নীলশির
নীলশির বা নীলমাথা হাঁস Anatidae গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Anas গণের অন্তর্ভুক্ত এক প্রজাতির বড় আকারের হাঁস।
বৈজ্ঞানিক নাম:Anas platyrhynchos
ইংরেজি নাম: Mallard
বিবরণঃ
পুরুষ নীলশিরের (হাঁসা) মাথা চকচকে সবুজ এবং ডানা ও পেট ধূসর রঙের। স্ত্রী হাঁসের দেহ মেটে রঙের, তাতে ছোট ছোট বাদামী ফোঁটা থাকে। নীলশির মাঝারি আকারের জলচর পাখি হলেও অধিকাংশ হাঁসের তুলনায় ঈষৎ ভারি। এর দৈর্ঘ্য ৫০–৬৫ সেমি. ডানার বিস্তার ৮১–৯৮ সেমি. এবং ওজন ০.৭২–১.৫৮ কেজি ডানার প্রমাণ দৈর্ঘ্য ২৫.৭ থেকে ৩০.৬ সেমি, ঠোঁট ৪.৪ থেকে ৬.১ সেমি. ও পায়ের পাতা ৪.১ থেকে ৪.৮ সেমি।
প্রজননঃ
এপ্রিল থেকে জুলাই প্রজননকাল। হাঁসি প্রজনন এলাকায় পানির কাছাকাছি মাটিতে বাসা বানায়। এরপর ৬-১৩টি ফ্যাকাশে সবুজাভ, নীলচে বা ক্রিম-সাদা ডিম পাড়ে, যা ২৬-২৮ দিনে ফোটে। বাচ্চারা মায়ের সঙ্গে প্রায় দুই মাস থাকে। চার মাসে উড়তে শেখে ও এক বছরে প্রাপ্তবয়স্ক হয়। আয়ুষ্কাল ৩-২০ বছর।
বিস্তৃতিঃ
পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় প্রজাতিটি অবমুক্ত করা হয়েছে।
অবস্থাঃ
বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে, তবে এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। সারা পৃথিবীতে আনুমানিক ১ কোটি ৯০ লক্ষের কম নীলশির হাঁস রয়েছে।
খাদ্যঃ
জলজ লতাপাতা, ঘাস, বিচি, শামুক-গুগলি, ব্যাঙাচি, পোনা মাছ, কেঁচো ইত্যাদি খুঁজে খায়।