় সাধারণত ৩৫শ থেকে ৪ হাজার টাকা। গ্রে কোকাটিয়েলের দাম পড়বে ৩ হাজার থেকে ৩৫শ টাকা। এছাড়া রয়েছে পার্ল কোকাটিয়েল। এদের দাম হয় ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা। কোকাটিয়েলের মধ্যে এলবিনো কোকাটিয়েলের দাম সব চেয়ে বেশি। এদের প্রতি জোড়ার দাম পড়বে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা।

৩. জাভা

বাজরিগারের মতই সহজে পালনের জন্য বিখ্যাত আরেকটি পাখি হলো জাভা। প্রচুর পরিমানে বাচ্চা ফোটায় বলে এদেরও চাহিদা প্রচুর। শরীরের রঙ, বয়স ও মিউটেশন ভেদে এরা বিভিন্ন দামের হয়। বাংলাদেশের বাজারে যেসমস্ত জাভা পাওয়া যায় তাদের মধ্যে রয়েছে হোয়াইট জাভা। হোয়াইট জাভার এক জোড়া দাম ১ হাজার ৫শ থেকে ২ হাজার টাকা। এর পরে আছে ব্ল্যাক জাভা বা স্প্যারো জাভা, যার একটি জোড়ার দাম সাধারণত ২ হাজার টাকার মত হয়। সিলভার জাভার দামও প্রায় ২ হাজার টাকা হয়।

৪. লাভ বার্ড

খাঁচায় পালিত আরেকটি জনপ্রিয় পাখি হলো লাভ বার্ড। এদের দাম মিউটেশন অনুযায়ী কম বেশি হয়। এদের মধ্যে রয়েছে স্প্যাঙ্গল ব্ল্যাক চিকের দাম হাজার থেকে ১২শ টাকা। পিচ ফেইসড দেড় থেকে ২ হাজার টাকা, লুটিনো পিচ ফেইসডের দাম ২ থেকে তিন হাজার টাকা, ফিশারের দাম ২ থেকে ৩ হাজার টাকা, ব্লু মাস্কড ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা, ইয়েলো কলারড ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা, রেড হেড অপালিন ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা, ভায়োলেট ফিশারের দাম ৬ হাজার টাকা, এলবিনো ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা, গ্রিন অপালিন ফিশারের দাম ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা, অরেঞ্জ ফেইসড অপালিন গ্রিনের দাম ১৩ থেকে ১৫ হাজার টাকা, অ্যাগাপোরনিস ফিশারের দাম ১৭ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

৫. মুনিয়া বা ফিঞ্চ

গ্রামাঞ্চলে যাদের বাড়ি, তারা হয়ত তিলা মুনিয়ার চিনে থাকবেন। বর্ষার সময় রাতের বেলা পাট বা আখ ক্ষেতে এই পাখি দল বেঁধে ফড়ফড় করে উড়ে বেড়াও ও কিচিরমিচির করতেই থাকে। এই অসম্ভব সুন্দর পাখিটি বন্য বলে তা ধরা ও খাঁচাও পালন নিষিদ্ধ। কিন্তু এর কিছু বিদেশী ব্রিড রয়েছে যেগুলো খাঁচায় পালনে আইনতগত বাধা নেই। এদের মধ্যে হোয়াইট ফিঞ্চের দাম প্রতি জোড়া ৫শ থেকে ১ হাজার টাকা, জেব্রা ফিঞ্চের দাম ৬শ থেকে ৮শ টাকা, গোল্ডিয়ন ফিঞ্চের দাম ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা, ক্যানারি ফিঞ্চের দাম ৬ থেকে ১২ হাজার টাকা, স্টার ফিঞ্চের দাম ৪ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা, হোয়াইদা ফিঞ্চের দাম ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়।

৬. ঘুঘু

অনেকে ঘুঘুও খাঁচায় পালন করেন। পালনের জন্য অস্ট্রেলীয় ঘুঘুর ব্রিড অস্ট্রেলিয়ান ডাভের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। এক জোড়া অস্ট্রেলিয়ান ডাভের দাম ১ থেকে ২ হাজার টাকা।

