কালামাথা কাস্তেচরা-Black-headed Ibis
Black-headed Ibis

কালামাথা কাস্তেচরা

কালামাথা কাস্তেচরা Threskiornithidae গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Threskiornis গণের এক প্রজাতির বড় জলচর পাখি।

বাংলা নাম: কালোমাথা কাস্তেচরা, সাদা দোচরা, কাচিচোরা বা শুধু কাস্তেচরা

বৈজ্ঞানিক নাম: Threskiornis melanocephalus

ইংরেজি: Black-headed Ibis

বিবরণঃ

কালোমাথা কাস্তেচরা কালো গলা ও সাদা শরীরের বড় আকারের জলচর পাখি। এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ৭৫ সেন্টিমিটার, ডানা ৩৫.৫ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ১৫.৫ সেন্টিমিটার, পা ১০.৭ সেন্টিমিটার ও লেজ ১৪ সেন্টিমিটার।[২] পাখিটির মাথা, গলা ও ঘাড় পুরোপুরি পালকহীন ও সম্পূর্ণ কালো। বাকি দেহ পুরো সাদা। এর ঠোঁট কালো, লম্বা আর নিচের দিকে কাস্তের মত বাঁকা। ঘাড়ের গোড়ায় কিছু পরিমাণ পালক ঝুলে থাকে। পিঠের শেষভাগ থেকে বেরিয়ে আসা চিকন চুলের মত ধূসর বা কালচে রঙের বাহারি পালক দেখা যায়। বুকে হলুদ আভা। কাঁধ-ঢাকনিতে সাদা পালক থাকতে পারে। চোখ লাল কিংবা লালচে বাদামি। পা ও পায়ের পাতা কুচকুচে কালো।

বিস্তৃতিঃ

ফিলিপাইন, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, জাপান ও হংকঙে পাখিটি শীতকালীন পরিযায়ী হয়ে আসে। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও নেপালে এরা আবাসিক, কিন্তু সংখ্যায় খুব কম। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে এদের সচরাচর দেখা যায়, পূর্বাঞ্চলে কম দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় এদের সচরাচর দেখা মেলে। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলেও এরা বেশ সুলভ।

খাদ্যঃ

কাদা ও অগভীর পানিতে ঠোঁট ডুবিয়ে এরা খাবার খুঁজে বেড়ায়। এদের খাদ্যতালিকায় রয়েছে মাছ, ব্যাঙ, শামুক-গুগলি, কেঁচো, পোকামাকড় ও নরম জলজ উদ্ভিদাংশ।

স্বভাবঃ

কালোমাথা কাস্তেচরা জলাভূমি, নদী, প্লাবিত তৃণভূমি, আবাদি জমি, কাদার চর, জোয়ার-ভাঁটার খাঁড়ি ও উপকূলীয় লেগুনে ঘুরে বেড়ায়। অর্থাৎ মিঠাপানি ও লোনাপানি দুই জায়গাতেই এদের অবাধ বিচরণ। এরা দলবদ্ধভাবে থাকতে ভালবাসে। অন্য পাখির সাথে মিলে হলেও দলে থাকতে পছন্দ করে। ওড়ার সময় এরা বকের মত গলা ভাঁজ করে না। শীতকালে এরা পুরোপুরি নিশ্চুপ থাকে। গ্রীষ্মকালে বাসায় বসে এরা নাকি সুরে শূকরের মত ঘোঁত ঘোঁত করে ডাকে। এরা অনেকটা যাযাবর প্রজাতির। খাবারের প্রাচুর্যের উপর ভিত্তি করে এরা স্থান পরিবর্তন করে।

প্রজননঃ

জুন থেকে অক্টোবর কালোমাথা কাস্তেচরার প্রধান প্রজনন ঋতু। এসময় পানির ধারে আংশিক জলমগ্ন বৃক্ষে কিংবা গ্রামীণ বনে (প্রধানত বাঁশবনে) এরা বাসা বানায়। বাসার আকৃতি ছোটখাটো মাচার মত। বাসা বানানো হয়ে গেলে ২-৪টি সাদা রঙের ডিম পাড়ে। ডিমের বর্ণ কখনও কখনও হালকা বাদামিও হয়। ডিমের মাপ ৬.৪ × ৪.৩ সেন্টিমিটার। ২৩ থেকে ২৫ দিনে ডিম ফুটে ছানা বের হয়। ৪০ দিন পর তারা উড়তে শেখে।

অবস্থাঃ

সারা পৃথিবীতে প্রায় ১৫ লাখ ৬০ হাজার বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে এদের আবাস। বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে প্রায়-বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। সমগ্র বিশ্বে দশ হাজার থেকে বিশ হাজারটি কালোমাথা কাস্তেচরা জীবিত রয়েছে।

লালবুক ডুবুরি হাঁস-Red-breasted erganser
পাতি পাপিয়া-Common Cuckoo
মাছমুরাল পাখি-Osprey
কালোমাথা টিয়া- Grey-headed Parakeet
ধূপনি বক-Grey Heron
ধলা বালিহাঁস- Cotton Pygmy Goose
মরচেরঙ ভুতিহাঁস-Ferruginous duck
দাগিলেজ গাছআঁচড়া-Bar-tailed treecreeper
গোলাপি-পা রাজহাঁস-Pink-footed goose
বাংলাদেশের পাখির তালিকা-List of birds of Bangladesh