Common Emerald Dove
সবুজ ঘুঘু
রাজ ঘুঘু, সবুজ ঘুঘু বা বাঁশঘুঘু কলাম্বিডি গোত্রের অন্তর্গত অত্যন্ত সুন্দর ঘুঘু পাখিবিশেষ। কোথাও কোথাও এরা পাতি শ্যামাঘুঘু নামেও পরিচিত।
ইংরেজি নাম: Common Emerald Dove, Green Dove, Green-winged pigeon
বৈজ্ঞানিক নাম: Chalcophaps indica
বর্ণনাঃ
দৈর্ঘ্যে কম-বেশি ২৫ সেন্টিমিটার এবং ওজন ১৩০ থেকে ১৩৫ গ্রাম। এদের মাথা ও ঘাড় ধূসর। কাঁধ সাদা। পিঠ সবুজ। ডানার প্রান্ত এবং লেজ কালো। গলা থেকে তলপেট পর্যন্ত উজ্জ্বল গোলাপি। ঠোঁট ও পা লাল। স্ত্রী পাখি আকারে সামান্য ছোট। রঙে সামান্য তারতম্য রয়েছে। স্ত্রী পাখির মাথা ঘাড় বাদামি। কাঁধের সাদা দাগটি অস্পষ্ট।
আচরণঃ
মূলত পাতাঝরা, চিরসবুজ, শাল ও বাঁশবনের বাসিন্দা। সচরাচর একাকি ছায়াঘেরা বনের নির্জন জায়গায় বা ঝোঁপ-ঝাড়ের মেঝেতে ঘুড়ে বেড়ায় খুব সকালে ও বেলা শেষের দিকে খাবার খুঁজে বেড়ায়। বাকি সময় বৃক্ষডালে বসেই সময় কাটায়। এরা খুব সতর্ক ও লাজুক স্বভাবের। কোনো রকম শব্দ পেলেই দ্রুতবেগে উড়ে যায়। বনের ভেতরে খুব কম উচ্চতায়ও বেশ দ্রুতগতিতে উড়তে পারে। খুবই করুণ সুরে বিলাপের মত করে কু-উ বা হুউন করে ডাকে।
খাদ্য তালিকাঃ
ফল ও তার বিচি, শস্য দানা,বীজ,কীটপতঙ্গ,উইপোকা খেতে দেখা যায়।
প্রজননঃ
সারা বছর প্রজনন করতে পারলেও সাধারণত বর্ষার আগে, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসে ডিম দেয় বেশি। ছোট গাছ, বাঁশঝাড় বা ঝোঁপ-ঝাড়ে কয়েকটি কাঠিকুটি জড়ো করে ছোট্ট ও অগোছালো বাসা বানায়। স্ত্রীজাতীয় ঘুঘু দুটো হালকা ঘিয়ে বা হলদে রঙের ডিম পাড়ে। ডিম ফোটে ১২ দিনে।
বিস্তৃতিঃ
ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই, ফিলিপাইন, জাপান, পাপুয়া নিউগিনি, চীনের দক্ষিণাংশ এবং অস্ট্রেলিয়ার উত্তর ও পূর্বাংশ সবুজ ঘুঘুর প্রধান আবাস। এছাড়া পুয়ের্তো রিকোতে এদের অবমুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশে এদের সংখ্যা দারুণভাবে কমে গেছে। সুন্দরবনে প্রচুর আছে। সিলেটের বিভিন্ন বনেও আছে বেশ।
অবস্থাঃ
সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এদের আবাস। সংখ্যার বিশালতার কারণে এদের মোট সংখ্যা নির্ণয় করা যায়নি। গত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা কমে গেলেও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এসে পৌঁছায়নি, যদিও কোন কোন দেশে এদের অবস্থা খুব খারাপ। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. সবুজ ঘুঘুকে আশঙ্কাহীন প্রজাতি হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনানুসারে এ প্রজাতি সংরক্ষিত।