Black Francolin
কালো মথুরা
কালা মথুরা, কালো ময়ূর বা শুধুই মথুরা Phasianidae গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Lophura এক প্রজাতির পাখি। কালো মথুরা কালচে ভূচর পাখি।
বৈজ্ঞানিক নামঃ Lophura leucomelanos
ইংরেজি নামঃ Black Francolin
বিবরণঃ
এদের দৈর্ঘ্য কমবেশি ৬২ সেন্টিমিটার, ডানা ২২ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ৩.৫ সেন্টিমিটার, পা ৭.৫ সেন্টিমিটার, লেজ ২৩ সেন্টিমিটার ও ওজন ১.৩ কেজি। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির মধ্যে পার্থক্য বিস্তর। পুরুষ মথুরার পিঠ উজ্জ্বল নীল ও কালোয় মেশানো। কোমর ও পেছনের পালকের প্রান্ত সাদা। মাথার চূড়ার পালক খাড়া ও পেছনমুখী। মুখ পালকহীন, মুখের চামড়া ও গলায় ঝুলন্ত লতিকা উজ্জ্বল লাল। দেহতলে পুরো কালো রঙের উপর ইস্পাত-নীল ও বেগুনী চাকচিক্য। স্ত্রী মথুরার দেহে অনুজ্জ্বল বাদামি পালকের ধূসর প্রান্ত আঁশের মত দেখায়। মাথার চূড়া ও লেজের পালক প্রায় বাদামি। গলা পীতাভ-বাদামি। কোমর ও পায়ের পালকের প্রান্তদেশ ফিকে। চোখের আশেপাশের অল্প একটু অংশ পালকহীন ও উজ্জ্বল লাল। স্ত্রী ও পুরুষ মথুরার উভয়ের চোখ পিঙ্গল থেকে কমলা-বাদামি। উভয়ের লেজ মোরগের লেজের মত। ঠোঁট সবুজাভ ও শিঙ-বর্ণের, ঠোঁটের গোড়া কালচে ও আগা ফিকে। পা ও পায়ের পাতা বাদামি।
স্বভাবঃ
কালো মথুরা বনের প্রান্তে ও বনসংলগ্ন খোলা জায়গায় বিচরণ করে। সাধারণত জোড়ায় জোড়ায় বা পারিবারিক ছোট দলে থাকে। ভোরে ও গোধূলিতে এরা বেশি সক্রিয় থাকে। দিনের বেলা গাছের নিচু ডালে বিশ্রাম নেয়। সকাল ও সন্ধ্যায় নিচু স্বরে মুরগীর মত ডাকে। এরা খুব লাজুক পাখি, মানুষের আনাগোনা টের পেলে দ্রুত লুকিয়ে পড়ে।
বিস্তৃতিঃ
কালো মথুরার মূল আবাস বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, চীন এবং থাইল্যান্ড। ১৯৬২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে এদের অবমুক্ত করা হয়েছে।
খাদ্যঃ
এদের খাদ্যতালিকায় রয়েছে বাঁশবীজ, ডুমুর, বটফল, পিঁপড়া, উইপোকা, ছোট সাপ ও গিরগিটি।
প্রজননঃ
মার্চ থেকে অক্টোবর এদের প্রধান প্রজনন ঋতু। স্ত্রী মথুরা ঘন ঝোপের নিচে নখ দিয়ে মাটি আঁচড়ে পাথর, লতাপাতা বা ঘাসের গোছা দিয়ে বাসা বানায়। বাসা বানানো শেষে ৬-৯টি ডিম পাড়ে। ডিমগুলো ফিকে-পীতাভ বা পীতাভ-সাদা থেকে লালচে পীত বর্ণের হয়। ডিমের মাপ ৪.৯ × ৩.৭ সেন্টিমিটার। স্ত্রী মথুরা একাই ডিমে তা দেয়। ২০-২১ দিনে ডিম ফোটে।
অবস্থাঃ
প্রজাতিটি রূপালি মথুরার সাথে একটি মহাপ্রজাতির সৃষ্টি করেছে। আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা বিপদমুক্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশে এরা বিপন্ন বলে বিবেচিত। বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী ও আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।