পাতি সরালী
পাতি সরালি,ছোট সরালি, সরালি বা গেছো হাঁস Anatidae পরিবারের অন্তর্গত Dendrocygna গণের অন্তর্ভুক্ত সুলভ এক প্রজাতির হাঁস।
বৈজ্ঞানিক নাম Dendrocygna javanica,
ইংরেজি নাম Lesser Whistling Duck
বর্ণনাঃ
পাতি সরালির ওজন প্রায় ৫০০ গ্রাম, দৈর্ঘ্য ৪৫ সেন্টিমিটার। একনজরে দেখলে ওদের কালচে-বাদামি রঙের পাখি বলে মনে হবে। এদের দেহ বাদামি ও গলা লম্বা। এদের ডানা যথেষ্ট চওড়া আর ওড়ার সময় শিষের মত শব্দ উৎপন্ন করে। বড় সরালির মত এর লেজের গোড়া হালকা নয়, খয়েরি রঙের। পা কালো এবং ঠোঁট ধূসর-কালচে। পিঠে হালকা বাদামির ওপর কিছুটা নকশা আঁকা। লেজের তলা সাদা, মাথা বাদামি।
স্বভাবঃ
স্বভাবে এরা নিশাচর; রাতে খাবারের সন্ধানে চরে বেড়ায়। এছাড়া দিনে জলমগ্ন ধানক্ষেত ও বড় জলাশয়ের আশেপাশে দলবদ্ধভাবে বিচরণ করে। এরা গাছের ডালে চড়ে বসতে পারে এবং কখনো কখনো গাছের গর্তে বাসা করে।সাধারণত নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত এ সময় দিনের বেলায় কখনো জলকেলি আবার কখনো খুনসুটিতে ব্যস্ত থাকে এরা। কখনো মুক্ত আকাশের বুকে কিচিরমিচির শব্দে ঝাঁকে ঝাঁকে দল বেঁধে উড়ে বেড়ায়।
খাদ্যঃ
ধানক্ষেতের শ্যাওলা, গুগলি, ছোট ছোট শামুক, বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ, নতুন কুঁড়ি, শস্যদানা, ছোট মাছ প্রভৃতি যেগুলো ওরা খেতে পারে।
প্রজননঃ
সাধারণত জুন থেকে অক্টোবর মাস এদের প্রজননকালীন সময়। স্ত্রী পাখি একসঙ্গে ৭ থেকে ১২টি সাদা ডিম দেয়। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে ২২ থেকে ২৪ দিন সময় লাগে।
বিস্তৃতিঃ
পাখিটি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, চীন, তাইওয়ান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোচীন, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় দেখা যায়। ভারত ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এরা বিস্তৃত, প্রায় ৫৬ লক্ষ ৭০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস।
অবস্থাঃ
বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা কমছে, তবে এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।