হোসনি মোবারক এর জীবনী - Biography of Hosni Mubarak
Hosni Mubarak Former President of Egypt

হোসনি মোবারক এর জীবনী - Biography of Hosni Mubarak

মিসরের উত্তরাঞ্চলে কাফর আল মেসেলহায় ১৯২৮ সালের ৪ঠা মে জন্ম গ্রহন করেন। তার বাবা ছিলেন বিচার মন্ত্রণালয়ের একজন ইন্সপেক্টর। মুবারাক মিশরের জাতীয় সামরিক অ্যাকাডেমি, বিমানবাহিনী অ্যাকাডেমি এবং মস্কো-র ফ্রুনযে জেনারেল স্টাফ অ্যাকাডেমিতে শিক্ষালাভ করেন।দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা সত্ত্বেও তিনি ১৯৪৯ সালে মিসরের মিলিটারি একাডেমি থেকে গ্রাজুয়েশন করেন। পরে বিমান বাহিনীতে বদলি হয়ে ১৯৫০ সালে কমিশন প্রাপ্ত হন।

মুহাম্মদ হোসনি সাইদ মুবারাক মিশরের সামরিক নেতা এবং ১৪ই অক্টোবর, ১৯৮১ থেকে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত দেশটির রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৭৫ সালে উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিযুক্ত হন এবং সাদাত নিহত হবার পর ১৯৮১ সালের ১৪ই অক্টোবর মুবারাক মিশরের রাষ্ট্রপতি হন এবং মোহাম্মদ আলীর পর প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক হচ্ছেন মিসরের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী শাসক। রাজনীতিতে প্রবেশের পূর্বে মুবারাক মিশরীয় বিমান বাহিনীর একজন কমান্ডার হিসেবে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। জানুয়ারি ৩০ ২০১১ অনুযায়ী মিশরে মুবারাক তার শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

মিশরীয় রাষ্ট্রপতি আনোয়ার আল সাদাতের অধীনে তিনি বেশ কিছু সামরিক পদে দায়িত্বপালন করেন। এর মধ্যে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি উপ-যুদ্ধমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭৫ সালে তিনি মিশরের উপ-রাষ্ট্রপতি হন।


১৯৮১ সালের ৬ই অক্টোবর সাদাতকে হত্যা করা হলে মুবারাক মিশরের রাষ্ট্রপতি হন। ক্ষমতায় এসে তিনি একটি অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন প্রকল্প শুরু করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে ইসরায়েলের সাথে সাক্ষরিত শান্তিচুক্তি ধরে রাখার ব্যাপারেও অনমনীয় ছিলেন। মিশরের সাথে ইসরায়েলের শান্তিচুক্তির ফলে অন্যান্য আরব রাষ্ট্রের মধ্যে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়, তিনি তার অনেকটাই সামাল দেন। তিনি বৃহৎ শক্তিগুলির প্রতি "ইতিবাচক নিরপেক্ষতা"-র নীতি গ্রহণ করেন। ১৯৮৭ সালের অক্টোবর মাসে তার নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল ডেমোক্র‌্যাটিক পার্টি নির্বাচনে জিতলে তিনি পুনরায় মিশরের রাষ্ট্রপতি হন।


অর্থনৈতিক সমস্যা এবং ইসলামী মৌলবাদের মত অভ্যন্তরীণ সমস্যা থাকলেও মুবারাক ইসরায়েল ও আরবরাষ্ট্রগুলির মধ্যকার অচলাবস্থা নিরসনের উদ্যোগ নেন। ১৯৮৮ সালে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান। ১৯৯০ সালে ইরাক কুয়েত দখল করলে জাতিসংঘের ইরাকের বিরুদ্ধে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে মুবারাক তা সমর্থন করেন, ইরাকের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আরব লীগকে মত দিতে উদ্বুদ্ধ করেন, ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধে প্রায় ৩৯ হাজার সেনা সরবরাহ করেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে যুদ্ধ-পরবর্তী পদক্ষেপগুলিকে সমর্থন দেন।


১৯৯৩ সালে মুবারাক পুনরায় নির্বাচিত হন। এবার মুবারাক মৌলবাদী বিরোধী দলগুলির উপর ধর-পাকড় আরম্ভ করেন। ১৯৯৫ সালের জুন মাসে ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবা-তে তাকে হত্যার একটি চেষ্টা চালানো হয়, কিন্তু তিনি বেঁচে যান। পাঁচজন আততায়ীকে হত্যা করা হয় এবং বাকীরা সুদানে পালিয়ে যায়। ধারণা করা হয়, সুদান থেকেই হত্যাকাণ্ডটির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। মুবারাকের উপর ছয়বার হত্যাপ্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। [৬][৭] ১৯৯৫ সালের নভেম্বর মাসে সংসদীয় নির্বাচনের ঠিক আগে মুবারক সরকার মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে জঙ্গী ইসলামী দলদের মদদ দেবার অভিযোগ আনেন। মুসলিম ব্রাদারহুডের বহু নেতাকর্মীকে এর জের ধরে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু সমালোচকেরা বলেন যে মুবারাক শান্তিপ্রিয় বিরোধীদেরও নির্মূল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। নির্বাচনে মুবারাকের দলের বিশাল জয় হয় এবং ১৯৯৯ সালে মুবারাক চতুর্থবারের মত ৬ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হন।


২০০০-এর দশকে মুবারাক চরমপন্থী ইসলামীদের দমনের ধারা অব্যাহত রাখেন এবং কেবল দর্বল বিরোধীদেরই দল গঠনের অনুমতি দেন। তিনি ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বরের হামলার নিন্দা জানান। একই সময়ে দেশের মধ্যপন্থী ইসলামী দলগুলি ইসলামী শরিয় অনুসারে দেশ চালানোর জন্য চাপ দিতে থাকে। ২০০৫ সালে ফিলিস্তিনে অনুষ্ঠিত অপেক্ষাকৃত উন্মুক্ত নির্বাচনের পর মিশরীয়রা নিজদেশেও অধিকতর গণতন্ত্রের প্রত্যাশা প্রকাশ করে।


২০০৫ সালে মুবারাকের চতুর্থ মেয়াদ শেষ হয়ে আসলে কিছু দল সংবিধানের সংশোধন কামনা করে। ২০০৫ সালের মে মাসে সংবিধানে সংশোধন আনা হয় এবং মিশরের ইতিহাসে প্রথমবারের মত সরাসরি বহুদলীয় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়। সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মুবারাক ৮৫%-এরও বেশি ভোট পেয়ে পঞ্চমবারের মত ছয় বছর মেয়াদের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু বিরোধী প্রার্থীরা তার বিরুদ্ধে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ আনেন এবং রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমে মুবারাকার নিয়ন্ত্রণের ফলে তাদের প্রচারে বিঘ্ন ঘটেছে বলে দাবী করেন।

মৃত্যুঃ হোসনি মোবারক ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ৯১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া
মাওলানা ওয়াসেক বিল্লাহ নোমানী এর জীবনী-Biography of Maulana Wasek Billah Nomani
সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী রহঃ এর জীবনী
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম
মুনতাসীর মামুন
সাদাত হোসাইন এর জীবনী-Biography Of Sadat Hossain
আরিফ আজাদ এর জীবনী-Biography Of Arif Azad
সালমান এফ রহমান-Biography Of Salman F Rahman
সোলায়মান সুখন-Biography Of Solaiman Shukhon
আন্দালিব রহমান পার্থ এর জীবনী-Biography of Andalib Rahman Perth
আনোয়ার পারভেজ এর জীবনী- Biography of Anwar Parvez