কালো-তিতির-Black francolin
Black francolin

কালো তিতির

পরিচিতিঃ

বাংলাদেশের পাখির তালিকায় তিন প্রজাতির তিতির পাওয়া যায় ।

১.কালো তিতির,black francolin :বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০২১ সালের বন্য প্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত ।

২. বাদা তিতির,swamp  francolin :১৯৮২ সালে বাংলাদেশে এদের শেষ দেখা গেছে ।বাংলাদেশে মহাবিপন্নের তালিকায় রয়েছে । এরা বাংলাদেশের আইনে সংরক্ষিত ।

৩. মেটে তিতির,grey  francolin :বাংলাদেশের বন্য  প্রাণী আইন,১৯৭৪ অনুসারে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত ।

কালো তিতির বা শেখ ফরিদ বা কালা তিতির Phasianidae গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত ফ্র্যাঙ্কোলিনাস গণের এক প্রজাতির বুনো তিতির।

ইংরেজি নাম: Black francolin

বৈজ্ঞানিক নাম: Francolinus francolinus

বর্ণনাঃ

কালো তিতির কালচে বাদামী ভূচর পাখি। এদের দৈর্ঘ্য কমবেশি ৩৪ সেন্টিমিটার, ওজন ৪৩০ গ্রাম, ডানা ১৫ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ২.৪ সেন্টিমিটার, পা ৪.৮ সেন্টিমিটার ও লেজ ১০ সেন্টিমিটার। পুরুষ ও স্ত্রী তিতিরের চেহারা ভিন্ন। পুরুষ তিতিরের পিঠ ঘন কালো, মধ্যে মধ্যে সাদা ও মেটে তিলা, বগলের তিলাগুলো বেশ মোটা। মুখ কালো ও গাল সাদা, গলাবন্ধ লালচে। স্ত্রী তিতিরের পিঠ ফিকে বাদামী ও মেটে বর্ণের। ঘাড়ের নিচের অংশ লালচে, কান ঢাকনি ও ভ্রু-রেখা হালকা পীত রঙের। চক্ষুরেখা কালচে। কাঁধ-ঢাকনি ও পিঠে হালকা পীত বর্ণের লম্বা ছিটা দাগ থাকে। থুতনি ও গলা সাদাটে। দেহতলের বাকি অংশে ও বগলে প্রশস্ত সাদা-কালো ডোরা থাকে এবং লেজের নিচটুকু তামাটে হয়। পুরুষ ও স্ত্রী তিতিরের উভয়ের চোখ বাদামি বা পিঙ্গল-বাদামি। ঠোঁট কালো। লেজের ডগা সূঁচালো। প্রজনন মৌসুমে পা ও পায়ের পাতা গাঢ় লাল বর্ণ ধারণ করে। অপ্রাপ্তবয়স্ক তিতির দেখতে স্ত্রী তিতিরের মত। তবে তার কালো ভ্রুরেখা ও কালো বুকে সাদা তিলা থাকে। উপপ্রজাতিভেদে কালো তিতিরের পালকের রঙে বিভিন্নতা দেখা যায়। আবাসিক পাখি কালো তিতির। দেখতে অনেকটা মুরগির মতো। 

স্বভাবঃ

কালো তিতির মাটিতে থাকে এবং উঁচু ঘাসের বন,ঝোপ ঝাড়,চা বাগান,কৃষিখামারে একাকি বিচরণ করে বেড়ায় । সচরাচর একাকী কিংবা জোড়ায় জোড়ায় ঘুরে বেড়ায়। এরা খোলা মাঠ, বনের পাশে ঘাসবনে বা ছোট ঝোপ মধ্যে খাবার খোঁজে। খাদ্যতালিকায় রয়েছে ঘাসবীজ, আগাছা, শস্যদানা, কচি কান্ড, ফল ও পোকামাকড়। সাধারণত ওড়ে না, বিপদের আভাস পেলে লুকিয়ে পড়ে। ঊষা ও গোধূলিতে এরা বেশি কর্মচঞ্চল হয়। এসময় স্বভাবসিদ্ধ তীক্ষ্ণ স্বরে ডাকে: চিক-চিক-চিক-ক্রেকেক।এই অদ্ভুত শব্দবিশিষ্ট ও ছন্দময় ডাকের জন্য বাংলাদেশের তেঁতুলিয়ার কৃষক আর রাখালেরা এই পাখিটিকে ডাকে পান-বিড়ি-সিগ্রেট বলে।

প্রজননঃ

মার্চ থেকে অক্টোবর মাস কালো তিতিরের প্রজনন মৌসুম।এসময় পুরুষ তিতির গলা টান করে ডাকতে থাকে। লেজ ওঠা নামা করে। লম্বা ঘাসের গোড়ায় বা ঘন ঝোপের নিচে মাটির খোদলে ঘাস দিয়ে বাসা বানায়। বাসা বানানো শেষে ৬-৯টি ডিম পাড়ে। ডিমগুলো হলদে-জলপাই থেকে হালকা জলপাই-বাদামি রঙের হয়। ডিমের মাপ ৩.৮×৩.১ সেন্টিমিটার। শুধু স্ত্রী তিতির ডিমে তা দেয়। ১৮-১৯ দিন পর ডিম ফুটে ছানা বের হয়।

বিস্তৃতিঃ

কালো তিতির বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি । এক সময় ঢাকা,চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগের পাতাঝরা বনে দেখা গেলেও বর্তমানে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলিতে মাঝে মাঝে দেখা যায়। আফগানিস্তান, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, ভুটান, সাইপ্রাস, জর্জিয়া, সিরিয়া, ইসরাইল, ফিলিস্তিন, জর্ডান, ইরাক, ইরান, তুরস্ক, তুর্কমেনিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশ কালো তিতিরের প্রধান আবাসস্থল।

প্রধান খাবারঃ

শস্যদানা, কচিপাতা, পোকামাকড় ও ফল।

অবস্থাঃ

প্রায় ৩০ লক্ষ ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটারএলাকা জুড়ে এদের আবাস। আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা আশঙ্কাহীন বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশে এরা মহাবিপন্ন (Critically endangered) বলে বিবেচিত। বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

বড় ধলাকপাল রাজহাঁস-Greater white-fronted goose
বাদি হাঁস-White-winged Duck
পাতি তিলিহাঁস-Eurasian teal
লাল মোরগ-Red spurfowl
লালবুক কাঠকুড়ালি-Rufous-bellied Woodpecker
খয়রা কাস্তেচরা-Glossy Ibis
সবুজ টিয়া-Rose-ringed parakeet
ধলাগলা মাছরাঙা-White-throated Kingfisher
বেগুনি বক-Purple Heron
পরজীবী জেগার-Parasitic jaeger