গিরিয়া হাঁস
গিরিয়া হাঁস বা জিরিয়া হাঁস Anatidae গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Anas গণের অন্তর্ভুক্ত এক প্রজাতির পরিযায়ী হাঁস।
বৈজ্ঞানিক নাম: Anas querquedula
ইংরেজি নাম: Garganey Duck
বর্ণনাঃ
গিরিয়া হাঁস দেখতে ছোট আকারের । পুরুষ হাঁসটির মাথা ও বুক বাদামী বর্ণের । চোখের উপর সাদা সীমানাযুক্ত অর্ধাকৃতির দাগ দেখতে পাওয়া যায় । এদের পালক খয়েরী রঙের হয় । ঠোঁট ও পা দেখতে খয়েরী । ডানার নিচের অংশ সাদা সীমানাযুক্ত হালকা নীল । মাথার উপরের অংশ গাঢ় বর্ণের হয় । মুখ লালচে বাদামী । স্ত্রী হাঁসটি দেখতে অনেকটা পাতি তিলিহাঁসের মতো । স্ত্রী হাঁসটির মুখের আকার ও পানিতে ডুব দিয়ে বারবার মাথা ঝাঁকানো দেখে এদের আলাদা করা যায় । এরা দেখতে বাদামী বর্ণের । পা খয়েরী রঙের । ঠোঁট সাধারনত লম্বা হয় । চোখের ভ্রু ফেকাশে ।
বিচরণঃ
গিরিয়া হাঁস দলবদ্ধভাবে বসবাস করে এবং অপ্রজননকালীন মৌসুমে বিশাল বিশাল দলে বিচরণ করে। বড় বড় সংরক্ষিত জলাশয়ে এদের সহজে দেখা যায়। এরা লোনাপানি ও মিঠাপানি উভয়তেই বাস করতে পারে ।
প্রজননঃ
গিরিয়া হাঁসের এমন ভাবে বাসা বানায় যাতে তা চিহ্নিত না করা যায় । এরা জমিতে বাসা বানায় । স্ত্রী হাঁস ৪ থেকে ৯ টি ডিম পাড়ে । ডিম ফুটে বাচ্চা হতে সময় লাগে ২১ থেকে ২৩ দিন । জন্মের ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে বাচ্চাদের পাখা গজায় ।
খাদ্যতালিকাঃ
শামুক, জলজ পোকামাকড় এবং তাদের লার্ভা , কেঁচো, ছোট ব্যাঙ , ছোট মাছ ,উদ্ভিদ বীজ ও ছোট ছোট জলজ জীব এদের প্রধান খাদ্য।
বিস্তৃতঃ
সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এরা বিস্তৃত, প্রায় ১ কোটি ৬৯ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস। পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও ইউরোপ, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা, ওশেনিয়া ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়।
অবস্থাঃ
বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে, তবে এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে।বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।