৭. রিং নেক প্যারট

এবার আসা যাক রিং নেক প্যারট বা আমাদের দেশি টিয়ার বংশজাত নানা ধরণের পাখির দাম সম্পর্কে। এই প্রজাতির মধ্যে আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ইন্ডিয়ান রিং নেক প্যারট। আগে মফস্বল এলাকার বড় বড় নারকেল, নিম আর শাল গাছে এদের প্রচুর দেখা যেত। এখন সংখ্যায় অনেক কমে গেছে। তুলনামূলকভাবে এই টিয়ার দাম সবচেয়ে কম। কথা বলার পাখি হিসেবে এটি বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয়।

এই ধরণের এক জোড়া সাধারণ টিয়া পাখির দাম পড়বে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা। এছাড়া ইন্ডিয়ান আলেকজান্ডার প্যারট প্রতি জোড়া দাম ৩ থেকে ৬ হাজার টাকা। এছাড়াও কিছু কালার মিউটেড প্যারটও বাংলাদেশে পাওয়া যায় যেগুলোর দাম একটু বেশি। এগুলোর মধ্যে ইয়োলো রিং নেক প্যারটের দাম প্রতি জোড়া ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা, ব্লু রিং নেকের দাম ২৪ থেকে ২৭ হাজার টাকা, ভায়োলেট রিং নেক ২৪ থেকে ২৮ হাজার টাকা, এলবিনো রিং নেক ৩৫ থেকে ৩৯ হাজার টাকা, পাম হেডেড প্যারট ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।

৮. কনুর

এছাড়াও প্যারট বংশের আরেকটি দামি জাত কনুর। এদের মধ্যে সান কনোরির দাম প্রতি জোড়া ৩০ থেকে ৪৫ হাজার। রেড ফ্যাক্টর সান কনুরের প্রতি জোড়ার দাম ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা রেড ফ্যাক্টর সান কনুরের শরীরে লাল রঙ যত বেশি হবে এর দাম ততো বেশি হবে। জানডে কনুর প্রতি জোড়া ৩৩ থেকে ৩৭ হাজার টাকা, ক্রিমজন বেলিড কনুরের প্রতি জোড়ার দাম ৮৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা, আফিক্রান গ্রে প্যারটের এক জোড়ার দাম ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ পর্যন্ত হয়।

৯. লরিকিট

এবার আসা যাক লরিকিট প্রসঙ্গে। লরিকিটের মধ্যে রেইনবো লরিকিটের দাম ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা। রেড কলারড লরিকিট প্রতিজোড়া ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। চ্যাটারিং লরিকিট ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। রেড মলিউকান লরিকিট ১ লাখ ৫০ হাজার

১০. অ্যামাজন প্যারট

কথা বলা পাখিদের মধ্যে সব চেয়ে জনপ্রিয় পাখি হলো অ্যামাজন প্যারট। এই পাখিগুলো অনেক সুন্দর ও খুব ভালো কথা বলতে পারে। এদের মধ্যে কয়েকটি জাত হলো অরেঞ্জড উইংড অ্যামাজন যার দাম প্রতি জোড়া ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, রেড স্পেকট্যাকলড অ্যামাজন ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, ইয়েলো হেডেড অ্যামাজন ৬ লাখ থেকে সাড়ে ৬ লাখ টাকা, ব্লু ফ্রন্টেড অ্যামাজন প্রতি জোড়া সাড়ে ৭ লাখ থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা হয়।

১১. কাইক প্যারট

কাইক প্যারট প্রজাতির পাখির দুটো জাত বাংলাদেশে পাওয়া যায়। এদের মধ্যে ব্ল্যাক হেডেড কাইক প্যারটের দাম ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং অরেঞ্জড হেডেড কাইক প্যারটের দাম ২ লাখ ১০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা।

১২. কাকাতুয়া

বিশ্বজুড়ে আরেকটি জনপ্রিয় পাখি কাকাতুয়া। এরা বন্ধুত্বপূর্ণ স্বভাব ও মানুষের কথা নকল করার জন্য বিখ্যাত। সারাদিন খেলাধুলা আর নানা অদ্ভ‚ত ও হাস্যকর অঙ্গভঙ্গি করে দর্শনার্থীদের মনোরঞ্জন করতে এদের সারা দিন কেটে যায়। বিশ্বব্যাপী এই পাখিগুলোর চাহিদা প্রচুর। এদের মধ্যে গালা ক্যাকাটু প্রতি জোড়া ২ লাখ ১০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা, সালফার ক্রেস্টেড ক্যাকাটুর দাম আড়াই লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা, গ্রেটার সালফার ক্যাকাটুর দাম ৩ লাখ থেকে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা, মলিউকান ক্যাকাটু ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা, আমব্রেলা ক্যাকাটু ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা এবং গ্যালিয়াথ ব্ল্যাক পাম ক্যাকাটুর দাম ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়।

