মেহজাবীন চৌধুরী এর জীবনী-Biography Of Mehazabien Chowdhury
মেহজাবীন চৌধুরী বাংলাদেশের একজন মডেল ও অভিনেত্রী। তিনি ২০০৯ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার থেকে বিজয়ী হয়ে মিডিয়া জগতে আসেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন টিভি বিজ্ঞাপন ও নাটকে নিয়মিত অভিনয় করছেন। লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় তার সাফল্য তার অভিনয় ক্যারিয়ারের দরজা খুলে দিয়েছিল। মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিংকের একটি টিভি বিজ্ঞাপনে অভিনয়ের মাধ্যমে মেহজাবীন পরিচিতি অর্জন করেন। এটিএন বাংলায় প্রচারিত টেলিভিশন নাটক 'তুমি থাকো সিন্ধু পাড়ে'র মাধ্যমে তার ছোট পর্দায় আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর থেকে তিনি বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করেছেন। মেহজাবীন অভিনয়ে তার বহুমুখীতার জন্য তিনি ব্যাপকভাবে স্বীকৃত এবং তার অভিনয়ের জন্য অসংখ্য পুরষ্কার এবং সম্মাননা পেয়েছেন।
ডাকনাম: জেনিফার
জন্ম: ১৯ এপ্রিল ১৯৯১ (বয়স ৩২) চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
পিতা-মাতা: মহিউদ্দিন চৌধুরী (বাবা),গজলা চৌধুরী (মাতা)
জাতীয়তা: বাংলাদেশী
নাগরিকত্ব: বাংলাদেশ
মাতৃশিক্ষায়তন: শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়
পেশা: মডেল, অভিনেত্রী
বিদ্যালয়: ইন্ডিয়ান স্কুল,সোহার,ওমান
কর্মজীবন: ২০০৯ - বর্তমান
উচ্চতা: ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি
ওজন:ধ ৪৫ কেজি
পুরস্কার: মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার - ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯,২০২১
সিজেএফবি পারফরম্যান্স পুরস্কার-২০১২, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৯, ২০২০ এবং ২০২১
বাবিসাস পুরস্কার ২০১৮
প্রাথমিক জীবন
মেহজাবীন ১৯ এপ্রিল ১৯৯১ সালে চট্টগ্রাম তার পৈতৃক নিবাসে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে বেড়ে উঠেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। মেহজাবীন চৌধুরীর বাবা মহিউদ্দিন চৌধুরী একজন সরকারী কর্মচারী, তিনি বাংলাদেশ বিমানে কর্মরত ছিলেন। ছোটবেলায় মেহজাবিন তার বাবা-মায়ের সাথে দুবাই চলে যান। তিনি ইন্ডিয়ান স্কুল সোহার এবং ইন্ডিয়ান স্কুল মাসকটে পড়াশোনা করেছেন। তার পরিবারের কেউই শোবিজ অঙ্গনের সাথে জড়িত ছিলেন না, তবুও তিনি কার্যকরভাবে শোবিজ শিল্পে ক্যারিয়ার গড়ছেন। ২০০৭ সালে, ষোল বছর পরে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। তারপরে, তিনি প্রায় দশ হাজার প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে বিউটি পেজেন্ট লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার-এর জয়ী হন। এখন মেহজাবীন শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাশন ডিজাইনিং এর ছাত্রী ছিলেন।
অভিনয় জীবন
‘লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার ২০০৯’ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মেহজাবীন অভিনীত প্রথম নাটক ছিল ইফতেখার আহমেদ ফাহমি পরিচালিত ‘তুমি থাকো সিন্ধুপারে’। এ নাটকে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন মাহফুজ আহমেদ। এরপর তিনি একে একে কাজ করেন ‘মাঝে মাঝে তব দেখা পাই’, ‘কল সেন্টার’, ‘মেয়ে শুধু তোমার জন্য’, ‘আজও ভালোবাসি মনে মনে’, ‘হাসো আন লিমিটেডসহ’ বেশকিছু নাটকে। ২০১৩ তে শিখর শাহনিয়াত পরিচালিত নাটক 'অপেক্ষার ফটোগ্রাফি' ছিল মেহজাবীন এর জন্য বড় একটি টার্নিং পয়েন্ট। ঈদুল আযহা ২০১৭-এ মিজানুর রহমান আরিয়ানের পরিচালনায় বড় ছেলে’তে অভিনয় করে আবারও শীর্ষে চলে আসেন এই অভিনেত্রী। দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয় মেহজাবীন ও জিয়াউল ফারুক অপূর্ব অভিনীত এই নাটকটি। ২০২০ সালে এই অভিনেত্রী নাম লিখিয়েছেন গল্পকার হিসেবে। ‘থার্ড আই’ তার লেখা প্রথম নাটকের গল্প।
বিচারক
মেহজাবীন চৌধুরী ২০১৬ সালের ৫ এপ্রিল চ্যানেল আইতে প্রচারিত 'মঙ্গোলি-চ্যানেল আই সেরা নাচিয়ে' নামক নৃত্য রিয়েলিটি শোতে অতিথি বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালে তিনি মাছরাঙা টেলিভিশনে প্রচারিত একটি গানের রিয়েলিটি শো "স্কয়ার সুরের সেরা" এর অতিথি বিচারক হিসাবে উপস্থিত হয়েছিলেন।
মেহজাবীন চৌধুরী অ্যাওয়ার্ড
২০০৯ সালে তিনি লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার বিজয়ী হন।
তারপর ২০১২ সালে বেস্ট মডেল হিসেবে বাবিসাস অ্যাওয়ার্ড,সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।
২০১৪ সালে টিভিতে বেস্ট অ্যাক্ট্রেস হিসেবে সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।
২০১৫ সালে বেস্ট ডান্সার হিসেবে ডিসিআরইউ শোবিজ পুরষ্কার অর্জন করেন।
২০১৬ সালে বেস্ট টিভি লুক হিসেবে আরটিভি ফ্যাশন রানওয়ে পুরষ্কার অর্জন করেন।
২০১৭ এবং ২০১৮ সালে টিভিতে বেস্ট অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে মেরিল প্রথম আলো অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।
২০১৮ সালে টিভিতে বেস্ট অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে বাবিসাস পুরষ্কার, আরটিভি স্টার পুরষ্কার পান।
২০১৯ সালে টিভিতে বেস্ট অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে আরটিভি স্টার পুরষ্কার পান।
২০১৯ সালে ইউটিউব সিলভার প্লে বোতাম পুরষ্কার পান।
২০২১ সালে সিজেএফবি পারফরম্যান্স পুরস্কার,শ্রেষ্ঠ টিভি অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে মেরিল প্রথম আলো অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।
সমালোচনা
২০২১ সালের ঈদুর আজহায় মেহজাবীন চৌধুরী অভিনীত নাটক ঘটনা সত্য নিয়ে চরম বিতর্ক তৈরি হয়। রুবেল হাসান নির্মিত এ নাটকে বিশেষ শিশু বা স্পেশাল চাইল্ডদের বাবা-মায়ের 'পাপ কর্মের ফল' বলে ভুল বার্তা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। নাটকটি চ্যানেল আইতে সম্প্রচারিত হওয়ার পর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভির ইউটিউব চ্যানেলে স্ট্রিমিং হয়। এতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপে নাটকটি নিয়ে সমালোচনা হয় এবং তুমুল আপত্তি উঠেছে। একাধিক সংগঠনও প্রতিবাদ জানায়। এ ঘটনায় মেহজাবীন চৌধুরীসহ সিএমভির পুরো টিম দুঃখ প্রকাশ করে। পরে নাটকটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।