১৩. ম্যাকাও

প্যারট প্রজাতির পাখিদের মধ্যে সবচেয়ে দামি ও রাজকীয় পাখির নাম ম্যাকাও। এর শরীরী সৌন্দর্য, গঠন, আকার ও রাজকীয় ভঙ্গিমার জন্য এরা খুবই জনপ্রিয়। ধনশালী পক্ষিপ্রেমিরা ম্যাকাও কিনতে টাকা গোনেনা। তবে এদের দাম, পালন খরচ এতই বেশি যে এরা সব সময়ই সাধারণ মানুষের নাগালের বাহিরে। এদের মধ্যে সব চেয়ে কম দামি ম্যাকাও হলো হ্যান্স ম্যাকাও।

এর দাম প্রতি জোড়া ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এছাড়া সিভার ম্যাকাওয়ের দাম দেড় লাখ থেকে ২ লাখ টাকা, ব্লু এন্ড গোল্ড ম্যাকাও ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা, রেড এন্ড গ্রিন ম্যাকাও ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা, স্কারলেট ম্যাকাওয়ের দাম ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা।

ম্যাকাও প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে দামি ও চাহিদাসম্পন্ন পাখি হায়াসিন্থ ম্যাকাও। এর রূপ এতই মনোমুগ্ধকর যে এদের দামও আকাশচুম্বী। একটি হায়াসিন্থ ম্যাকাও কিনতে আপনাকে গুনতে হবে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা।

এছাড়াও আরও অনেক ধরণের প্যারট প্রজাতির পাখি রয়েছে। প্যারট ছাড়াও অন্য পাখিদের মধ্যে বিশ^ব্যাপী হাঁস, কবুতর, হেরন প্রভৃতি পালা হয়। এগুলো দাম কয়েক হাজার থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে চাইলেও কিছু পাখি বাংলাদেশে আনতে পারবেন না। কারণ বিদেশে অনেক প্রাণি পালনের অনুমোদন থাকলেও বাংলাদেশে নেই।

ডায়মণ্ড ডোভ প্রতি জোড়া পাখি খুচরা বিক্রি করছেন ২০০০-২২০০ টাকা ও পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০-১৬০০ টাকা পর্যন্ত। মুনিয়া প্রতি জোড়া খুচরা ৫০০-৬০০ টাকা ও পাইকারি ৪০০-৪৫০ টাকা। ফিঞ্চ প্রতি জোড়া খুচরা ৭০০-৮০০ টাকা ও পাইকারি ৬০০ টাকা। বাজরিকা প্রতি জোড়া খুচরা ১২০০-১৬০০ টাকা পাইকারি ৮০০ টাকা।

পোষা পাখির খাবার

অধিকাংশ পাখি সাধারণ খাবার থেকে ক্যালসিয়ামসহ আরও কিছু খনিজ উপাদান সঠিক মাত্রায় পায় না। তাই খনিজ উপাদানের জোগান দিতে কাটলফিশ বোনের টুকরা, মিনারেল ব্লক খাঁচায় রেখে দিতে হবে। কেবল ধান, গম, যব বা ভুট্টা খাওয়ালেই হয় না; শাক, বরবটি, চীনা, কাওন,চিকন ধান ও সূর্যমুখির বিচি ,অ্যালোভেরার রসের মতো খাবার দেওয়াও জরুরি।

বড় ধলাকপাল রাজহাঁস-Greater white-fronted goose
ফুলুরি হাঁস-Falcated duck
বড় সরালী-Fulvous whistling duck
নীলশির-Mallard
পাকড়া কাঠকুড়ালি-Fulvous-breasted woodpecker
সিঁদুরে সাহেলি-Scarlet Minivet
তিলা লালপা-Spotted redshank
বাংলা নীলকণ্ঠ-Indian roller
ধলাগলা সুইবাতাসি-White-throated needletail
জাপানি বটেরা -Japanese quail